দরপত্র মূল্যায়ন করছে এনবিআর

বন্দরে নতুন চারটি কন্টেনার স্ক্যানার

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১২ অক্টোবর, ২০২১ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরে আগের পাঁচটি ফিক্সড কন্টেনার স্ক্যানারের সাথে নতুন আরো ৪টি স্ক্যানার যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সেই লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের চারটিসহ বেনাপোল এবং ভোমরার জন্য একটি করে মোট ৬টি আন্তর্জাতিক দরপত্রের আহ্বান করা হয়। এনবিআরের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলছেন, কয়েকটি দেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সাড়া পাওয়া গেছে। যেসব দরপত্র জমা পড়েছে বর্তমানে সেগুলোর মূল্যায়ন কার্যক্রম চলছে। মূল্যায়ন শেষে দক্ষ প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হবে।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ৫টি ফিক্সড কন্টেনার এবং দুটি মোবাইল স্ক্যানারে চলছে বন্দরের কার্যক্রম। বন্দরের ৪ নম্বর, ৫ নম্বর এবং সিসিটি-২ টার্মিনালে স্থাপিত তিনটি ফিক্সড স্ক্যানার আগে থেকেই ছিল। সর্বশেষ গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বন্দরের এক নম্বর গেট এবং নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনালের (এনসিটি) তিন নম্বর গেটে স্থাপন করা হয় আরো দুটি ফিক্সড কন্টেনার স্ক্যানার। এছাড়া সিসিটি ২ ও জিসিবি ২ নম্বর গেটে রয়েছে মোবাইল স্ক্যানার।
আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা জানান, আমদানি পণ্য স্ক্যানিং করে খালাস করা হলে কোনো আমদানিকারক এক পণ্য এনে অন্য পণ্য ঘোষণা দিয়ে বিদেশে অর্থপাচার করতে পারবেন না। আবার বেশি দামের পণ্য এনে কম দামের পণ্য হিসেবে অথবা উচ্চ শুল্ককরের পণ্য আমদানি করে বিনা শুল্ক অথবা কম শুল্কের পণ্য হিসেবে ছাড় করাতে পারবেন না। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ার পাশাপাশি অর্থ পাচারও কমবে। অস্ত্র, গোলাবরুদ কিংবা বিস্ফোরক জাতীয় দ্রব্য এনে কেউ খালাস করতে পারবেন না।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম পোর্ট ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন প্রকল্পের আওতায় অঘোষিত ও বিস্ফোরক জাতীয় পণ্য আমদানির পাশাপাশি নিরাপত্তা ঝুঁকি কমাতে ২০০৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে স্ক্যানিং বাধ্যতামূলক করা হয়।
বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, প্রতি বছর কাস্টম ডে এলে বন্দরের ১২টি গেটের প্রতিটিতে কন্টেনার স্ক্যানার স্থাপন করার কথা বলা হয়। এটি শুনে আসছি অনেক বছর ধরে। কিন্তু বাস্তবে এখনো ৭ গেটে স্ক্যানার নেই। প্রতিটি গেটে স্ক্যানার থাকলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, স্ক্যানার কেনা এবং স্থাপনের পুরো কাজটি এনবিআর দেখভাল করে। এবারও চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য চারটিসহ মোট ৬টি স্ক্যানারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর আগে গত বছর দুটি আধুনিক প্রযুক্তির ফিঙড কন্টেনার স্ক্যানার বসানো হয়। আধুনিক প্রযুক্তির স্ক্যানারগুলো এঙ-রে বা গামা-রশ্মি ইমেজিং প্রক্রিয়ায় কন্টেনার খোলা ছাড়াই এর ভেতরের রঙিন ছবি তুলতে পারবে। এসব মেশিনে স্ক্যানার ছাড়াও কন্টেনারের ওজন পরিমাপ, রেডিও পোর্টাল মনিটর এবং ইমেজিং সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত থাকে। নতুন স্ক্যানারগুলো ‘বোথ ওয়ে’ স্ক্যান ডিরেকশনে স্ক্যানিং করতে সক্ষম। অর্থাৎ আমদানি ও রপ্তানি উভয় কন্টেনার এইসব মেশিনে স্ক্যান করা যায়।
জানতে চাইলে এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (কাস্টমস মডারাইজেশন অ্যান্ড প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট) ইমাম গাজ্জালী দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য ৪টি, বেনাপোল এবং ভোমরার জন্য একটি করে মোট ৬টি ফিঙড কন্টেনার কিনতে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। ইতোমধ্যে বেশ ক’টি দেশ থেকে সাড়া পাওয়া গেছে। আমরা সেইসব দরপত্র এখন মূল্যায়ন করছি। মূল্যায়ন শেষে শিগগিরই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজেল রোড থেকে ৫ প্রতারক গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধজামিন শেষে ভোলার আত্মসমর্পণ