ধর্ষণের কথা বলে দিতে চাওয়ায় হত্যা প্রতিবেশী আলমগীর মানিকগঞ্জে গ্রেপ্তার

হালিশহরের ঘটনা

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৭ মার্চ, ২০২২ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

নগরীর হালিশহরে এক শিশুকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে তার প্রতিবেশী আলমগীর মিয়াকে (৪৯) মানিকগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। ধর্ষণের ঘটনা বাবাকে বলে দিতে চেয়েছিল বলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশুটিকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে আলমগীর। এরপর চট্টগ্রাম থেকে সে পালিয়ে গিয়েছিল। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
কমান্ডার আল মঈন বলেন, মেয়েটির বাবা পেশায় একজন রিকশাচালক, মা পোশাক কারখানার কর্মী। সকালে তার মা কারখানায় চলে যান, বাবাও রিকশা নিয়ে বেরিয়ে যান। গত ১৩ মার্চ রোববার ওই হত্যাকাণ্ডের পর মেয়েটির বাবা হালিশহর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। তদন্তে নেমে র‌্যাব মঙ্গলবার রাতে মানিকগঞ্জ থেকে আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে আলমগীর জানায়, সে আগে সাভারের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতো। দুটি বিয়ে করেছে। সাভার থেকে ৩ মাস আগে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে হালিশহরে বসবাস শুরু করে। আলমগীরের পরিবার ও মেয়েটির পরিবার হালিশহরে পাশাপাশি বাসায় থাকে। ঘটনার দিন সকালে প্রতিদিনের মতো মেয়েটি প্রাইভেট পড়ে বাসায় ফিরছিল। এরপর তার স্কুলে যাওয়ার কথা ছিল। আলমগীর কৌশলে তাকে নিজের বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ থেকে বাঁচতে আলমগীরের হাতের আঙ্গুল কামড়ে দিয়েছিল মেয়েটি। ওই ঘটনা সে তার বাবাকে জানিয়ে দেবে বলেছিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আলমগীর শিশুটিকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। দুপুরে মেয়েটির মা বাসায় খাবার খেতে এলে স্কুলের দুই সহপাঠী জানায়, মেয়েটি প্রাইভেট পড়ার পর স্কুলে যায়নি। বিষয়টি জানার পর তারা তাকে খোঁজাখুজি শুরু করেন। কিন্তু কোথাও সন্ধান পাওয়া যায়নি। এদিকে প্রতিবেশী আলমগীরের বাসা তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। আলমগীরকে ফোন করলে তার মোবাইলটিও বন্ধ পাওয়া যায়। এতে সন্দেহ বেড়ে যায়। পরে ওই শিশুটির বড় ভাই আলমগীরের বাসার ভেতরে লাইট জ্বলতে দেখে বিষয়টি বাড়ির মালিককে জানান। বাড়ির মালিক রাত সাড়ে নয়টার দিকে দরজার তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে খাটের নিচে হাত পা বাঁধা অবস্থায় শিশুটির মরদেহ দেখতে পান।
জিজ্ঞাসাবাদে আলমগীরের স্ত্রী জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর আলমগীর তার স্ত্রীকে জানিয়েছিল, তার সঙ্গে এলাকার একজনের মারামারি হয়েছে। তার স্ত্রী সেদিন দুপুরে পোশাক কারখানা থেকে খাবার খেতে আর বাসায় যায়নি। স্ত্রীসহ দুপুরে চট্টগ্রাম ছাড়ে। স্ত্রীসহ পালিয়ে প্রথমে ধামরাই এবং পরে সাভার, মানিকগঞ্জ ও রাজবাড়ী এলাকায় আত্মগোপন করে। তার স্বামী একজনকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে, তা সে গ্রেপ্তারের পর জানতে পেরেছে বলে র‌্যাবের কাছে দাবি করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধনতুন ১২ জনসহ ৩১ নেতাকে কেন্দ্রে তলব