নগরীর প্রথম স্যুয়ারেজ প্রকল্পের বিদেশি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা করোনা পরবর্তী দেশে ফিরেছেন। করোনা পরিস্থিতিতে নিজ দেশে ফিরে গেলে প্রায় সাড়ে ৫ মাস পর দেশে এসে কাজে যোগ দিয়েছেন। আগামী মাসে প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগের টেন্ডার আহ্বানের যাবতীয় কাগজ পত্র তৈরি করছেন বলে জানান প্রকল্প পরিচালক। চট্টগ্রাম মহানগরীকে ৬টি জোনে ভাগ করে স্যুয়ারেজ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য তৈরিকৃত মাস্টার প্ল্যানের আলোকে প্রথমে একটি জোনে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। প্রথমে হালিশহর জোনের কাজ শুরু হচ্ছে। অপর ৫টি জোন হলো-কর্ণফুলী নদীর তীরে ৩টি, আরেফিন নগরীতে ১টি এবং ফতেয়াবাদে ১টি। প্রথম ধাপে এই প্রকল্পে একটি পয়ঃশোধরাগার স্থাপনের মধ্য দিয়ে ২০লাখ নগরবাসীর পয়ঃবর্জ্য স্যুয়ারেজ ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার হাজার কোটি (৩৮০৮ কোটি) টাকা। আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে শুরুতে প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ের কাজ শুরু করা হবে। স্যুয়ারেজ প্রকল্পের পরিচালক ও চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম জানান, দেশে করোনা শুরুর সাথে সাথে প্রকল্পের বিদেশি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা নিজ দেশে চলে যান। গত ১৪ সেপ্টেম্বর তারা ফিরে এসেছেন। এখন তারা প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগের টেন্ডারের কাগজপত্র তৈরি করছেন। এই প্রকল্পের আগামী মাসে ঠিকাদার নিয়োগের টেন্ডার আহ্বান করা হবে।
নগরীর হালিশহরে ওয়াসার ১৬৩ একর জায়গা রয়েছে। ওই জায়গাতে পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প স্থাপন করা হচ্ছে। প্রকল্পের অধীনে মোট ২০০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন, ১৫টি পাম্প স্টেশন, ১৪৪ কিলোমিটার সার্ভিসলাইন করা হবে। যার মাধ্যমে বাসাবাড়ির পয়ঃবর্জ্য সংগ্রহ করে পরিশোধন করা হবে। অবশিষ্ট কঠিন বর্জ্য দিয়ে কম্পোস্ট সার তৈরি হবে। এর জন্য তৈরি হবে দিনে ৮০ হাজার ঘনমিটার ধারণক্ষমতার একটি পয়ঃশোধনাগার এবং দিনে ৪৫০ ঘনমিটার ধারণক্ষমতার একটি ফিকেল স্ল্যাজ শোধনাগার।
শুরুতে আমরা একটি জোনে এই কার্যক্রম চালু করতে যাচ্ছি। অবশিষ্ট পাঁচটি জোনে ধাপে ধাপে বাস্তবায়িত হবে। স্ল্যাজ সংগ্রহে যেখানে পাইপ লাইন স্থাপন করা যাবে না, সেখানের জন্য গাড়ি সংগ্রহ করা হবে। গাড়িতে করে বর্জ্য হালিশহরের ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে নিয়ে যাওয়া হবে। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্প শেষ হবে ২০২৩ সালে। এ প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হলো স্যানিটেশন ফ্যাসিলিটিস নির্মাণের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নগরবাসীর জন্য পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। অবশিষ্ট ৫টি পয়ঃশোধনাগার বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এই বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে আলোচনা চলছে।