থানচিতে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ব্যাপক গোলাগুলি

বাজারসহ আশপাশের এলাকা জনশূন্য

বান্দরবান প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৫ এপ্রিল, ২০২৪ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবানের থানচিতে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। এতে থানচি বাজারসহ আশপাশের এলাকা জনশূন্য হয়ে পড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানায়, রাত আটটার দিকে দুই শতাধিক পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফের) অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী থানচি বাজার ঘেরাও করে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করে। সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মধ্যে নারী কেএনএফের সংখ্যায় বেশি ছিল। এ সময় কেএনএফ থানচি থানায় হামলা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলি শুরু হয়। উভয়ের মধ্যে থেমে থেমে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে রাত দশটা পর্যন্ত। কেএনএফ থানচি থানার অস্ত্র লুট করতেই হামলা চালিয়েছিল। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাল্টা প্রতিরোধে পালিয়ে যায় কেএনএফ সন্ত্রাসীরা।

থানচি বাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জসিম জানান, কেএনএফ পুরো থানচি বাজার দখল করে নেয়। গোলাগুলির শব্দে প্রাণ বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছি। বাজার এলাকায় কোনো লোকজন নেই। বৃষ্টির মতো গুলির শব্দ শোনা গেছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জসিম উদ্দিন জানান, থানচি পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। বিস্তারিত এ মুহূর্তে বলতে পারছি না।

বিডিনিউজ জানান, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নূরে আলম মিনা বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে পৌনে ১০টা পর্যন্ত এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তিনি আরও বলেন, থানচি থানার দক্ষিণে এবং পূর্বে পাহাড় আছে। দক্ষিণ দিকের পাহাড় থেকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফাঁকা গুলি শুরু হয়। কারা গুলি ছুড়েছে প্রশ্ন করলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা বলছি, তারা সন্ত্রসী। বাজারে আমাদের ফোর্স মোতায়েন ছিল। তারাও পাল্টা ফায়ার করেছে। থানা থেকেও ফায়ার করেছে। কিছু সময় গোলাগুলি চলার পর সব বন্ধ হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক।

ঘটনার ভয়াবহতা বর্ণনা করে থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন মোবাইলে বলেন, রাত ৯টার দিকে একদল সশস্ত্র লোক এসে থানচি বাজারে গুলি শুরু করে। পরে তারা থানায় গুলি চালায়। পুলিশ আর বিজিবিও পাল্টা গুলি করে। হাসপাতালের পেছন দিকেও গুলি হয়। পরিস্থিতিটা আসলে এরকমই।

ঢাকা থেকে বান্দরবানের থানচিতে একটি ব্যক্তিগত কাজে গিয়েছিলেন এক পর্যটক। তিনি বলেন, রাতে আমরা তিনজন একটি হোটেলে খেতে বসেছিলাম। ঠিত তখনি বৃষ্টির মত গোলাগুলি শুরু হয়। আমরা খাবার ফেলে একটি দোকানে এসে লাইট বন্ধ করে বসে থাকি। প্রচুর গুলি হয়। আমাদের সঙ্গে স্থানীয় আরও কয়েকজনও এই ঘরে আটকা পড়েন। বিষয়টি নিয়ে রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, থানচিতে গোলাগুলির বিষয়টি আমরা জেনেছি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে আমরা কাজ করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাহে রমজানের সওগাত
পরবর্তী নিবন্ধলোহাগাড়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেল পাথর বোঝাই ট্রাক