বাংলাদেশে বেশ কিছু সময় ধরে মানুষের মুখে মুখে, আলোচনার টেবিলে টেবিলে কিংবা পথে ঘাটে যে শব্দটি স্থান করে নিয়েছে সেটি হচ্ছে ‘ধর্ষণ’। সভ্য এই দেশে ধর্ষণ শব্দটি তার ব্যবহারযোগ্যতা হারিয়ে অভিধানের পাতা থেকে মুছে যাওয়ার কথা থাকলেও ঘটেছে তার উল্টো। প্রতিদিন ধর্ষণ নামক যৌন আক্রমণের শিকার হচ্ছে শিশু থেকে পঞ্চাশোর্ধ্ব নারীরাও। ঘরে বাইরে, স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা, কর্মক্ষেত্র কিংবা গণ-পরিবহন কোথাও যেন বাঙালি নারী-শিশুরা নিরাপদ নয়। সর্বোপরি বাংলাদেশ যেন ধর্ষণের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। বাংলা ভাষার কয়েকটি অক্ষর মিলে ‘ধর্ষণ’ নামক একটি শব্দ গঠিত। যে শব্দের অর্থ একটি সভ্য সমাজের কাছে নিকৃষ্ট হিসাবে ব্যবহৃত হয়। যা বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন কিংবা বন্ধু-বান্ধব মহলে উচ্চারণ করাও লজ্জাকর। অথচ এই শব্দটি এখন গণমাধ্যমের মূল সংবাদ। পত্রিকার প্রধান শিরোনাম হয় ‘ধর্ষণ’, যা পাঠকরা স্বচোখে অবলোকন করে। টিভি গণমাধ্যমগুলোর মূল শিরোনাম হয় ‘ধর্ষণ’। যা দর্শকরা সরাসরি কর্ণপাত করে। দেখা ও শোনা থেকে বাদ যায় না কেউই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বাক্ষরহীন ব্যক্তির কানেও এখন ধর্ষণের সংবাদ। ধর্ষণের সংবাদ শুনতে শুনতে মানবজাতির মহামূল্যবান ভূষণ লজ্জাও এখন বিলুপ্তির পথে। লজ্জা মানবজাতির ভূষণ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত থাকলে ধর্ষণের মত ঘটনা ঘটত না। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, স্পীকার নারী, মন্ত্রী পরিষদের অনেক সদস্য নারী সে দেশে কিভাবে এত ধর্ষণের ঘটনা ঘটে? ধর্ষণের এত ঘটনাও যদি নারী শাসিত দেশে শাসকদের বিবেককে নাড়া না দেয় তাহলে দিন দিন ধর্ষণের ঘটনা বাড়তেই থাকবে। ধর্ষণের শাস্তি দ্রুত বিচারের আওতায় এনে বিচারকাজ সম্পন্ন করতে হবে। রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিল করতে হবে। সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। ধর্ষণের শাস্তি সম্পর্কে জনবহুল আলোচনাগুলোতে স্থান দিতে হবে। তাহলেই দেশ থেকে ধর্ষণ নামক নিকৃষ্ট শব্দটির বিলুপ্তি ঘটবে। আমরা আর একটিও ধর্ষণের সংবাদ শুনতে চাই না।
– মো. আজিনুর রহমান লিমন, মিয়া পাড়া, উপ.- ডিমলা, জেলা- নীলফামারী