ছুটি আগে শুরু হওয়ায় এবার ঈদযাত্রায় স্বস্তি

শুকলাল দাশ | বৃহস্পতিবার , ২০ এপ্রিল, ২০২৩ at ৮:২৭ পূর্বাহ্ণ

ঈদ কড়া নাড়ছে দুয়ারে। ঈদুল ফিতরের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। প্রিয়জনের সাথে ঈদ করার মজাই যেন আলাদা। রেলপথে, সড়ক পথে, নদী পথে সবখানে নাড়ির টানে বাড়ির পানে ছুটছে মানুষ। কেবল ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে নগরী। ঈদ মানে ঘরে ফেরার উৎসব।

 

কর্মব্যস্ত মানুষের চোখে মুখে যেন ছোঁয়া লেগেছে আনন্দের। দৈনন্দিন ব্যস্ততা ভুলে ঈদ আনন্দ উদযাপন করতে কয়েক দিনের জন্য বাড়ি ফেরেন সবাই। তাই ঈদের ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে নাড়ির টানে চট্টগ্রাম ছাড়ছে মানুষ। ধীরে ধীরে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে কোলাহলমুখর নগরী। টানা পাঁচ দিনের সরকারি ছুটির প্রথম দিন গতকাল বুধবার ট্রেন এবং বাসে চট্টগ্রাম ছেড়েছে বিপুল সংখ্যক মানুষ। এবার ঈদের চারদিন আগে থেকেই ছুটি শুরু হওয়ায় মানুষ পরিবারপরিজন নিয়ে আগের মতো তাড়াহুড়ো না করে ধীরে সুস্থে বাড়ি ফিরছেন। যার কারণে অন্যান্য বছরের মতো ভিড় নেই ট্রেন এবং বাস স্টেশনগুলোতে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২২ অথবা ২৩ এপ্রিল শনি ও রবিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। ঈদের ছুটি গতকাল বুধবার থেকে শুরু হয়েছে। তাই গতকাল সকাল থেকেই মানুষ বাড়ি ফিরতে শুরু করে। এই কারণে গতকাল সকাল থেকে বাসট্রেন ছিল যাত্রীতে ভরপুর। গতকালের চেয়ে আজ বৃহস্পতিবার প্রতিটি ট্রেনে ভিড় বাড়বে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী।

তবে এরই মধ্যে ফাঁকা হতে শুরু করেছে ব্যস্ত বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে নাড়ির টানে চট্টগ্রাম ছাড়ছে মানুষ। স্বজনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ফিরতে শুরু করেছে শেকড়ের টানে। সকাল থেকে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে ছিল ঘরমুখী মানুষের ভিড়। আছে ভোগান্তিও। এদিকে, ঘরমুখী মানুষের যাত্রা নিরাপদ করতে বিশেষ ট্রেন চালু করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।

মহাসড়কের বিড়ম্বনা এড়িয়ে কিছুটা ঝামেলা মুক্তভাবে বাড়ি ফিরতে সকাল থেকে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে বাড়তে থাকে ভিড়। শেকড়ের টানে বাড়ি ফেরা এসব যাত্রীরা নির্ধারিত সময়ের আগেই অবস্থান নেন স্টেশনে। স্বজনদের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ি ফেরার আনন্দে খুশী ছোটরাও। একই অবস্থা বাস স্টেশনেও। সকাল থেকে লোকে লোকারণ্য।

গতকাল সকাল থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১৮টি ট্রেন চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে হাজার হাজার যাত্রী নিয়ে ছুটেছেন বিভিন্ন গন্তব্যে। এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী আজাদীকে বলেন, ঈদযাত্রার গতকাল তৃতীয় দিনেও বেশি ভিড় ছিল না। সোনার বাংলা ট্রেনে অনেক আসন খালি গেছে। ঈদযাত্রার ৫দিনের টিকিট অনলাইনে দেয়ায় অনেকেই রেজিস্ট্রেশন না থাকায় টিকিট কাটতে পারেননি। এই কারনে কিছু কিছু ট্রেনের টিকিট রয়ে গেছে। গতকাল ঈদযাত্রার তৃতীয় দিনে সোনার বাংলা, বিজয় এবং পাহাড়িকার যাত্রা বিলম্ব হয়েছে। সোনার বাংলা ৫৫ মিনিট দেরিতে ছাড়া হয়েছে। বিজয় ১০টায় ছাড়ার কথা ছিল সেটা ১০টা ৩০ মিনিটে ছাড়া হয়েছে। পাহাড়িকা ৭টা ৩৫ মিনিটে সিলেট থেকে আসার কথা ছিল। সেটি এসেছে রাত ১১টায়। সেটি উদয়ন হয়ে ১১টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে গেছে।

যত ভিড় বাস স্টেশনে : রেল স্টেশনের দ্বিগুণ ভিড় বাস স্টেশনগুলোতে। কদমতলী আন্তজেলা বাস টার্মিনালে, স্টেশন রোডস্থ বিআরটিসি স্টেশন, বহদ্দারহাট, নতুন ব্রিজ এলাকা, অঙিজেন, একে খান, গরিবুল্লাহ শাহ মাজার গেইটে দূরপাল্লার এসি বাস কাউন্টার এবং অলংকার মোড়ে সকাল থেকে বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড় লেগেছিল। বিকেলের পর থেকে এই ভিড় আরো বাড়তে থাকে। এদিকে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের লোকোলোকারণ্য সকাল থেকে। কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকায় সকাল থেকে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষের স্রোত লেগেছিল।

এই ব্যাপারে আন্ত:জেলা বাস মালিক সমিতির মহাসচিব প্রফেসর কফিল উদ্দিন আহমদ আজাদীকে বলেন, যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দে টিকিট নিয়ে আনন্দের সাথে পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। এবার ঈদযাত্রা ভালোই হবে। যাত্রীরা টিকিট নিয়ে পরিবারপরিজন নিয়ে স্বাচ্ছন্দে বাড়ি যাচ্ছেন। ঈদে অন্যান্যবারের মতো এবারও প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার যাত্রী যেতে পারবেন। ২০ হাজারের মতো যাত্রী শহরে আসবেন। চট্টগ্রাম থেকে ৫০ থেকে ৬০টি রুটে প্রতিদিন ৫শ’ থেকে ৬শ’ গাড়ি যাত্রী নিচ্ছেন।

এবার প্রতিটি ট্রেনে অতিরিক্ত বগি যুক্ত করায় এবং ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালু করায় এবার কোনো ট্রেনেই অন্যান্যবারের মতো ভিড় নেই। এবারও ছাদে কাউকে উঠতে দেওয়া হয়নি। বাস কাউন্টারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোগান্তি এড়াতে এবার পরিবার পরিজন নিয়ে ধীরে সুস্থে যাচ্ছেন বাড়িতে। তাই এবারের ঈদযাত্রায় উপচেপড়া ভিড় নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঈদের চাঁদ দেখা যেতে পারে শুক্রবার
পরবর্তী নিবন্ধদারিদ্র্যপীড়িতদের চোখে মুখেও থাকে যেন ঈদের হাসি