নতুন ট্রেন চালুর দাবি জোরালো হচ্ছে

দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আসছে ১৫০ কোচ

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৪ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ

গত সপ্তাহে প্রথম চালান দেশে এসেছে। দ্বিতীয় চালান আসছে আগামী সপ্তাহে। পূর্বাঞ্চলের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া থেকে এভাবে ধাপে ধাপে আসবে ১৫০টি মিটারগেজ কোচ। দুই বছর আগেও ১৫০টি মিটারগেজ কোচ এসেছিল দক্ষিণ কোরিয়া থেকে। কিন্তু ওই সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে কোনো ট্রেন বাড়েনি।

প্রায় বগি অন্যান্য অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এবার নতুন যে ১৫০টি মিটারগেজ ট্রেনের বগি আসছে সেখান থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে নতুন ট্রেন চালুর দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামবাসী। চট্টগ্রামের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের বক্তব্য, বাংলাদেশ রেলওয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় রুট হলো চট্টগ্রাম-ঢাকা রুট। যাত্রী সংখ্যা দেশের অন্যান্য রুটের চেয়ে অনেক বেশি। অথচ যাত্রীদের চাহিদা মতো ট্রেন নেই। টিকিটের জন্য যাত্রীদের মাঝে সারা বছর হাহাকার লেগে থাকে। এবার নতুন বগি থেকে নতুন ট্রেন চালুর পাশাপাশি পুরনো বগি নিয়ে চলাচল করা ট্রেনের বগিগুলো পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন তারা।

পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি ডা. একিউ এম সিরজুল ইসলাম বলেন, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটটি সবচেয়ে বেশি লাভজনক। এই রুটে যাত্রীও বেশি। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও রেল কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে এই রুটে কোনো ট্রেন বাড়ায়নি। অথচ চালু ট্রেন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এক সময় সকাল ৭টায় সুবর্ণ এক্সপ্রেসের পর সকাল সাড়ে ৭টায় চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে মহানগর প্রভাতী ট্রেনটি চালু ছিল। দীর্ঘদিন ধরে এই ট্রেনটি বন্ধ। এখন নতুন বগি আসছে। এই ট্রেনটি চালু করার জন্য দাবি জানাচ্ছি। রেলমন্ত্রী চট্টগ্রামবাসীর এই দাবিটি বিবেচনা করবেন বলে আশা করছি। কারণ চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এবং ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী যাত্রীদের ট্রেনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদেরও দাবি, ঢাকা-চট্টগ্রাম নতুন ট্রেন চালু করা হোক। প্রতিদিন চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ঢাকামুখী এবং ঢাকা কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে চট্টগ্রামমুখী যাত্রীদের টিকিটের চাহিদার অর্ধেকও পূরণ করা সম্ভব হয় না রেলওয়ের।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ পরিষদের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী আজাদীকে বলেন, রেলওয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং যাত্রীবান্ধব রুট হলো ঢাকা-চট্টগ্রাম। এই রুটে যাত্রীদের তুলনায় ট্রেনের সংখ্যা অনেক কম। সকাল ৭টায় সুবর্ণ এঙপ্রেসের পর ১২টা পর্যন্ত কোনো ট্রেন নেই। সাড়ে ৭টা বা ৮টায় একটি ট্রেন চালু করা হলে প্রচুর যাত্রী হতো। সকালে ঢাকামুখী ট্রেনের যাত্রীদের ব্যাপক চাহিদা থাকে। এছাড়া পুরনো রেক নিয়ে ঢাকাগামী চট্টলা ট্রেনটি দীর্ঘদিন ধরে চলাচল করছে। নতুন বগি যেগুলো আসছে সেখান থেকে চট্টলা এঙপ্রেসে নতুন বগি লাগানোর দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, ৩ বছর আগে ১৫০টি নতুন মিটারগেজ বগি এসেছিল। কিন্তু চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে নতুন ট্রেন নামানো হয়নি। এসব বগি দিয়ে অন্যান্য জেলায় নতুন ট্রেন চালু করা হয়েছে। ওইসব ট্রেনে কোনো যাত্রী নেই। অথচ চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে ট্রেনের তুলনায় দ্বিগুণ যাত্রী। তারপরও ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে না। এখন নতুন যে ১৫০টি নতুন বগি আসছে সেখান থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে নতুন ট্রেন চালুর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং রেলমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি।

জানা গেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার বন্দর থেকে আরো ১৫টি বগি নিয়ে জাহাজে করে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে দ্বিতীয় চালান। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জন্য ১৫০টি মিটারগেজ কোচ সরবরাহ করছে দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ কোম্পানি সুংশিন আরএসটি-পসকো ইন্টারন্যাশনাল। নতুন এই কোচগুলো ক্রয়ে ব্যয় হচ্ছে ৬৫৮ কোটি ৮১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করছে দক্ষিণ কোরিয়ার এঙ্মি ব্যাংক। যান্ত্রিক বিভাগের প্রকৌশলীরা জানান, আমদানি করা কোচগুলো স্টেইনলেস স্টিল বডি, বায়ো-টয়লেট সংযুক্ত, স্বয়ংক্রিয় এয়ার ব্রেক, স্বয়ংক্রিয় স্লাইডিং ডোরসহ অনেক আধুনিক সুবিধা আছে যাত্রীবাহী এসব ক্যারেজে।

১৫০টি কোচের মধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্লিপিং বার্থ ৩০টি, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার কোচ ৩৮টি, শোভন চেয়ার ৪৪টি, খাবার গাড়িসহ শোভন চেয়ার কোচ ১৬টি, পাওয়ার গাড়িসহ শোভন চেয়ার কোচ ১২টি, খাবার গাড়ি একটি এবং পরিদর্শন গাড়ি একটি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহ্যাঁ, প্লেবয় ছিলাম
পরবর্তী নিবন্ধআল হেরা আদর্শ মাদরাসার বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ