দলের কঠিন সময়ে যারা থাকেন তারা মূল্যায়িত হবেন

তারেক সোলেমান সেলিমের শোকসভায় হানিফ।। ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে প্রতিহত করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৪ অক্টোবর, ২০২১ at ৭:৫৪ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, শান্তি-সমপ্রীতি এবং অগ্রগতি রক্ষায় যে শুভযাত্রায় আমাদের নেত্রী নিবেদিত হয়েছেন তাকে বানচাল করার জন্য একটি অপশক্তি জেগে উঠেছে। তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। আমরা ধর্ম পরায়ন হতে চায়, ধর্মান্ধ নয়। ধর্মান্ধ বারবার মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করে, সেটা বারবার প্রমাণিত হয়েছে। আসুন আমরা আমাদের হাজার বছরের বাঙালির যে চিরায়ত লোকজ ঐতিহ্য সেটার জাগরণ তৈরী করি। ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে প্রতিহত করে এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। গতকাল শনিবার বিকেলে কাজীর দেউড়িস্থ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) সাবেক কাউন্সিলর তারেক সোলেমান সেলিমের নাগরিক শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আজকে আমরা এমন এক ধর্মান্ধের মধ্যে চলে এসেছি সেটা কাটিয়ে উঠার জন্য আমাদের তরুণ সমাজ, যুব সমাজ, ছাত্র সামাজকে শিক্ষা দিতে হবে। আমরা যার যার ধর্ম পালন করতে চায়। আমাদের মহানবী (সা.) অন্য ধর্মের প্রতি সম্মান দিতে বলে গেছেন। অন্যের ধর্মের প্রতি আঘাত করার কথা কোথাও লেখা নেই। আসুন আমরা আমাদের সমাজের মধ্যে পরিবর্তন আনি। প্রত্যেকের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই।
ধর্মের ভালো দিকগুলো তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা আমাদের ইসলামি বক্তা আছেন তাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে ধর্মের ভালো দিকগুলো আপনারা ওয়াজ মাহফিলের মধ্যে তুলে ধরুন। কিন্তু ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে সাম্প্রদায়িকতার দিকে ঠেলে দিয়ে আমাদের ধর্মকে মানুষের কাছে বির্তকিত করবেন না।
হানিফ আরো বলেন, একজন ব্যক্তি যদি পরপর চার চার বার কাউন্সিলর নির্বাচত হন তাহলে বুঝতে আর বাকি থাকে না, তিনি কতো জনপ্রিয় কাউন্সিলর ছিলেন। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি ও তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। তারেক সোলেমান সেলিম চট্টগ্রামে মহানগর আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত প্রাণ ব্যক্তিত্ব। তিনি ছোটবেলা থেকেই অসামপ্রদায়িক রাজনৈতিক চর্চা করেছেন। সেই পথ ধরে নতুন প্রজন্মকে জাগিয়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় আছি। কিন্তু কঠিন সময় অতিক্রম করছি। মনে রাখতে হবে ব্যক্তির চাইতে দল বড়, দলের চাইতে দেশ বড়। দেশটা আমাদের। তাই কে আমরা বড় হব এই প্রতিযোগিতা বাদ দিয়ে নিজের অস্তিত্বের জায়গাটুকু সুদৃঢ় করতে হবে। দলের কঠিন সময়ে যারা থাকেন তারা মূল্যায়িত হবেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু বলেন, সেলিম ভাই আপাদমস্তক একজন সংগঠন। কঠিন সমস্যার সমাধান দিতেন এক মিনিটেই। চট্টগ্রামের মানুষ সেলিম ভাইকে ভুলতে পারেনি। সেলিম ভাই চট্টগ্রামের মানুষের মাঝে আজীবন বেঁচে থাকুক। সেলিম ভাইয়েরা যে নীতি আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করে গেছেন। আমরা সকলে যেন সে পথে যাই। সে প্রত্যাশা করি। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু কখনো ধর্মনিরপক্ষতা নিয়ে আপোষ করেননি। মৌলবাদের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে আপনারা সকলে তারেক সেলেমান সেলিমের ভূমিকা পালন করেন। তারেক সোলেমানের অনুসারিরা যেনো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হই।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, তারেক সোলেমান সেলিম কখনো রাজনীতিকে বিজনেস সেন্টার হিসেবে নেননি। রাজনীতিকে তিনি নিয়েছিলেন বিজ্ঞান হিসেবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হিসেবে। তারেক সোলেমান সেলিম চট্টগ্রামের মানুষের অন্তরে সারাজীবন বেঁচে থাকবেন।
নাগরিক শোকসভা কমিটির আহ্বায়ক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জামশেদুল আলম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত নাগরিক শোকসভা কমিটির আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এম.পি, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন, প্রয়াত তারেক সোলেমান সেলিমের বাল্যবন্ধু প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক কবি বিশ্বজিৎ চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক জালাল উদ্দিন ইকবাল, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল হক রাসেল, চসিক কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, নুরুল আমিন কালু, আতাউল্লাহ চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাদেক হোসেন পাপ্পু, মরহুম তারেক সোলেমান সেলিমের সন্তান মোহাইমিন তারেক রাতুল প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধথামছে না আমদানির স্ক্র্যাপ লুট
পরবর্তী নিবন্ধথমথমে ক্যাম্প, নির্বাক রোহিঙ্গারা