‘আমার দায়িত্ব ছিল তামিমকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যাওয়া, ব্যস। আর কিছু জানি না…,’। শুরুতে আলোচনার গভীরে যেতেই চাইছিলেন না মাশরাফি বিন মুর্তজা। পরে অবশ্য প্রেক্ষাপট কিছুটা শোনালেন বাংলাদেশ দলের সাবেক এই অধিনায়ক। পাশাপাশি তিনি বললেন, সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা প্রমাণের দায় এখন তামিমেরই। প্রধানমন্ত্রীর সামনেই সেটা তিনি তামিমকে বলেছেন বলেও জানালেন মাশরাফি। খবর বিডিনিউজের।
মাশরাফি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ওর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইছিলেন। তামিম তো সবকিছু থেকে দূরে ছিল। প্রধানমন্ত্রী তাই আমাকে বলেছেন ওর সঙ্গে যোগাযোগ করতে। আমি তাকে বলেছি যে, তামিমকে আমি নিয়ে আসছি আপনার কাছে। তামিমকে আমি বলেছি যে, তুই গিয়ে মনের কথা বল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে কথা আছে, সেটা তিনি বলবেন। তারপর যে সিদ্ধান্ত হওয়ার, হবে। আমার দায়িত্ব ছিল ওকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যাওয়া।
আমি নিজে এখানে কী চাই, সেটা ভিন্ন জিনিস। যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কথা বলবেন, আমার চাওয়া–পাওয়ার কিছু নেই। তিনি কথা বলবেন, দিক নির্দেশনা দেবেন, সবকিছু করবেন। এই তো। আমার ভূমিকা কেবল নিয়ে যাওয়া। শেষ পর্যন্ত সবকিছু যেভাবে শেষ হলো, তাতে স্বস্তিই অনুভব করছেন বাংলাদেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক।
এর চেয়ে ভালো সমাধান আমি আশা করিনি। তামিম বিরতি চেয়েছে, সেটা নিক। পুরো ফিট হয়ে, মানসিকভাবে তরতাজা হয়ে ফিরুক। কিন্তু এভাবে অবসরের মানে নেই। বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেক কিছুই হয়। কোচের সঙ্গে ঝামেলা হতে পারে, বোর্ডের সঙ্গে হতে পারে। আমার ২০ বছরের ক্যারিয়ার আর অধিনায়কত্বের ৫–৬ বছরে তো কম হয়নি এসব। সব দলেই কম–বেশি এসব হয়। এসব সামলেই চলতে হয়।
মাশরাফির মতে, এই অধ্যায়ের আপাতত সমাধান হলেও মূল চ্যালেঞ্জটি সামনে। অবসরের ঘোষণা তুলে নিলেও আপাতত এক–দেড় মাসের বিরতি নিচ্ছেন তামিম। ফিরবেন তিনি এশিয়া কাপ থেকে। বাংলাদেশকে ৫০টি ওয়ানডে জয়ে নেতৃত্ব দেওয়া মাশরাফির আশা, জেদ ও পরিশ্রমের আগুনে নিজেকে পুড়িয়ে আরও খাঁটি হয়ে ফিরবেন তামিম।
আমার কথা হলো, সে যেন ট্রেনিং করে পুরো ফিট হয়ে আসে। দায়িত্ব এখন পুরোপুরি ওর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনেই ওকে বলেছি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রান করছিস, তোর ক্যারেকটারে সেই দাপট থাকা উচিত। এত আমতা আমতা করে, এত সংশয় নিয়ে ক্রিকেট খেলা যাবে না। ক্রিকেটে অভিমানের কোনো মূল্য নেই। এভাবে অবসর নিলে তিন মাস পর তোকে কেউ মনে রাখবে না। মনে রাখার মতো কিছু করতে হবে।
এটাও বলেছি ওকে, তুই বাংলাদেশের জন্য খেলছিস, এতে তোর গর্ব অনুভব করা উচিত। বাংলাদেশ তোর প্রতি কৃতজ্ঞ নয়, তোর চিরকৃতজ্ঞ থাকা উচিত দলের প্রতি। ১৫ হাজার রান করে যদি দলের ভেতরে–বাইরের চাপ নেওয়ার মানসিকতা না থাকে, তাহলে অবসর নেওয়াই ঠিক আছে। এখন এসব কথায় ওর খারাপ লাগতে পারে, তবে ক্রিকেট খেলা এতটা সহজ নয়। তামিম আশা করি ইতিবাচকভাবেই নিয়েছে।