দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপে সাধারণ মানুষ দিশেহারা

প্রদীপ ভট্টাচার্য্য | বৃহস্পতিবার , ১০ মার্চ, ২০২২ at ৮:১২ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উত্তরণ। করোনাকালীন সময়েও বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে সাফল্য, অর্থনৈতিক উন্নতির ধারা অব্যাহত, জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয় ঊর্ধ্বগতি খুবই আশাব্যঞ্জক হলেও সাধারণ অসহায় দরিদ্র ও কম শিক্ষিত মানুষগুলো এসব বুঝতে নারাজ। তারা আন্তর্জাতিক বাজার ও বিভিন্ন দ্রব্যাদির আমদানি-রপ্তানির কথা বুঝতে চাই না। তারা চায় বেঁচে থাকার তাগিদে প্রতিদিন রান্নাঘরের খাদ্য-উপকরণসহ নিত্য ভোজ্যপণ্যের মূল্য যেন ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে। কিন্তু বর্তমান সময়ের দ্রব্যমূল্যের আকাশচুম্বী ঊর্ধ্বগতির চাপে হতদরিদ্র দিনমজুর ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সাধারণ মানুষ আজ দিশেহারা। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের শুরু থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যপণ্যের দাম ক্রমাগত একের পর এক বেড়েই চলেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে সবকিছু অসহনীয় ও নাগালের বাইরে হলে মানুষ স্বাভাবিক জীবন যাপন করবে কিভাবে? এমনিতেই করোনা মহামারীর দুঃসময়ে অনেকেই হয়েছে চাকরিচ্যুত, কাজ হারিয়ে কর্মহীন, সীমিত কাজের কারণে আয় উপার্জন কমেছে অনেকের। অনেক বেসরকারি চাকরিজীবীর বেতন বাড়েনি। অন্যদিকে বাসা, দোকান ভাড়া, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পরিবহন খরচ বেড়েছে। মোট কথা সব মিলিয়ে সীমিত আয় নিয়ে নিষ্পেষিত হচ্ছে হতদরিদ্র, নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ। অর্থনৈতিক অসহনীয় এই অবস্থার কারণে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। যার কারণে নিম্ন আয়ের লোকেরা এমনকি খাদ্য তালিকা হ্রাস করতে বাধ্য হয়েছে ‘মাছে ভাতে বাঙালি’ এখন দুবেলা ডালভাত খেতেও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়া দুঃখের বিষয় সম্প্রতি রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের দামামার প্রভাব পড়েছে দেশের পাইকারি বাজারে। কিছু সংখ্যা কালোবাজারি মুনাফাখোর সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজিতে সাধারণ মানুষের জীবনকে কঠিন সংকটে ফেলেছে। তবে বর্তমান সরকার যে দারিদ্র্য বিমোচনে তৎপর সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই। এছাড়া সরকার এক কোটি দুস্থ পরিবারকে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দেওয়ার উদ্যোগকে স্বাগত জানায়। তবে তা যেন সঠিক ভাবে বণ্টন ও দ্রুত সময়ে কার্যকর হয় তার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে নিত্য ও ভোগ্যপণ্যের স্বাভাবিক সরবরাহ, বন্ধ হওয়া টিসিবির কার্যক্রম দ্রুত শুরু করা, কিছু কিছু ভোগ্যপণ্যের ভর্তুকি দেয়া, নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও অতি মুনাফালোভীর অপচেষ্টা রোধ করা এবং প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বা জরিমানা করাসহ বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর মনোভাব ও যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা না গেলে লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করা সম্ভব নয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
পরবর্তী নিবন্ধসংগ্রামী সৈনিক সেই আমি