দারিদ্র্যপীড়িতদের চোখে মুখেও থাকে যেন ঈদের হাসি

আ ব ম খোরশিদ আলম খান | বৃহস্পতিবার , ২০ এপ্রিল, ২০২৩ at ৮:২৮ পূর্বাহ্ণ

রোজার শেষেই আসছে অনাবিল হাসিআনন্দের ঈদ। এখন থেকেই ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে ঈদের আমেজ। শাওয়াল মাসের ঈদের চাঁদ উদিত হওয়ার অপেক্ষায় আছেন দেশের সর্বস্তরের মুসলিম জনতা। ঈদের আনন্দে শামিল হতে রোজার মাসের শুরু থেকেই বিত্তবানরা নানা ধরনের কেনাকাটায় ব্যস্ত আছেন।

একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় যে, মুসলমান সম্প্রদায়ের কাছে রোজা ও ঈদ ত্যাগ ও আত্মসংযমের বার্তা নিয়ে এলেও ঘরে ঘরে ঈদের খুশি, রোজার ব্যতিক্রমী অনুভূতি সবাইকে স্পর্শ করে বলে মনে হয় না। মানুষে মানুষে মেলাতে, একে অপরের সাথে মানবিক সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার যে বার্তা ও আহ্বান নিয়ে রোজা এবং ঈদ আসে বছর ঘুরে, তা সবাই সমভাবে উপভোগউপলব্ধি করতে পারে জোর দিয়ে এই দাবি করা যায় না। বরং এই রোজা ও ঈদ গরিব, ভাগ্য বিড়ম্বিত, অভাবী মানুষের জন্য অনেক সময় বিষাদতুল্য ঠেকে এক শ্রেণীর বিত্তবানদের ভোগবাদী জীবনদৃষ্টির কারণেই। ঈদ মানে সর্বজনীন আনন্দোৎসব। ত্যাগ ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন জীবনবোধে সমৃদ্ধ হওয়ার প্রেরণার নামই রোজা।

প্রিয়নবী (.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজে পেট পুরে খায়, অথচ তার প্রতিবেশী ক্ষুধায় কাতর থাকে সে তো আমার উম্মতের দলভুক্ত নয়’। এখানে প্রিয়নবী (.) বলেছেন একজন সচ্ছল ব্যক্তিকে তার প্রতিবেশীর প্রয়োজন পূরণে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিবেশী সে মুসলিম বা অন্য ধর্মাবলম্বী যেই হোক না কেন। বলা হয়েছে প্রতিবেশীর কথা। প্রতিবেশী সে যে ধর্মের, গোত্রেরই অন্তর্ভুক্ত হোক তার দুর্দশায়দুর্দিনে পাশে দাঁড়ানোর কড়া নির্দেশনা স্বয়ং নবীজীর (.)। দেশ ও সমাজের সবাইকে হাশিখুশিতে রাখাই তো বিত্তবান, সমাজপতি ও সরকারের নৈতিকধর্মীয় দায়িত্ব। খলিফাতুর রসুল ইসলামের সোনালি দিনের ন্যায়নিষ্ঠ শাসক হযরত ওমর (রা.) রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে দৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন-‘শুধু কোনো মানুষ নয়, আমার শাসনের আওতাভুক্ত ফোরাত নদীর তীরে একটি কুকুরও যদি না খেয়ে মরে তাহলে আমি ওমরকে আল্লাহ্‌র কাছে দায়িত্বে গাফেলতির জন্য জবাবদিহি করতে হবে। এর জন্য আমি ওমরই দায়ী থাকবো’। এই হচ্ছে ইসলামের জীবন দর্শন। সাহাবায়ে কেরামের দায়িত্বনিষ্ঠা ও ত্যাগের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই একটি বাণী থেকে আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যক্তিবর্গের, নেতৃত্বের বহু কিছু শেখার আছে। একেই বলে প্রজাবাৎসল্য, মানবতাবোধ ও ইনসাফ। শহর বা গ্রামের দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের চোখেমুখেও থাকে যেন ঈদের হাসি, আনন্দের ঝিলিক। এই রোজাঈদে আপনার পাশের গরিব আত্মীয় স্বজনের কথা ভাবুন। ঈদের আনন্দে তাদেরকেও শামিল করার সুযোগ সৃষ্টি করুন। এটাই সিয়াম ও ঈদের অন্তর্নিহিত দর্শন ও আহ্বান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধছুটি আগে শুরু হওয়ায় এবার ঈদযাত্রায় স্বস্তি
পরবর্তী নিবন্ধঅ্যামোনিয়া সিলিন্ডার বিস্ফোরণে উড়ে গেল ভবনের বড় অংশ