‘দুজনে মিলেই আমরা একটা দল হয়ে উঠতাম’

মূল লেখা : বারাক ওবামা (আ প্রমিজ্‌ড্‌ল্যান্ড)

অনুবাদ : ফারহানা আনন্দময়ী | বৃহস্পতিবার , ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৬:১৬ পূর্বাহ্ণ

[ভূমিকা- ক্রাউন পাবলিশিং থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে আমেরিকার সাবেক রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার লেখা স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থ ‘আ প্রমিজ্‌ড্‌ল্যান্ড’। এই গ্রন্থের দ্বিতীয় অধ্যায়ের শুরুতে তিনি লিখেছেন মিশেলের সাথে তাঁর পরিচয়, প্রেম এবং অন্তরঙ্গ সময়ের কিছু স্মৃতিকথা। এখানে সেই পর্বটি অনুবাদ করেছেন ফারহানা আনন্দময়ী।]

মিশেল লোভন রবিনসনের সঙ্গে যখন আমার প্রথম পরিচয় হলো, ততদিনে সে আইনবিদ হিসেবে কাজ শুরু করেছেন। পঁচিশ বছর বয়সী মিশেল তখন শিকাগোর সিডলি অ্যান্ড অস্টিন নামের আইন কোম্পানিতে সহকারী এবং আমি আইন কলেজে সবে প্রথম বর্ষ শেষ করে সেখানে কাজ শিখতে ঢুকেছি। দীর্ঘাঙ্গী, সুন্দরী, বিনয়ী, কৌতুকপ্রিয়, বুদ্ধিদীপ্ত আর মেধায় দীপ্ত মিশেলকে প্রথমবার দেখেই মুগ্ধ হয়েছিলাম আমি। মিশেলকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল আমাকে সেই অফিসে স্বাগত জানানোর জন্য। সে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছিল, কোথায় ফটোকপিয়ার যন্ত্র থাকে, কোথায় এটা থাকে, কোথায় ওটা। এরপর একটা সময়ে একসাথে লাঞ্চে বেরোতাম আমরা, গল্প করতাম দুজনে বসে। নিজেদের কাজকর্ম থেকে শুরু করে একে একে প্রায় সবকিছুই আলাপের বিষয় হয়ে উঠলো আমাদের।
এভাবে বছর দুই কেটে গেল। আমার কলেজের ছুটিতে কিংবা মিশেল যখন সিডলির রিক্রুটিং দলের একজন হয়ে হার্ভার্ডে এলো, আবার একসাথে হলাম আমরা। ডিনারে যেতাম, চার্লস নদীর কিনার ছুঁয়ে হাঁটতে হাঁটতে অনেক কথা বলতাম। শেষদেখা সিনেমা নিয়ে, নিজেদের পরিবারের এটা-সেটা গল্প, পৃথিবীর কোথায় কোথায় বেড়াতে যাবো দুজনে, পরিকল্পনা করতাম সেই সব-ও। ওর বাবার অপ্রত্যাশিত মৃত্যু হলো মাল্টিপল সেক্লরোসিসে, সেই সময়ে সহমর্মিতা জানিয়ে মিশেলের সাথে উড়ে গেলাম ওদের বাড়িতে। আবার আমার নানার প্রস্টেট ক্যান্সারের সংবাদে আমি যখন কষ্ট পাচ্ছিলাম, মিশেলই সাথে থেকে আমাকে আশ্বস্ত করেছিল। ‘সঙ্গে আছি’ এই অনুভবটা পোক্ত হচ্ছিল দুজনের ভেতরেই।
বন্ধুত্ব থেকে আমাদের সম্পর্ক ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল প্রেমে। আমার আইন কলেজের গ্রাজুয়েশনের সময়টা একেবারে সামনে এগিয়ে এলো। ততদিনে দুজনে দুজনের অনেকটাই কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। নিজেদের আলাদা জীবনকে আমরা একসাথে বেঁধে নেয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু করলাম তখন। সেবামূলক একটা সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলাম আমি। মিশেলকেও একসময় সেখানে নিয়ে গেলাম। আমার এক বন্ধু সাউথ সাইডে সেই সংগঠনটি চালাতো, মূলত ওকে সাহায্য করতেই ওখানে যাওয়া আমাদের। ওই এলাকার নিম্নবিত্ত একলা-মায়েরা, যাদের বিশেষ কোনো কাজে তেমন দক্ষতা নেই, ওদেরকে নিজেদের ভাবনাগুলো প্রকাশ করতে বলতাম, তারা কেমন জীবনযাপন করেন আর আগামীতে কেমন যাপনে নিজেদেরকে দেখতে চান। বাস্তবতার সাথে তাদের চাওয়ার একটা সেতু গড়ে দিতে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করতাম আমি। একদিন ওখানে কাজ সেরে হেঁটে আমরা দুজন গাড়ির কাছে আসছিলাম। মিশেল হঠাৎ আমার হাতটা ওর হাতের মধ্যে নিয়ে বলল, ওই সকল একলা-মায়েদের জন্য যে আন্তরিকতা নিয়ে আমি কাজ করি, এটা তাকে স্পর্শ করে গভীরভাবে।
“তুমি ওদের প্রাণে আশা জাগাও”।
উত্তরে আমি বললাম, “তাদের প্রয়োজন আশার চেয়েও অধিক কিছু”। মিশেলকে সেদিন আমি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছিলাম, ঠিক কোন্‌দ্বন্দ্বটা আমি অনুভব করি এই সমস্ত কাজ করতে গিয়ে। একটা অচল সিস্টেমকে সারিয়ে নতুন একটা পরিবর্তন আনা, সহজ নয়। এটাকে সামনে আনার জন্য দরকার নেতৃত্ব। তবে শুধু নেতৃত্ব দিয়ে কাজের কাজ ততটা হয় না। নিজেদের পরিবর্তনের জন্য নিজেদেরকেও কাজ করতে হবে। এর জন্য রাজনীতির অংশ হয়ে কাজ করতে চাই, কিন্তু রাজনীতিক হতে চাই না।
শুনে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে মিশেল কোমলস্বরে বলল, “আজকের পৃথিবীকে সেই পৃথিবীর মতো করতে হবে, যেমনটা আমরা চাই”।
আমি বললাম, “হ্যাঁ, আমার ভাবনাটা অনেকটা সেরকমই”।
মিশেল ছিল একেবারেই অন্যরকম, ব্যতিক্রম, ভান-ভনিতাহীন, স্বচ্ছ। এখন পর্যন্ত অন্য কাউকেই আমি দেখিনি ওর মতো। একটা সময়ে এসে আমার মনে হতে লাগলো, মিশেলকে জিজ্ঞেস করি, সে আমাকে বিয়ে করবে কিনা? খুব গভীর ছিল আমাদের সম্পর্কটা। আর এরকম একটা প্রেমের সম্পর্কের পরিণতি বিয়েতে পৌঁছানোই স্বাভাবিক। আমি ছিলাম একটি ভাঙা-পরিবারের সন্তান, আমার মা-বাবার বিয়েটা ভেঙে গিয়েছিল। এরকম একটা ভাঙচুর দাম্পত্যসম্পর্ক দেখে বড় হয়ে ওঠা আমি খুব চাইতাম, আমার জীবনটা এরকম না হোক। প্রেম আর বিয়েটা একটা শক্ত মাটি খুঁজে পাক দীর্ঘদিন টিকে থাকার জন্য।
মিশেলের সাথে প্রেমের দিনগুলোতে আমরা কেবলই দুজন দুজনের মতে সায় দিয়ে যেতাম, এমনটা কিন্তু হতো না সবসময়। অনেক বিষয়েই মতান্তর ঘটতো আমাদের, তর্কাতর্কি কখনো চরম পর্যায়ে যেত, আর মিশেল কখনোই হাল ছেড়ে দিত না। ওর যুক্তি ঠিকই প্রতিষ্ঠিত করতে পারত। মিশেলের ভাই ক্রেইগ ছিলেন প্রিন্সটনের তারকা বাস্কেটবল খেলোয়ার, পরে কোচ হয়েছিলেন। তিনি মজা করে প্রায়ই বলতেন যে, ওদের পরিবার কখনোই ভাবেনি মিশেল বিয়ে করবে। মিশেল নাকি এতটাই জেদি ছিল, যে কোনো মানুষের পক্ষেই খুব কঠিন ওকে বুঝে চলাটা। অথচ আমার দিক থেকে মিশেলের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি অবাক করা পর্যবেক্ষন ছিল, ওর এই দিকটাই খুব টেনেছিল আমাকে। দৃঢ়চিত্ত, স্বাধীনচিত্ত একরোখা এক নারী! প্রায় সবসময়ই আমাকে চ্যালেঞ্জ জানাতো সে, আর এটাতে আমি ওর প্রতি আরো ঝুঁকে পড়তাম। তাতে হত কী, নিজের প্রতি সৎ থাকাটাও সহজ হতো আমার জন্য। মাঝেমাঝে কল্পনায় আঁকি আমি, আমাদের পরিচয়ের আগের মিশেলকে। একজন তরুণ কেরিয়ারিস্ট, দক্ষ, পরিশীলিত, নিজের কাজে খুবই মনোযোগী, যে কাজ যেভাবে হওয়া দরকার, সেই কাজ সেভাবেই হতে হবে…এতটাই খুঁতখুঁতে সেই মিশেল! তামাশা করার জন্য তার হাতে এত সময় নেই, এমনটাই। এমন এক নারীর জীবনে হাওয়াই থেকে সহসা এসে হাজির হলো এই যুবক, যার আলমারিতে পোশাক ছিল অল্প কিন্তু দু’চোখভর্তি ছিল দারুণ সব স্বপ্ন! ওর জীবনকে দুলিয়ে দিয়েছিল এই যুবকটিই। মিশেল বলেছিল, সে জীবনে অন্য যেসব পুরুষের সাথে অন্তরঙ্গ হয়েছিল, তাদের চেয়ে আমাকে ওর একেবারেই আলাদা মনে হয়েছে। এমন কী তার বাবার চাইতেও অনেক আলাদা, যে বাবা ছিল ওর খুব পছন্দের একজন মানুষ। মিশেলের বাবা কখনো কমিউনিটি কলেজের বেড়া ডিঙোননি, শুধু পরিবারকে খুশি রাখতে লেখাপড়া শেষ করার আগেই কর্মজীবনে ঢুকতে হয়েছিল তাকে। মিশেলের নাচ আর কবিতার ক্লাস ঠিকঠাক রাখতে, ক্রেইগের বাস্কেটবল গেইমগুলো নিয়মিত রাখতে একটা দিনও কাজে কামাই দিতে পারতেন না তিনি। মিশেল আর ওর পরিবারের গর্ব ছিল ওদের বাবা।
আমার জীবনের সাথে জুড়ে মিশেলের জীবন অন্যধারায় ধাবিত হতে শুরু করলো। নতুন করে নতুন কিছুতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে শুরু করল সে। ওর শৈশবটা ছিল একেবারেই সাদামাটা। অ্যাডভেঞ্চার, ছুটিতে পরিবারের সাথে বেড়াতে যাওয়া এসবের স্মৃতি ওর নেই। শিকাগোর একটা বড় যৌথপরিবারে বেড়ে ওঠা মিশেলের ভাবনার মধ্যে একজন ভালো মা হওয়ার ইচ্ছে আর আমার জীবনের নোঙর হয়ে ওঠার প্রতিজ্ঞা তাকে পেয়ে বসলো। আমরা দুজন দুজনকে শুধু ভালোবাসবার জন্যই ভালোবাসলাম, তা নয়। আমরা আমাদের আনন্দ-বেদনা, মূল্যবোধগুলো ভাগাভাগি করে নিলাম। আমাদের ভালোবাসাটা এমন একটা স্থাপনা হয়ে উঠলো, একটা ইট যদি মিশেল গাঁথে, তো পরের ইটটা আমি গাঁথতাম। হয়ে উঠলাম পরস্পরের আশ্রয়, দুজন দুজনকে আগলে রাখতাম সযত্নে। আমার ভেতরের কমতিগুলো যদি মিশেল তার ভালো দিয়ে ভরিয়ে দিত, তো মিশেলের ফাঁকগুলো আমি পূরণ করে দিতাম। দুজনে মিলেই আমরা একটা দল হয়ে উঠলাম।
অপরদিকে এটাও ঠিক, অভিজ্ঞতা আর চেতনার দিক দিয়ে ভাবলে মিশেল আর আমার ভাবনার দৃষ্টিকোণে তফাৎ আছে। মিশেলের জীবনের ধারা আলস্যমসৃণ ছিল না। আলোকিত একটা জীবনের গন্তব্যে পৌঁছুনোর পথে অনেক বাঁধা অতিক্রম করতে হয়েছে ওকে। ওর মতে, পরিবার যদি চলার পথে সাথে না থাকে, তবে যে কোনো ঝুঁকি আর বিপদই অনেকগুণ বড়ো হয়ে সামনে দাঁড়ায়। খুব দামি বেতনের একটা চাকরি, নিজের ভালো একটা বাড়ি একজন মানুষকে ক্ষণিকের জন্য সুখি আর নিরাপত্তাবোধ দিতে পারে। কিন্তু সবসময়ই আমাদের মাথায় রাখা উচিত, কোনোকিছুই চিরস্থায়ী নয়। একটা লে-অফ বা একটা গুলিবর্ষণের মতো ঘটনা যে কোনো মুহূর্তেই জীবনকে এলোমেলো করে দিতে পারে। সাউথ সাইড এলাকায় বড় হয়ে ওঠার দরুন মিশেল কোনোসময়ই স্বস্তিকর একটা যাপন পায়নি। সারাক্ষণই একটা আতঙ্কের মধ্যে থাকতো হত ওকে। অর্থকে সে কখনোই জীবনের মূল লক্ষ্য করে তোলেনি। আর এ কারণেই টাকার জন্য নিজের সত্তা বিলীন হবার মতো ঘটনা ঘটবার জন্য চিন্তিত থাকতো না সে। মিশেল জানতো, সকলের কাছে নিজের যোগ্যতা প্রমাণের মতো যথেষ্ট মেধা আর আত্মবিশ্বাস তার আছে।
আইন কলেজের পর্ব যখন শেষ হলো আমার, মিশেলকে বললাম, গৎবাঁধা একটা ওকালতিজীবনে আগ্রহী নই আমি। বরং আমি শিকাগো ফিরে গিয়ে সামাজিক সংগঠনে যুক্ত হয়ে কমিউনিটির জন্য কাজ করবো। দরকার হলে একটা ছোট আইনকেন্দ্রে আইনবিদের কাজ নেব। আলাদাভাবে চর্চা করবো নাগরিকদের আইনি অধিকার বিষয়টি নিয়ে। এর ফাঁকে যদি বিশেষ কোনো ভালো সুযোগ আসে, তো নিজেই একটা আইনী-সহায়তা কেন্দ্র খুলবো।
আমার এসব কোনো সিদ্ধান্ত তাকে একটুও অবাক করলো না। যেন সে জানতোই, আগামী জীবনটা এভাবেই নির্মাণ করতে চাই আমি। আমার সিদ্ধান্তের ওপরে পুরোপুরি ভরসা ছিল মিশেলের। বললো, “তোমার বিশ্বাস নিয়ে সঠিক পথেই আছ তুমি”।
“কিন্তু আরো কিছু কথা তোমাকে বলার আছে আমার। তুমি যা করতে চাইছ, তা শেষপর্যন্ত সফল করা তোলাটা খুব কঠিন কাজ। আমারো খুব মন চায় তোমার মতো আশাবাদী হতে। কখনো কখনো আমি তা হয়ে উঠিও। তবে জানো তো, বেশিরভাগ মানুষই স্বার্থপর আর মগজটা কম খাটাতে চায়। তারা মানুষের কল্যাণ নিয়ে মোটেও আলাদা করে ভাবতে চায় না। সমাজের মানুষের কল্যাণের জন্য খুব কম মানুষই রাজনীতিতে আসে। তারা কেবল আসে ক্ষমতা উপভোগ করার জন্য আর নিজেদের আখের গোছাতে। আমি জানি না তুমি ঠিক কতটা পরিবর্তন আনতে পারবে এই অবস্থার, বিশেষ করে শিকাগোতে”।
“চেষ্টা তো করে দেখতে পারি আমি? নাকি চেষ্টাটাও করবো না?” আমি বললাম। “সমাজের পরিবর্তনের জন্য জীবনে যদি কোনো ঝুঁকিই না নিতে পারি, তো এই আইন ডিগ্রি নিয়ে কী লাভ আমার? শেষ পর্যন্ত যদি সফল না হই, তো না-ই হলাম। তাতে খুব বেশি ক্ষতি তো আমাদের হবে না। দেখো, আমরা ঠিক সামলে উঠবো”। সে দু’হাতের মধ্যে আমার মুখটি নিল। বললো, “খেয়াল করেছ তুমি, যখনই এমন কোনো পরিস্থিতি আসে, বেছে নিতে হয় কোনো একটিমাত্র পথ, একটা সহজ পন্থা, অন্যটি কঠিন; তুমি নিশ্চিতভাবেই কঠিন পন্থাটি বেছে নাও। কী মনে হয় তোমার, এটা তুমি কেন করো?”
সব চুপচাপ। আমরা দুজনেই নিঃশব্দে হাসলাম। আমি খুব ভালোমতোই জানি, উত্তরটা মিশেলের ভাবনাতে আগে থেকেই আছে। সেটা মনোজগতে ধ্রুব হয়ে জ্বলছিল, যা আমাদের দুজনকেই সেই পথে এগোতে সাহায্য করেছিল।
এভাবে প্রেম আর অন্তরঙ্গতায় বেশ কয়েকটা কাটিয়ে তারপরই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই আমরা দুজনে।
ফারহানা আনন্দময়ী : কবি, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা দ্যা ইডিইউভিয়ান
পরবর্তী নিবন্ধকাল আজকাল