নতুন বাজেট দেশীয় শিল্প সহায়ক : চট্টগ্রাম চেম্বার

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২ জুন, ২০২৩ at ৫:৩২ পূর্বাহ্ণ

২০২৩২০২৪ অর্থবছরের উত্থাপিত বাজেট দেশীয় শিল্প সহায়ক। দেশীয় শিল্প সহায়ক হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে আমদানি নিরুৎসাহিত হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম। গতকাল বৃহস্পতিবার আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

চেম্বার সভাপতি বলেন, এই বাজেট স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়ক হবে। পাশাপাশি আমদানিকে নিরুৎসাহিত করে দেশি শিল্প সমৃদ্ধ করতে সহায়ক হবে। সর্বজনীন পেনশন চালু ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর উপকারভোগীদের ভাতা বাড়ানো, চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ২ হাজার ২০০ শয্যায় উন্নীতকরণ ও চট্টগ্রামে চামড়া শিল্পনগরী স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে চট্টগ্রামের সর্বস্তরের ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান তিনি। তবে বাজেট ঘাটতি মোকাবেলায় ক্রমবর্ধমান ঋণের ক্ষেত্রে সরকারের সচেতন হওয়া উচিত বলে মনে করেন চেম্বার সভাপতি।

তিনি বলেন, ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা, যা ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করছি। এছাড়া নারী ও ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের ক্ষেত্রে ৪ লাখ টাকা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে ৫ লাখ টাকা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি করদাতাদের ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং তৃতীয় লিঙ্গ করদাতাদের ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত করহার নির্ধারণ করা হয়েছে, যা চলমান মূল্যস্ফীতি মোকাবেলায় অর্থনীতিকে সচল রাখতে সহায়ক হবে।

মাহাবুবুল আলম বলেন, নিট পরিসম্পদের মূল্যের ভিত্তিতে করদাতার সারচার্জ আরোপের ক্ষেত্রে ন্যূনতম সীমা ৪ কোটি টাকা নির্ধারণ, ব্যাংক, তামাকজাত পণ্য ও মোবাইল ফোন কোম্পানি ব্যতীত অন্য সব ধরনের প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ নগদ ব্যয় সীমা ৩৬ লাখ টাকার শর্তসাপেক্ষে করপোরেট করহার ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমানো হয়েছে যা ১ কোটি টাকা পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত বলে আমরা মনে করি। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে অ্যাসেট প্রজেক্টের আওতায় ৬ লাখের বেশি মানুষকে কারিগরি শিক্ষা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা খুবই প্রশংসনীয়। এই প্রজেক্টের আওতায় চট্টগ্রামে ভারী শিল্প কারখানাসহ ভবিষ্যৎ শিল্পায়নের কথা বিবেচনা করে চট্টগ্রামে ন্যূনতম ১ লাখ প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার দাবি করছি। রাজউক এবং সিডিএর আওতাধীন ও বহির্ভূত এলাকায় জমি রেজিস্ট্রেশনকালে যৌক্তিকভাবে উৎসে করহার বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। যার ফলে অবস্থানভেদে ভিন্ন ভিন্ন উৎস কর নির্ধারণের ফলে এ বিষয়ে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, যা পরিহারে সুষম উৎস কর নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি।

চেম্বার সভাপতি আরো বলেন, ব্যবসাবাণিজ্য সহজীকরণের লক্ষ্যে জের টানা ব্যতিরেকে সম্পূরক শুল্ক ফেরত প্রদানের বিধান সংযোজনসহ প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা ও সম্পূরক শুল্ক ফেরত গ্রহণের আবেদন দাখিলের সময় পিআরসি দাখিলের বাধ্যবাধকতা রহিত করার সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই। ডলার সংকটের কারণে অনেক অবকাঠামোগত নির্মাণকাজ স্থগিত হয়ে আসছে। এর মধ্যে সিমেন্ট উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানিতে সুনির্দিষ্ট শুল্ক বৃদ্ধি করায় ক্রমবর্ধমান অবকাঠামোগত উন্নয়নের খরচ আরো বাড়িয়ে দেবে। তাই অবকাঠামোগত উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে এই শুল্ক আগের মতো করার সুপারিশ করছি। ট্যারিফ যৌক্তিকীকরণ করতে গিয়ে ১৯১টি পোশাক শিল্পের পণ্যের নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করায় এই খাতের স্থানীয় উদ্যোক্তারা অসম প্রতিযোগিতা সম্মুখীন হতে পারে এবং অন্যদিকে ২৩৪টি প্যাকেটজাত মৎস্য পণ্যে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করায় দেশি মাছ প্যাকেটজাত করার উদ্যোগ নিরুৎসাহিত হতে পারে বলে মাহবুবুল আলম মন্তব্য করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমীরসরাইয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাক চালকসহ ২ জন নিহত
পরবর্তী নিবন্ধসরকার অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মাধ্যমে ৪০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় বাড়াতে চায়