দুয়ারে কড়া নাড়ছে ঈদুল ফিতর। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ মানুষের জামা–কাপড় কেনা শেষ। গৃহকর্তাদের এখন ছুটতে হচ্ছে সেমাই–চিনির বাজারে। বরাবরের মতোই ঈদের ঠিক আগমুহূর্তে বেড়ে গেছে সেমাই–চিনি এবং গুঁড়া দুধের দাম। এছাড়া গতকাল থেকে দাম বেড়েছে পেঁয়াজের বাজারেও। পাইকারী ও খুচরা উভয় পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চাহিদার তুলনায় কিছু কিছু পণ্যের সরবরাহ কমার কারণে দাম বাড়তি। তবে ঈদে অতিথি আপ্যায়নের অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম বাড়ায় ভোক্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। ভোক্তাদের দাবি, যথেষ্ট পরিমাণ ভোগ্যপণ্য আমদানি হওয়ার পরেও দাম বাড়ার বিষয়টি ব্যবসায়ীদের কারসাজি ছাড়া কিছুই নয়। প্রশাসনের উচিত বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে এসব পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখা।
গতকাল নগরীর কাজীর দেউড়ি এবং ২ নং গেট কর্ণফুলী কমপ্লেক্সের মুদি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি কেজি বাংলা লাল সেমাই সপ্তাহখানেক আগে বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। বর্তমানে সেটি ৫ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। এছাড়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোড়কজাত লাচ্ছা সেমাই (২০০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকায়। অন্যদিকে কিসমিস প্রতি কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়। এছাড়া চিনি কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকায়।
অপরদিকে ডানো এবং মার্কস ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধ ৫০০ গ্রামের প্যাকেট ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৪১০ থেকে ৪৫০ টাকায়। বিভিন্ন ব্রান্ডের ঘি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে মানভেদে প্রতি কেজি এক হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। এছাড়া সাদা মটরের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। চীনা বাদাম কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা এবং বড় সাইজের প্রতিটি নারিকেল বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৩ টাকায়। ২ নং গেট এলাকার খুচরা বিক্রেতা মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে ঈদের কিছু অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম বাড়তি। আমরা পাইকারী বাজার থেকে অল্প অল্প করে বিক্রি করি। পাইকারী বাজারে দাম কমলেও আমরাও কমিয়ে দিই।
বেসরকারি চাকরিজীবী আবু তৈয়ব বলেন, প্রতি বছর ঈদের আগে বাজার চাহিদাকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। অথচ আমরা পেপার পত্রিকায় পড়ে আসছি, এ বছর পর্যাপ্ত ভোগ্যপণ্য আমদানি হয়েছে। পর্যাপ্ত যদি ভোগ্যপণ্য আমদানি হয়, তবে দাম বাড়ার তো কোনো কারণ দেখছি না। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ঠিকই দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এতে সাধারণ ভোক্তাদের পকেট কাটা যাচ্ছে। আমরা তাই প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করবো, যাতে বাজার মনিটরিং করে সেমাই চিনির বাজার যাতে স্থিতিশীল রাখা হয়।