লোহাগাড়ার চরম্বায় রাতের আঁধারে টিলা কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। একটি প্রভাবশালী মহল ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের জান মোহাম্মদ পাড়া এলাকার দুই স্থানে এ টিলা কাটা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানায়, বিগত কয়েকদিন ধরে জান মোহাম্মদ পাড়ায় এক্সকেভেটর দিয়ে টিলার মাটি কাটা শুরু করে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। জনৈক জামাল কোম্পানির মালিকানাধীন এক্সকেভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে টিলার মাটি। এসব মাটি পরিবহনে ব্যবহার করা হয় ৬/৭টি মিনিট্রাক। পার্শ্ববর্তী আবদুস শুক্কুরের জায়গা ভরাটের কাজে ব্যবহার হচ্ছে এসব মাটি। দিনের বেলায় সব সুনসান থাকলেও এক্সকেভেটর ও ট্রাকের বিকট শব্দে রাতে ঘুমানো দায় হয়ে পড়েছে স্থানীয়দের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অভিযোগ করেন, পাহাড়খেকো চক্রটি এরই মধ্যে ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি টিলা কেটে সাবাড় করে দিয়েছে। এভাবে টিলা কাটার কারণে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। টিলার কাটার কাজে জড়িতরা প্রভাবশালীরা হওয়ায় তাদের ব্যাপারে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, টিলা কাটার কাজ রাতে সরব থাকলেও দিনে থাকে নীরব। টিলায় রয়েছে কয়েকটি বসতঘর। এভাবে টিলা কাটায় চলতি বর্ষা মৌসুমে এসব বসতঘর ধসে পড়ার আশংকা রয়েছে। তাছাড়া টিলায় রোপিত বিভিন্ন প্রজাতির গাছও কাটা হয়েছে। এভাবে টিলা কাটায় নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য। বর্ষায় টিলা ধসে প্রাণহানির শঙ্কার কথাও বলেছেন অনেক বাসিন্দা।
এক্সকেভেটর মালিক জামাল কোম্পানি জানান, টিলা কেটে মাটি বিক্রির সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তবে তার এক্সকেভেটর স্থানীয় আসহাব উদ্দিনকে ভাড়া দিয়েছেন। মাটির ক্রেতা আবদুস শুক্কুর জানান, জায়গা ভরাটের জন্য তিনি আসহাব উদ্দিনের কাছ থেকে মাটি কিনেছেন। আসহাব উদ্দিন জানান, তিনি টিলা কাটার সঙ্গে জড়িত নন। টিলা কাটার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। এক্সকেভেটর মালিক জামাল কোম্পানির সঙ্গে তার বিরোধ আছে। তাই টিলা কাটায় তার নাম ব্যবহার করে থাকতে পারেন। তবে টিলা কাটার প্রতিবেদনে তার নাম উল্লেখ করলে এ প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে মানহানি মামলার হুমকি দেন তিনি। তার সঙ্গে মোবাইল ফোনের কথোপকথন রেকর্ড হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাকে ফোন করে বিরক্ত করেছি এজন্যও মানহানির মামলা করা হবে।
লোহাগাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, টিলা কাটার ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।