দুর্ঘটনা ঘটলেই কেবল মাতামাতি এরপর খবর থাকে না

মোহাম্মদ ইউসুফ | বৃহস্পতিবার , ১৫ জুলাই, ২০২১ at ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ

অদ্ভুত এক দেশে আমরা বাস করছি। আমরা কেউ কারো দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছি না। শতভাগ নয়, ৫০% দায়িত্ব পালন করলেও কোনো ক্ষেত্রে সমস্যা থাকার কথা নয়। সারা বছর কোনো খবর থাকে না, বড়সড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেই দেশ জুড়ে হৈচৈ পড়ে যায়। পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি, টিভি টকশোতে মাতামাতি, দোষীদের শাস্তি দাবীতে মানববন্ধন- এভাবে কিছু দিন চলার পর আর কারো খবর থাকে না। ঠিক একইভাবে রূপগঞ্জে হাশেম ফুডসের কারখানায় আগুনে পুড়ে ৫২জন শ্রমিকের কয়লা হওয়ার ঘটনাকে ঘিরে দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনা চলছে।২০১২ সালে তাজরীনের অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক ও রানাপ্লাজা ধসে সহস্রাধিক শ্রমিকের মৃত্যুর পরও একইভাবে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় বইলেও এখনো পর্যন্ত আমাদের দেশের শিল্প-কারখানায় কর্মপরিবেশ কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছেনি। বিদেশি ক্রেতার চাপে হাতেগোনা পোশাক-কারখানার কর্মপরিবেশ ও শ্রমিক নিরাপত্তায় কিছু কাজ হলেও দেশের গার্মেন্টশিল্পসহ সকল খাতের শিল্প-কারখানায় শ্রম ও শিল্প আইন ও বিধিবিধান মানা হয় না। দেশের বড় ও মাঝারি শিল্পকারখানার মালিকেরা প্রায় সকলেই রাষ্ট্রযন্ত্রের সাথে সম্পৃক্ত। মিল পরিদর্শকদের চাকরি যাদের হাতে তাদের মালিকানাধীন কারখানা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করার সাহস পরিদর্শকদের থাকার কথা নয়। তাই, তাদের দায়িত্ব কাগজে-কলমে ও মাসোহারা প্রাপ্তিতে সীমিত। কারখানার কর্মপরিবেশ, শ্রমিকের নিরাপত্তা, মজুরি, শিশুশ্রম- এসব ক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে তারা উদাসিন ও দায়সারাভাবে দায়িত্ব পালন করেন। এভাবে তো আর চলতে পারে না। সকল খাতের শিল্প-কারখানাকে সরেজমিনে পরিদর্শনের আওতায় এনে কর্মসহায়ক পরিবেশ তৈরির পাশাপাশি শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও শিল্পমালিকদের এগিয়ে আসতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকোরবানির পশুর বর্জ্য নির্ধারিত জায়গায় ফেলুন
পরবর্তী নিবন্ধলকডাউনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীর জীবন