ধর্ষণে জন্ম নেয়া শিশু ও ধর্ষণকারী পিতা-পুত্র হিসেবে পরিচিত হবেন

কিশোরী ধর্ষণ মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৯ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৪:১০ পূর্বাহ্ণ

জোরারগঞ্জের মুরাদপুর এলাকায় কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে মো. শাহজাহান নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, তিন লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মো. শাহজাহান জোরারগঞ্জের কাটাছড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মুরাদপুর এলাকার মৃত শাহ আলমের ছেলে। গতকাল চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় ঘোষণা

করেন। এ সময় আসামি কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

ট্রাইব্যুনালের পিপি খন্দকার আরিফুল আলম আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, পুরো বিচার প্রক্রিয়ায় বিচারক ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেন। ধর্ষণের ফলে কিশোরীর একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রায়ে আদালত বলেছেন, উক্ত শিশুর সকল ব্যয়ভার রাষ্ট্র বহন করবে। আসামির সম্পত্তি থেকে উক্ত ব্যয়ভার বহন করা হবে। সরকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আসামি শাহজাহান ও জন্মগ্রহণ করা শিশু একে অপরের পিতাপুত্র হিসেবে হিসেবে সমাজে পরিচিত হবেন।

তিনি আরো বলেন, প্রথম ঘটনার সময় ভিকটিম কিশোরীর বয়স হয়েছিল মাত্র ১২ বছর ৯ মাস ২০ দিন। আইন অনুযায়ী ১৬ বছরের নিচের কোনো কিশোরী আহ্বান করলেও শারীরিক সম্পর্কে যাওয়া যায় না। কিন্তু আসামি কিশোরীর সাথে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হন। ২০১৫ সালের ৯ অক্টোবর থেকে ২০১৬ সালের ২০ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে কিশোরী ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় প্রথমে থানায় মামলা দায়েরের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু থানা পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে ২০১৬ সালের ১৫ মে চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করেন কিশোরীর মা। একপর্যায়ে বিচারক মামলার আবেদন গ্রহণ করে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

আদালত সূত্র জানায়, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী থানা পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে এবং ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি মর্মে ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করে। উক্ত ফাইনাল রিপোর্টের বিরুদ্ধে কিশোরীর মা নারাজি পিটিশন দিলে আদালত তা গ্রহণ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯() ধারায় সরাসরি অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। একপর্যায়ে আসামি গ্রেপ্তার করা হয় এবং কিশোরীর মায়ের আবেদন অনুযায়ী তার ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়, ধর্ষণের ফলে জন্মগ্রহণকারী শিশু আসামিরই সন্তান। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু করেন বিচারক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমেরিকান হাসপাতালকে স্পেশালাইজড হাসপাতালে রূপান্তরে বরাদ্দ দাবি
পরবর্তী নিবন্ধবস্টনে শিক্ষার্থী হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি