বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেছেন, সুদীর্ঘকাল ধরে পরাধীন বাঙালিকে বঙ্গবন্ধু এক করেছেন। ভৌগোলিক স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। কিন্তু অর্থনৈতিক মুক্তিদানের পদক্ষেপ গ্রহণের প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। একটা দেশের সোনালী সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করার জন্য এই হত্যাকান্ডকে জাতি মেনে নিতে পারেনি।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর দেশকে উল্টোপথে নিয়ে যাওয়া হয়। দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন, বিদ্যুৎ ঘাটতি, খাদ্য ঘাটতি, মঙ্গা, সন্ত্রাস, ও জঙ্গীর দেশ হিসেবে পরিচিতি তৈরি করা হয়। কিন্তু এসব বদনাম ঘুচিয়ে শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। আজকের বাংলাদেশকে আরো অগ্রগতির দিকে নিয়ে যেতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। এটাই শোক দিবসের প্রত্যয়।
গতকাল শনিবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শোকের মাস আগস্টের মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসাবে শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি। জাতীয় চার নেতাকে হারিয়েছি। এই নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিশোধ নিতে গিয়ে চট্টলার বীর সন্তান মৌলভী সৈয়দ জীবন দিয়েছে। এসব হত্যাকান্ড ঘটিয়ে শুধু আওয়ামী লীগের নয়, দেশ ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি করেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যেমন যাবে না তেমনি এই কলঙ্ক মুছে ফেলা যাবে না। এই আত্মস্বীকৃত খুনিরা ইতিহাসের কাছে ক্ষমা পায়নি, জাতির কাছেও ধিকৃত হয়ে থাকবে।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম হওয়ায় বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত বর্বর পাকিস্তানিদের মিত্র হিসাবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার যে পথ সৃষ্টি হয়েছিল, সেখান থেকে দেশকে সরিয়ে বিপরীতমুখী করার উদ্দেশ্যে এই বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ করা হয়। তাদের লক্ষ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলিয়ে দেয়া। বঙ্গবন্ধুর অবদানকে খাটো করে দেখা এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশকে নস্যাত করে দেয়া। এই রকম পিছনে ফিরে যাওয়ার নীতি একমাত্র বাংলাদেশেই সম্ভব হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে নিয়ে শুরু হওয়া ষড়যন্ত্রই তার প্রমাণ রাখে। ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে শুধু অস্বীকার করেনি, বঙ্গবন্ধুর নামে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছে। অথচ বঙ্গবন্ধু জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত দেশ ও মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির পিতা, যিঁনি বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার স্বাদ দিয়েছেন। সারা জীবন নিজের কথা, পরিবারের চিন্তা বাদ দিয়ে জনগণের মঙ্গল-কল্যাণে কাজ করেছেন। ত্যাগী জীবনের কারণে দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুকে ভক্তি-শ্রদ্ধা আর ভালবাসার চোখে দেখেন। বঙ্গবন্ধু দেশ ও দেশবাসীর জন্য জীবন দিয়ে গেছেন, আমরা তার গর্বিত অনুসারী।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, একটি ঘুমন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সঠিক পথ নির্দেশ দিয়ে স্বাধীন ভূখন্ড সৃষ্টি করে বিশ্বে আমাদের আত্মপরিচয় দানের সুযোগ দান করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে পারিনি। মানব নামের দানব পরিচয়ে যারা এই অমানবিক, পৈশাচিক নৃশংস হত্যাকান্ডে জড়িত ছিল ইতিহাসের বিচারে তারা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, মোহাম্মদ ইদ্রিস, আবু সাঈদ চৌধুরী, হাবিবুর রহমান, এস এম আবুল কালাম, সাংবাদিক আবু সুফিয়ান, আইন সম্পাদক এড. মির্জা কছির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এড. জহির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোসলেহ উদ্দিন মনসুর, শ্রম সম্পাদক খোরশেদ আলম, শিক্ষা সম্পাদক বোরহান উদ্দিন এমরান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন, দপ্তর সম্পাদক আবু জাফর, স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. তিমির বরণ চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. নাসির, প্রচার সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী, কৃষি সম্পাদক এড. আবদুর রশিদ, ক্রীড়া সম্পাদক গোলাম ফারুক ডলার, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিজয় কুমার বড়ুয়া, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা দেবব্রত দাশ, সৈয়দুল মোস্তফা চৌধুরী রাজু, চেয়ারম্যান নাছির আহমদ, ছিদ্দিক আহমদ বি.কম, মাহবুবুর রহমান সিবলী, এ কে আজাদ, সেলিম নবী প্রমুখ।












