দুদকের মামলায় আসলাম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৬ মে, ২০২৪ at ৭:৩২ পূর্বাহ্ণ

দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রায় ১৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের একটি মামলায় কারাবন্দি বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ আবদুল আজিজ ভূঁইয়া দুদকের আবেদনের উপর শুনানি শেষে এ আদেশ দিয়েছেন। শুনানির জন্য অন্য মামলায় কারাবন্দি আসলাম চৌধুরীকে কুমিল্লা কারাগার থেকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়েছিল। গত ২৮ এপ্রিল আসলাম চৌধুরীকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম আদালতে আবেদন করেছিলেন। রোববার ওই আবেদনের শুনানি হয়।

দুদকের কৌঁসুলি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাবলু বলেন, শুনানিতে আসলাম চৌধুরীর পক্ষের আইনজীবী তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার যুক্তি তুলে ধরেন। আদালত সেটা নাকচ করলে আইনজীবী তার জামিনের আবেদন করেন। আদালত সেটাও নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ১৫ কোটি ২৬ লাখ ৯২ হাজার ৪১৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে দখলে রাখার অভিযোগে দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৭ () ধারায় মামলা দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, দুদক অনুসন্ধানে তথ্য পেয়েছে, ২০০১ সালের ২১ মার্চ থেকে ২০১১ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত আসলাম চৌধুরী সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি, নডালিয়া, সলিমপুর, সোনাইছড়ি, দক্ষিণ সোনাইছড়ি, মসজিদ্দা, বাডাখালি, বাকখালি, বাঁশখালী, কলাবাড়িয়া, টেরিয়াইল, নয়াখালী, কৃষ্ণপুর, ভাটেরখীল, কাটগড়, গুলিয়াখালী, মুরাদপুর ও বোয়ালিয়া মৌজায় ১৪৬টি সাফ কবলার মাধ্যমে মোট ১৬ কোটি ৩৬ লাখ ৯১ হাজার ১৮৫ টাকার স্থাবর সম্পদের মালিকানা অর্জন করেন।

এছাড়া আসলাম চৌধুরী ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যবসায় ও অংশীদারি প্রতিষ্ঠানে পুঁজি বিনিয়োগ, বিভিন্ন ব্যাংকবীমা প্রতিষ্ঠানে একাধিক হিসাব নম্বরে জমা করা অর্থ, আসবাবপত্র ও স্বর্ণালঙ্কার মিলিয়ে ৩৬২ কোটি ৭১ লাখ ৩৮ হাজার ২৮০ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেন। এর মধ্যে ঋণ বাদে নিট সম্পদের মূল্য ৩৩ কোটি ৫৪ লাখ ৭৭ হাজার ৬১৬ টাকা। ১৯৯৭৯৮ সাল থেকে ২০২২২৩ সাল পর্যন্ত তিনি আয়কর নথিতে ২৭ কোটি ৫০ লাখ ৭৩ হাজার ৮৩১ টাকা আয় প্রদর্শন করেছেন। পারিবারিক ভরণপোষণসহ আনুষাঙ্গিক খাতে ব্যয় দেখিয়েছেন ৮ কোটি ২০ লাখ ৫৫ হাজার ৯১ টাকা। এর ফলে তার প্রদর্শিত সঞ্চয়ের পরিমাণ ১৯ কোটি ৩০ লাখ ১৮ হাজার ৭৪০ টাকা। কিন্তু তিনি ঘোষিত সঞ্চয়ের মধ্যে এক কোটি দুই লাখ ৩৩ হাজার ৫৪০ টাকার আয়ের সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ দুদককে দেখাতে পারেননি। এর ফলে তার গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৮ কোটি ২৭ লাখ ৮৫ হাজার ২০০ টাকা। নিট সম্পদ ৩৩ কোটি ৫৪ লাখ ৭৭ হাজার ৬১৬ টাকার বিপরীতে গ্রহণযোগ্য আয় ১৮ কোটি ২৭ লাখ ৮৫ হাজার ২০০ টাকা হিসাব করলে আসলাম চৌধুরীর জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫ কোটি ২৬ লাখ ৯২ হাজার ৪১৬ টাকা। ২০০১ সালের ২১ মার্চ থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুনের এ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন, যা এখন তদন্তাধীন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধক্ষতিকর কেমিক্যালে তৈরি হয় আইসক্রিম
পরবর্তী নিবন্ধন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান