দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন হবে কক্সবাজারে

আসবে ৫ লাখ পর্যটক, বসবে সম্প্রীতির মিলনমেলা

কক্সবাজার প্রতিনিধি | সোমবার , ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ at ১০:১২ অপরাহ্ণ

১৫১টি প্রতিমা ও ১৬৪টি ঘট পূজা মিলিয়ে জেলায় ৩১৫টি মণ্ডপে চলছে দুর্গাপূজা। আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতেছে উৎসব প্রিয় বাঙালি সনাতী সম্প্রদায়ের মানুষ। ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত মণ্ডপগুলোতে পূজারীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিজয়া দশমী। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে হবে দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন। বিসর্জনকে ঘিরে সৈকতের বালিয়াড়িতে সব ধর্মের মানুষের সরব পদচারণায় তৈরি হয় সম্প্রীতির সেতুবন্ধন।

মঙ্গলবার দুপুরে শহরের বার্মিজ মার্কেট থেকে প্রতিমা নিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হবে। শোভাযাত্রাটি সৈকতের লাবণী পয়েন্টে এসে বিজয়া দশমীর অনুষ্ঠানে মিলিত হওয়ার কথা রয়েছে।

গাড়ি থেকে নামানোর পর আরতি ও আরাধনা শেষেই প্রায় ২০০ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে। এসময় শ্রদ্ধা ভালোবাসায় মাতৃবিদায়ের বিষাদপূর্ণ অশ্রু অঞ্জলির মাধ্যমে সাগরের জলে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানাবেন ভক্তরা।

তিনি আরও বলেন, ‘দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি আজ সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। মনে রাখতে হবে অশুভ শক্তির বিনাশ ও সত্যের আরাধনাই দুর্গোৎসবের বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশ শান্তি সম্প্রীতির দেশ। একথা প্রমাণ করে প্রতিমা বিসর্জন উৎসবকে ঘিরে মানুষের সম্প্রীতি আর উচ্ছ্বাসের ঢেউ।’

বিসর্জন অনুষ্ঠান নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. জিললুর রহমান। সোমবার (২৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় সৈকতের লাবণী পয়েন্টে এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান হবে কক্সবাজারে। এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে কক্সবাজারে ৪ থেকে ৫ লাখ পর্যটকের আগমন ঘটবে বলে আশা করছি। আর পূজা বিসর্জন অনুষ্ঠা শান্তিপূর্ণ ও আনন্দ মুখর পরিবেশে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ট্যুরিস্ট পুলিশ সাদা পোশাকে একাধিক গোয়েন্দা দল থাকবে। একই সঙ্গে পুরো অনুষ্ঠান এলাকা সিসি ক্যামেরা এবং ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি ও নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে।’

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উজ্জ্বল কর ও সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশ বলেন, ‘২৪ অক্টোবর সৈকতে বিজয়াদশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে পাঁচদিনের দুর্গাপূজা শেষ হবে। প্রতিমা বিসর্জনের সব প্রস্তুতি শেষ। বিসর্জন অনুষ্ঠান সফল করতে পুলিশের পাশাপাশি থাকবে পূজা কমিটির নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক। এখন পালা মাকে বিদায়ের। বিজয়া দশমীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি বিপ্লব বড়–য়া।’

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘বিসর্জন ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে। সৈকতের পাশাপাশি শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে কাজ করবে পুলিশের একাধিক টিম। এছাড়া সাদা পোশাকে নিয়োজিত থাকবে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। কেউ বিশৃঙ্খলা করা চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে।’

জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহিন ইমরান বলেন, ‘দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি আজ সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। মনে রাখতে হবে অশুভ শক্তির বিনাশ ও সত্যের আরাধনাই দুর্গোৎসবের বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশ শান্তি সম্প্রীতির দেশ। প্রতিমা বিসর্জন উৎসব ঘিরে লাখো মানুষের মিলনমেলা একথা প্রমাণ করে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় ২ তদন্ত কমিটি
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত : লোহাগাড়ায় আমিনুল ইসলাম