সকালে ঘুম থেকে উঠেই যার চেহারা দেখলে ভোরের উজ্জ্বল আলোর মতো সতেজ হয়ে উঠে মন তা হলো চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় পত্রিকা ‘দৈনিক আজাদী’। এবার তার ৬১ বছর পূর্তি হয়েছে। এ উপলক্ষে বেরিয়েছে ‘৬০ বছরের দৈনিক আজাদী’ গ্রন্থটি। যা ইতিহাসের অমূল্য অংশ হয়ে থাকবে। ১৯৬০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর এই পত্রিকাটি প্রকাশ করেছিলেন আলোকিত পুরুষ আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার। এরপর তার উত্তরসূরী প্রফেসর মোহাম্মদ খালেক, জনাব এম এ মালেক এবং জনাব ওয়াহিদ মালেকের হাত ধরেই আজ ৬২ বছরে পদার্পণ। এ এক অপূর্ব আনন্দমিশ্রিত বিস্ময়। এর আরো আগেই আজাদী বিস্মিত করেছে কবি মাহবুবুল আলমের ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’ একুশের এই অমর কবিতাটি যথাসময়ে প্রকাশ করে। এর জন্য তৎকালীন কোহিনূর ইলেকট্রিক প্রেসকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছিল। আর এক বিস্ময় হলো দৈনিক আজাদীই হলো স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রথম পত্রিকা।
১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর এটি প্রকাশিত হয়ে চট্টগ্রামের জন্য এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। দৈনিক আজাদী চট্টগ্রাম তথা সারা বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারকবাহক। আন্তর্জাতিকভাবে ও এর অবস্থান সমুজ্জ্বল। লেখার জগতে স্কুল জীবনেই আমার প্রথম প্রবেশ আজাদীর ‘আগামীদের আসরের’ মাধ্যমে। তখন এ পাতাটি দেখতেন জনাব আবুল কাসেম সন্দ্বীপ। আমার বাবা তখন নিয়মিত দুটো পত্রিকা রাখতেন। একটি ‘দৈনিক আজাদী’ অন্যটি ‘দৈনিক ইত্তেফাক’। তখন থেকেই আমি আজাদীর অনুরক্ত। কাউকে কিছু না বলে চুপচাপ পত্রিকা কেটে সদস্য ফরম পূরণ করে পোস্ট করেছিলাম। পরের সংখ্যায় সদস্য হয়ে গেলাম। সদস্য নম্বর ছিল ২১৩৪। পেয়ে গেলাম ক্ষুদে পাঠক থেকে ক্ষুদে লেখক হওয়ার সুযোগ। সেই থেকে সৃষ্টি হলো আজাদী পত্রিকার সাথে মধুর সম্পর্ক। এখনতো পুরোপুরি আজাদী পত্রিকার একজন। এ বিষয়টি আমাকে খুব আনন্দ দেয়। এমন শুভদিনে দৈনিক আজাদীকে জানাই অফুরন্ত ভালবাসা ও প্রাণের অর্ঘ্য। অসংখ্য লেখক সৃষ্টির অপূর্ব করিগর আজাদী তুমি সৌরভে গৌরবে চির বিকশিত থাকো। যাপিত জীবনের নানাবিধ ঘটনাবলী নিয়ে তোমার প্রকাশনা থাকুক অমলিন। তোমার সুঘ্রাণে মোহিত হোক সারা বিশ্ব।