দল ঐক্যবদ্ধ, বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা নয়

মহানগর আওয়ামী লীগের সভায় মাহতাব।। একুশের কারণেই আমরা বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছি : নাছির

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৭:২৬ পূর্বাহ্ণ

মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি বাতিলের দাবিতে নগরীতে যিনি বা যারা ব্যানার লাগিয়েছেন, তাদের উদ্দেশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল আছেন, ডা. আফছারুল আমীন আছেন, নুরুল ইসলাম বিএসসি আছেন, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী আছেন, খোরশেদ আলম সুজন আছেন, নঈম উদ্দিন চৌধুরী আছেন; তারাও কি অযোগ্য? আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করেছি। দল ঐক্যবদ্ধভাবে চলছে। বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করবেন না। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার থিয়েটার ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে আলোচনা সভার আয়োজন করে মহানগর আওয়ামী লীগ; সেখানে সভাপতির বক্তব্য প্রদানকালে তিনি একথা বলেন।
মাহতাব বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর শক্তি ও প্রেরণা যুগিয়ে গেছে। এই ইতিহাস ও শিক্ষা ধারণ করে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তবে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করা সমীচীন হবে না। যদি তা করি সেটা হবে আত্মঘাতী। লক্ষ্য করা যাচ্ছে, এখন অনেকের মধ্যে নিজেকে যোগ্য হিসেবে জাহির করার একটি প্রবণতা মাথাচাড়া দিয়েছে। সঙ্গত কারণেই বলতে পারি আমরা যারা আছি তারা কি অযোগ্য? কারো যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে সেটা দলের নীতিমালা অনুযায়ী আমাদের এবং দলীয় হাই কমান্ডকে অবগত করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, নেত্রী আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন। যোগ্যতার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। যদি অযোগ্য হই প্রয়োজনে পদত্যাগ করবো। যারা নেতৃত্বে আসতে চান, আসেন। কিন্তু ষড়যন্ত্র করবেন না। সাবধান হয়ে যান।
বক্তব্যে এম এ আজিজ, জহুর আহমেদ চৌধুরী, ইসহাক মিয়া, মানিক চৌধুরীদের স্মরণ করেন মাহতাব। তিনি বলেন, এই দলে একসময় তারা ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। তারা ছিলেন দুঃসময়ে দলের কাণ্ডারী। তাদের একসময় এই নগরীর পথে-ঘাটে মুসলিম লীগের গুণ্ডাপান্ডারা শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে। তাদের প্রেতাত্মারা (মুসলীম লীগ) যদি দলে ঢুকে ফায়দা লুটে বিভেদ ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে-তা কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না।
বক্তব্যে নিজের পরিবার সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন মাহতাব। তিনি বলেন, আমি একটা সম্মানি পরিবারের ছেলে। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ছেলে, শহীদ পরিবারের ছেলে। আমি কোন দিকে খাটো সেটা আমাকে বলেন। আমি মনে করি যোগ্যতার মাপকাঠিতে আমার সমকক্ষ কেউ নেই। আমি শুধু বলবো-এটা যারাই করুক তাদের মধ্যে শুভবোধের উদয় হোক। দলীয় নেতৃত্ব নিয়ে প্রতিযোগিতা থাকলেও নেতাকর্মীদের একে অপরের চরিত্র হনন না করার আহ্বান জানান তিনি।
সভায় আরো বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তিনি বলেন, মহান একুশের পথ ধরে স্বাধীনতাসহ সব ধরনের বড় বড় অর্জন আমরা লাভ করতে পেরেছি। একুশ আমাদের চেতনাকে শাণিত করে বলে আমরা বারবার ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় যে সম্মান ও উচ্চতায় পৌঁছেছে, তা মহান একুশের ধারাবাহিকতার অংশ।
তিনি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হলেও আমাদের নতুন প্রজন্মের একটি বৃহৎ অংশ মাতৃভাষা বিমুখ। মধ্যবিত্ত ও বিত্তবান শ্রেণির পরিবারের অনেক সন্তানই জানে না একুশ কী? কারণ আমরা অভিভাবকরাই সন্তানকে ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করাতে উদগ্রীব হয়ে থাকি। তিনি সবাইকে মাতৃভাষা বাংলার প্রতি সচেতন হতে আহ্বান জানান।
প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় সভার শুরুতে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে সহ-সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী, সাবেক চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, নির্বাহী সদস্য আবুল মুনছুর, ইঞ্জিনিয়ার বিজয় কৃষাণ চৌধুরী, অধ্যক্ষ আসলাম হোসেন, মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, দিলদার খান দিলু, কাউন্সিলর শহিদুল আলম, জহর লাল হাজারী, অধ্যাপক মো. ইসমাইল ও আব্দুল মান্নান বক্তব্য দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সফর আলী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, হাজী জহুর আহমদ, মাহাবুবুল হক মিয়া, দিদারুল আমল চৌধুরী, আব্দুল আহাদ, আবু তাহের, ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, গাজী শফিউল আজিম, সৈয়দ আমিনুল হক, পেয়ার মোহাম্মদ, জাফর আলম চৌধুরী ও সাইফুদ্দীন খালেদ বাহার। আরো উপস্থিত ছিলেন ফিরোজ আহমেদ, হাজী সিদ্দিক আলম, মো. ইলিয়াছ, মো. মাঈনুদ্দীন, আবুল হাসেম বাবুল, আব্দুল হান্নান, আবুল কাসেম, শামসুল আলম, সৈয়দ মোহাম্মদ জাকারিয়া, নাজিম উদ্দীন চৌধুরী, হাসান মুরাদ, আতিকুর রহমান প্রমুখ। শেষে বাংলাদেশ টেলিভিশনের শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসরকার পতনের ভাবনা বিএনপির আকাশ কুসুম কল্পনা : কাদের
পরবর্তী নিবন্ধগল্পগুলো কান্না আর সংগ্রামের