দলিল জালিয়াতি মামলায় পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান কারাগারে

পেকুয়া প্রতিনিধি | রবিবার , ৩১ অক্টোবর, ২০২১ at ১০:০৬ অপরাহ্ণ

দলিল জালিয়াতি মামলায় পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

আজ রবিবার (৩১ অক্টোবর) একটি দলিল জালিয়তি মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গেলে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব কুমার দাশ।

জাহাঙ্গীর আলমের আইনজীবী ও মামলার বাদীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৪ আগস্ট পেকুয়া উপজেলার শেখেরকিল্লাহঘোনা এলাকার মৃত হাজি আবদুল হাকিমের কন্যা শাকেরা বেগম বাদী হয়ে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের ৪ ভাই বোনের নামে একটি জাল দলিল সৃজন করার অভিযোগে একই এলাকার অধিবাসী রমিজ আহমদের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।

আদালত মামলাটি কক্সবাজার সিআইডিতে তদন্তের জন্য পাঠালে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাইফুল ইসলাম নির্ধারিত সময়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

এ প্রেক্ষিতে আদালত আসামিকে সমন জারি করলে আসামি আদালতে হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করা হয়। পরে জাহাঙ্গীর আলম উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। উচ্চ আদালতের বেধে দেয়া সময় শেষে আজ আদালতে হাজির হলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।

মামলার এজাহার সূত্র ও মামলার বাদী শাকেরা বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম তার ৪ ভাই-বোনকে দাতা ও নিজেকে গ্রহীতা সাজিয়ে তাদের নামীয় পেকুয়া মৌজার বিএস ৩১৪ খতিয়ানের ১৯০২ দাগ ও বিএস ৩১৫ নং খতিয়ানের ১৯০৮ ও ১৯১১ নং দাগের ২০ শতক জমি একটি জাল দলিল সৃজন করে আত্মসাত করেন। এমনকি ওই দলিল দিয়ে নিজ নামে খতিয়ান সৃজন করে তা অপর ৪ ব্যক্তিকে বিক্রিও করে দেন।

তিনি বলেন, “ক্রেতারা আমাদের ওই জমি জমি দখলে আসলে আমরা বিষয়টি জানতে পেরে আদালতের আশ্রয় নেই। সর্বশেষ উক্ত মামলায় আদালত মামলার একমাত্র আসামিকে আজ জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।”

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিগত ১৫-১০-১৯৯৬ সালে পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের ছোটভাই বাপ্পি বিএস-১৫নং খতিয়ান থেকে ৪০৮৪নং দলিলমূলে মামলার বাদী শাকেরা বেগম ও তার ভাই আবুল কালামের কাছ থেকে ১২ শতক জমি ক্রয় করেন কিন্তু বিপত্তিটা হচ্ছে ওই একই তারিখ ও একই দলিল নম্বর দিয়ে বাদী শাকেরা বেগম সহ তার বোন আনোয়ারা বেগম, লায়লা বেগম, ভাই আবুল কালামকে দাতা ও নিজেকে গ্রহীতা সাজিয়ে পেকুয়া মৌজার বিএস ৩১৪ খতিয়ানের ১৯০২ দাগ ও বিএস ৩১৫নং খতিয়ানের ১৯০৮ ও ১৯১১নং দাগের ২০ শতক জমির একটি জাল দলিল সৃজন করেন জাহাঙ্গীর আলম।

এ বিষয়ে শাকেরা বেগম বাদী হয়ে ২৪-০৮-২০২০ তারিখে আদালতে সিআর মামলা নং ৫৯২/২০ দায়ের করলে তদন্তে দলিলটি জাল বিবেচিত হওয়ায় আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাঙ্গুনিয়ায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার আফিম সহ যুবক গ্রেফতার
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারকে অচল করে দেওয়ার হুমকি