চট্টগ্রাম নগরীতে শিক্ষার্থীদের জন্য গণপরিবহনে হাফ ভাড়া কার্যক্রম গতকাল শনিবার থেকে চালু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিবহন নেতৃবৃন্দ বিষয়টি তদারকি করছেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যাতে কোনো ধরনের বাকবিতণ্ডায় না জড়ায় সেজন্য চালক-হেলপারদের সতর্ক করে দিয়েছেন গণপরিবহন মালিকেরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইউনিফরম এবং পরিচয়পত্র দেখালেই মিলছে এ সুবিধা।
৫ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নগরীতে গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। গতকাল দুপুরে নগরীর হামজারবাগ রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩ নম্বর বাসে করে অক্সিজেন যাচ্ছিলেন রাকিব উদ্দিন। তার বাড়ি নয়াহাট এলাকায়। তিনি হাফ ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছেন।
চট্টগ্রাম কলেজের বাংলা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়দ মোস্তফা সাদিক রিজভী কলেজের আইডি দেখিয়ে চকবাজার থেকে হাফ ভাড়া দিয়ে কালামিয়া বাজারে এসেছেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া চালু করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। সেই সঙ্গে পরিবহন নেতাদেরকেও। আমি টিউশন করে চলি। ভাড়া বৃদ্ধির ফলে কালামিয়া বাজার থেকে কলেজে যেতে আমার প্রতিদিন ৪০ টাকা খরচ হতো। হাফ ভাড়ায় এখন ২০ টাকা দিয়ে বাড়ি ফিরতে পারছি। বাস চালক আর হেলপাররা বাগবিতণ্ডা করলেও আইডি কার্ড দেখাতে আর কিছু বলেনি, হাফ ভাড়া-ই নিয়েছে।
সিটি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র আরিফুল ইসলাম সকাল ১১টায় দেওয়ানহাট থেকে ৭ নম্বর বাসে করে নিউ মার্কেট যান। কলেজের পোশাক গায়ে ছিল। শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে হাফ ভাড়া দিতে চাইলে হেলপার তার পরিচয়পত্র দেখতে চান। কলেজের আইডি কার্ড দেখালে তার কাছ থেকে হাফ ভাড়া নেওয়া হয়। আরিফুলের সহপাঠী সিকান্দার হোসাইন বলেন, আজ (গতকাল) থেকে হাফ ভাড়া চালু হয়েছে। আমাদের দাবি, দেশের সব শিক্ষার্থী যেন এ সুবিধার আওতায় আসে। কোনো ধরনের বৈষম্য ছাড়া চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় হাফ পাস বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন বাস মালিক সমিতির সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, আজ (গতকাল) থেকে আমাদের শিক্ষার্থীরা হাফ ভাড়া দিয়ে গণপরিবহনে যাতায়াত করছে। গণপরিবহনে ওঠার সময় শিক্ষার্থীদের অবশ্যই ছবিযুক্ত আইডি কার্ড সাথে রাখতে হবে। সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত হাফ ভাড়া কার্যকর হবে। সরকারি, সাপ্তাহিক ছুটি ও শিক্ষার্থীদের মৌসুমি ছুটির সময় হাফ ভাড়া কার্যকর হবে না। হাফ ভাড়া শুধুমাত্র চট্টগ্রাম নগরীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে হাফ ভাড়া চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি শিক্ষার্থীরা হাফ ভাড়া দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাবেন। সেখানে কোনো সমস্যা হলে পরিবহন নেতাদের জানাবেন। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব।