শুনতে খারাপ লাগলেও সত্য যে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও অতিরিক্ত চাহিদা পূরণের জন্যই মানুষ আজ করোনা মহামারীকে বিরাট আকার ধারণের সুযোগ করে দিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধির সকল নিয়ম মেনেও সচেতন নাগরিক আজ অনিরাপত্তায় ভুগছে।
দেশের উন্নয়নের সাথে সাথে মানুষের চাহিদাও সত্যি বেড়ে গেছে। এই করোনাকালে জীবনের প্রয়োজনে জীবিকার তাগিদে মানুষ উপার্জন ও ভরনপোষণ চালিয়ে যেতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে! দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতি ও চাহিদা পূরণ যেন প্রতিনিয়ত মানুষের সততার পথ আগলে দিচ্ছে। মানুষ দিনদিন হীনম্মন্যতা, সংকীর্ণতা ও দুর্নীতিকে আঁকড়ে ধরছে। কেমন হবে ভবিষ্যৎ! যদি কেউ সত্যি জানতো! জীবন ও জীবিকার তাগিদে মানুষ ছুটছে তো ছুটছে বিরামহীনভাবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে এত উদাসীন কেন মানুষ! জীবনই যদি না থাকে তবে কি হবে এত ছুটে! তবুও যে ছুটতেই হয় পেটের তাগিদে! ২০২০ সালের করোনা মহামারী আমাদের আসলে কিছুই শেখাতে পারেনি। করোনা ভাইরাস দেখলো -মানুষের মধ্যে লোভ, দুর্নীতি, চুরি, ডাকাতি, অহংকার, হিংসা কিছুই ২০২১ সালেও এতটুকু কমলোনা বরং আরো বেড়ে গেলো। মানুষ প্রতিনিয়ত কাজেকর্মে ও মানসিকতায় পশুকে হার মানাচ্ছে। সৎ মানুষ ও দুর্বলকে ঠকানো, অবহেলা-অবজ্ঞা করা, করোনা ভাইরাসকে হারিয়ে দিয়েছি মানসিকতা পোষণ করা। তাইতো সে চরম রূপ ধারণ করার সুযোগ পেয়ে গেলো! সামনে আসছে ‘কঠোর’ লকডাউন। সাধারণ মানুষ এখন থেকেই মাসের শেষে বেতন পাবে কিনা চিন্তায় কাতর! তখন অনেকের কাছে পরিবারের মানুষের পেটের ক্ষুধা মিটানোটাই বড় দায় হয়ে পড়বে! বাইরের দেশে বিভিন্ন উৎসবে ও বিপদের সময় দ্রব্য ও পণ্যের দাম কমিয়ে দিতে শুনেছি ও দেখেছি। আমাদের দেশ যেন সবসময় উল্টো পথে হাঁটে এই বিষয়ে! উৎসবকে সামনে রেখে তিন-চার মাস আগে থেকেই দাম বাড়িয়ে চলে বাজার। আর বিপদের কথা নাই-বা বললাম! তদারকির কোন বালাই নেই! সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধি করা হলেও দ্রব্যমূল্য বেড়ে যায়। যার ফল ভোগ করতে হয় সবসময় সাধারণ নাগরিকদের। দেশে ফসলের বাম্পার ফলন হলেও মূল্যের কমতি নজরে আসেনা। এই করোনা মহামারীতেও দেখলাম আমনের চাউল বাজারে আসার পরও চাউলের দাম বেড়ে যেতে! যেন দেখার কেউ নেই! বাজার তদারকির দায়িত্ব কাদের? নিজ দায়িত্ব পালনে কেন এত ফাঁকিবাজি? সরকারের কাছে অনুরোধ এখনই সময় বাজার দর শক্তভাবে মনিটরিং করার মাধ্যমে সহসা দ্রব্যমূল্যের দাম সাধারণ মানুষের ধারণ ক্ষমতার মধ্যে আনার ব্যবস্থা করুন। যেন সকল শ্রেণির মানুষ সুন্দরভাবে অন্তত খেয়ে পরে বাঁচতে পারে। ভুলে গেলে চলবে না – দেশের উন্নয়নের গ্রোত প্রতিটি নাগরিক ভোগ করার অধিকার রাখে।