নগর বিএনপির মানববন্ধনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, আটক ৪৯

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৬ জানুয়ারি, ২০২২ at ৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ

নগর বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নেয়া নেতাকর্মীদের সঙ্গে গতকাল পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) আমিনুল ইসলামসহ পুলিশের তিন সদস্য আহত হন। এছাড়া বিএনপির ৭/৮ জন নেতকর্মীও আহত হন। এর মধ্যে মিজানুর রহমান নামে এক যুবদল কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গতকাল বিকেলে জামালখানস্থ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। কয়েক মিনিট স্থায়ী সংঘর্ষের পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মানববন্ধন শেষ করে বিএনপি। পরে পুলিশ একটি বাসসহ ৪৯ জন নেতাকর্মীকে আটক করে। এ ঘটনায় গত রাত ১১ টায় এ রিপোর্ট লেখাকালীন সময়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, বিকেল ৩টায় মানববন্ধন শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে তার আগে থেকে নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে মিছিল নিয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকে বিএনপি নেতাকর্মীরা। ৩টা ২০ মিনিটের দিকে সমাবেশস্থলে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এসময় মানববন্ধন রূপ নেয় সমাবেশে। বিএনপি নেতাকর্মীরা রাস্তায় জড়ো হওয়ায় বিঘ্ন ঘটে যান চলাচলে। তখন পুলিশ নেতাকর্মীদের রাস্তা থেকে ফুটপাতে সরিয়ে দিতে চাইলে উভয় পক্ষে ধাক্কাধাক্কি হয়। এতে উত্তেজনা দেখা দেয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে। এসময় পুলিশের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে তারা। পুলিশ লাঠিচার্জ করলে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে বিএনপি নেতারা। পরে পুলিশ প্রেস ক্লাবের বিপরীত সড়ক অবস্থান নেয়। এরপর আমীর খসরু সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়ে মানববন্ধন শেষ করে।
এর কিছুক্ষণ পর জামাল খানস্থ রীমা কমিউনিট সেন্টারের সামনে থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের বহন করা একটি বাস ব্যারিকেড দিয়ে থামায়। বাসটিতে পতেঙ্গা থেকে আসা বিএনপির ২৭ নেতাকর্মী ছিল। তাদের আটক করে বাসটিসহ কোতোয়ালী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর জামালখান, আসকার দীঘির পাড় , কাজীর দেউড়ি এবং নাসিমন ভবন এলাকা থেকে আরো ২২ নেতাকর্মী আটক করা হয়।
এ বিষয়ে কোতায়োলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ৪০-৫০ জন লোক নিয়ে মানববন্ধন করার অনুমতি নিয়েছিল বিএনপি। তারা ফুটপাতে মানববন্ধন করবে বলেছিল। কিন্তু তারা রাস্তায় জড়ো হওয়ায় যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। তাই ফুটপাতে সরে যেতে অনুরোধ করি। কিন্তু তারা উল্টো তর্কাতর্কি করে। এক পর্যায়ে আমাদের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের এডিসি দক্ষিণ স্যারসহ তিনজন আহত হন। পরে আমরা ৪৯ জনকে আটক করি।
গত রাত ১১ টার দিকে তিনি বলেন, মামলার প্রস্তুতি চলছে। এখন আমরা ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করছি। পরিকল্পিতভাবে পুলিশের উপর হামলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি নগর বিএনপির র্শীষ নেতারা এ পরিকল্পনায় জড়িত ছিল। তিনি বলেন, যে ৪৯ জনকে আটক করা হয়েছে তারাসহ আরো যারা জড়িত ছিল তাদের আসামি করা হবে ।
জানতে চাইলে নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ শুরু করেছিলাম। কিন্তু প্রথম থেকেই লক্ষ্য করছিলাম, কয়েকজন সাব ইন্সপেক্টর ধাক্কাধাক্কি করছিল। পরে মিছিল নিয়ে নেতকর্মীরা আসার সময় লাঠিচার্জ করে। এতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, পুলিশকে আমরা অনুরোধ করেছিলাম, ৩০ মিনিটের সমাবেশর হবে, অল্প সময় যেন যান চলাচল সড়কটি দিয়ে বন্ধ রাখে। কিন্তু তারা ইচ্ছে করে গাড়ি ঢুকিয়ে দেয়। অথচ আওয়ামী লীগ বা অন্য ছোটখাট সংগঠনের কর্মসূচি হলেও বন্ধ করে দেয়। এখান থেকেই বুঝা যাচ্ছে, উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে তা করেছে। শাহাদাত বলেন, শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ হয়। আমরা চলে আসার পর ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করে। অথচ এত নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের মত ঘটনা ঘটেনি। পুলিশের লাঠিচার্জে আমাদের ৭/৮ জন আহত হন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআনোয়ারায় নিহত ১
পরবর্তী নিবন্ধনির্বাচনের আগের রাতে মারা গেলেন মেম্বার প্রার্থী