দিনে নীরব, রাতে সরব

লোহাগাড়ায় অভিযানের পরও থামছে না মাটি কাটা কৃষি জমির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সড়কও

লোহাগাড়া প্রতিনিধি | বুধবার , ১২ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ

লোহাগাড়ায় প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করার পরও থামছে না নির্বিচারে ফসলি জমির টপ সয়েল ও টিলা কাটা। এতে জমির উর্বরতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যও হুমকির মুখে পড়েছে। দিনে নীরব থাকলেও রাতে সরব হয়ে উঠে মাটি খেকোরা।

জানা যায়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ফাঁকি দিয়ে একশ্রেণির প্রভাবশালী বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির লোকদের সমন্বয়ে সিন্ডিকেট করে উপজেলার সর্বত্র মাটি বিক্রির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। আর এসব মাটি পরিবহনের ফলে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ কাঁচাপাকা সড়ক নষ্ট হচ্ছে। রাস্তাঘাটে বাড়ছে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি। প্রতিনিয়ত ধুলোবালিতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথাচারীরা। ফসলি জমির টপ সয়েল ও টিলা কাটা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন এলাকাবাসী। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম আমিরাবাদ এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় এক সপ্তাহ যাবত নির্মাণাধীন রেললাইনের পাশে মাস্টার পাড়া, রাউজন্যা পাড়া ও নতুন বাজার এলাকায় রাতের আঁধারে এঙকেভেটর দিয়ে ফসলি জমির টপ সয়েল কাটা হচ্ছে। মাটিখেকোরা এসব মাটি বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে। কিছু জমির উপরিভাগ একেবারে কেটে নিয়েছে। আবার কিছু জমির অর্ধেকাংশ কাটা হয়েছে। ইতোপূর্বে পশ্চিম আমিরাবাদ এলাকায় কৃষি জমির টপ সয়েল কাটায় উপজেলা প্রশাসন দুইবার অভিযান পরিচালনা করেছে। অর্থদণ্ডও দেয়া হয়েছে। তারপরও থামছে না মাটি কাটা। স্থানীয়রা জানান, মাটি ব্যবসায়ীরা এক শ্রেণির দালাল দিয়ে সাধারণ কৃষককে লোভে ফেলে ফসলি জমির মাটি বিক্রিতে উৎসাহিত করছেন। আর কৃষকরা লোভে পড়ে নগদ টাকার আশায় ফসলি জমির মাটি বিক্রি করে দেন। ৮১০ ফুট গভীর করে মাটি কাটার ফলে অনেক জমিই ডোবায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয়দের অভিমত, প্রতিবছর শত একর ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। যার কারণে দিন দিন আবাদী জমির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। ফলে কৃষি উৎপাদন ও জীববৈচিত্র মারাত্মক হুমকিতে পড়ছে। এছাড়া সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের আঁধারে কাটা হচ্ছে টিলা।

আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হোছাইন মুহাম্মদ শারফু জানান, একটি কুচক্রী মহল রাতের আঁধারে এঙকেভেটর দিয়ে কৃষি জমির টপ সয়েল কাটছে। মাটিখেকোরা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। অবৈধভাবে মাটি কাটার কারণে কৃষি জমির পাশাপাশি শত শত মাটিবাহী ট্রাক চলাচল করার কারণে গ্রামীণ সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।

লোহাগাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, কৃষি জমির টপ সয়েল ও টিলা কাটার দায়ের ইতোমধ্যে একাধিক ব্যক্তিকে জরিমানা করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে অপরাধ নির্মূল করতে এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও এগিয়ে আসতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবঙ্গবাজারে ৩৮৪৫ দোকান পুড়ে ৩০৩ কোটি টাকার ক্ষতি : তদন্ত কমিটি
পরবর্তী নিবন্ধকথা বলতে না দিতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন : ফখরুল