দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সরকারের সবচেয়ে বড় অর্জন

| সোমবার , ৯ মে, ২০২২ at ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সামপ্রতিক সময়ে সরকারের সবচেয়ে বড় অর্জন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সব ক্ষেত্রেই অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে সরকার। করোনা পরিস্থিতি এবং অর্থনীতিতে এর প্রভাব মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ও প্রণোদনার কথা আজ বিশ্বস্বীকৃত। অর্থনীতি, বাণিজ্য-বিনিয়োগ, খাদ্য-কৃষি, পরিবেশ-জলবায়ু, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ-জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে সরকারের নেওয়া কার্যক্রম ও সাফল্যের বিষয়টি পৃথিবীতে আজ আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাপানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নিকেই এশিয়া প্রকাশিত ‘নিকেই কোভিড-১৯ রিকোভারি সূচক’-এ যে তথ্য উঠে এসেছে, তা আমাদের জন্য আনন্দের। বলা হয়েছে, করোনা মহামারি সামলে ওঠার ক্ষেত্রে বিশ্বের যে দেশগুলো সবচেয়ে ভালো করছে, সেই তালিকায় পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবার উপরে।

সূচকে বিশ্বের ১২১টি দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে কাতার। এরপরে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কম্বোডিয়া ও রুয়ান্ডা। তারপরেই বাংলাদেশের অবস্থান। করোনা বিস্তার ঠেকাতে বিভিন্ন দেশের ব্যবস্থাপনা, টিকাদান ও সামাজিক কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয় এই তালিকা। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের পরেই ষষ্ঠ অবস্থানে নেপাল। ২৩ নম্বর অবস্থানে পাকিস্তান ও ৭০তম ভারত। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, সামপ্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু কমেছে। শুক্রবার পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৯ জনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এ সময় কারও মৃত্যু হয়নি। এ নিয়ে টানা ১৬ দিন দেশে করোনায় কারও মৃত্যু হয়নি।

করোনার আগে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, বাংলাদেশে কোটি কোটি মানুষ মারা যাবে; কিন্তু মহান আল্লাহর কৃপায় ও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এই মহামারিকে মোকাবেলা করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণে সরকার বাংলাদেশের জনগণকে অনেকটা নিরাপদ রাখতে সমর্থ হয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারি থেকে মানুষের জীবন বাঁচাতে, মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শুরু থেকেই গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে দরিদ্র মানুষকে ত্রাণ সহযোগিতার পাশাপাশি জীবিকা ও অর্থনীতি বাঁচাতে তিনি নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। করোনা সংকট মোকাবিলায় দ্রুত বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ায় দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রশংসিত হচ্ছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ফোর্বস ম্যাগাজিনসহ আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করা হয়েছে।

শেখ হাসিনার পরিকল্পিত নেতৃত্ব, পরিকল্পিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং জনগণের মাঝে তা ছড়িয়ে দেওয়ার যে ব্যবস্থাপনা; সেটা সফলতা লাভ করেছে। তাই বাংলাদেশে করোনা মোকাবেলায় যে মডেল তৈরি হয়েছে, সেটা অভূতপূর্ব। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘করোনা মহামারিতে সমগ্র পৃথিবীর অর্থনীতি যখন মুখ থুবড়ে পড়েছে; তখন পৃথিবীর পাঁচটি অগ্রসরমান অর্থনীতির একটি বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন নিজস্ব চাহিদা পূরণ করেও অন্যান্য দরিদ্র দেশগুলোকে আর্থিক ঋণ সহায়তা প্রদান করতে সক্ষম। দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ধারাবাহিকতা এমনভাবে বজায় থাকলে আগামী ২০৩০ সালে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৫তম অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ। এই কোভিড কালেও মেট্রোরেল প্রকল্প, কর্ণফুলী পাতাল টানেল, পদ্মা সেতু, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর এবং ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন কর্মকান্ড চলমান রয়েছে। দ্বিতীয় পদ্মা সেতু, যমুনা রেল সেতু, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, পতেঙ্গা বন্দরের নতুন প্রকল্পের পরিকল্পনা নিয়ে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও আগ্রহ বাড়ছে বাংলাদেশে’।

বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের আগেই বাংলাদেশে কোভিড টিকাদান কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় টিকাদান র‌্যাংকিংয়েও বাংলাদেশ ছিল প্রথম। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও বস্নুমবার্গ কর্তৃক বাংলাদেশের এই উদ্যোগ ও কর্মসূচি প্রশংসিত হয়েছিল। বিশ্ব নেতৃত্বের সামনে শেখ হাসিনার অবস্থান ও কার্যকর পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে ভ্যাকসিন হিরোর দেশে। কোভিড-১৯ মহামারি ছাড়াও সরকারকে কিছু প্রাকৃতিক বিপর্যয়েরও মুখোমুখি হতে হয়েছে। সরকার সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ায় এ সকল চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবিলা করাও সম্ভব হয়েছে। করোনা মোকাবেলা থেকে শুরু করে যাবতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকার জোরালো ভূমিকা পালন করেছে। সরকারের সময়োচিত কিছু পদক্ষেপের কারণেই সমস্ত সঙ্কট দক্ষতার সাথে মোকাবেলা করা হয়েছে। বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রাকে আমাদের অভিনন্দিত করতেই হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৭৮৬
পরবর্তী নিবন্ধএই দিনে