থমকে আছে কাস্টমসের এডিআর কার্যক্রম

নানা উদ্যোগেও মিলছে না সুফল

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৩০ জুন, ২০২২ at ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমসে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) শাখার কার্যক্রমে গতি আনতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরও সুফল মিলছে না। এক্ষেত্রে আমদানিকারকদের ছাড় না দেয়ার মানসিকতাকেই দায়ী করছেন কাস্টমসের কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এডিআর কার্যক্রম চালু রাখতে হলে কাস্টমস ও আমদানিকারক উভয় পক্ষকে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। তাহলেই কেবল এডিআর কার্যক্রম গতি পাবে। এডিআরের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি হলে কাস্টমস ও আমদানিকারক উভয়পক্ষ লাভবান হবে।

কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, এডিআরের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির জন্য গত তিন বছরে একটি মাত্র আবেদন জমা পড়েছে। তবে সেটি আইনগত কারণে এডিআরে নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। কারণ মামলাটি ছিল এইচএস কোড সংক্রান্ত। এডিআর শাখা মূলত কাজ করে ভ্যালু নিয়ে। এছাড়া এডিআরে আর কোনো মামলার নিষ্পত্তির আবেদন জমা পড়েনি। বর্তমানে চট্টগ্রাম কাস্টমসে প্রায় ৯ হাজারের কাছাকাছি মামলা রয়েছে।

এডিআর শাখা সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে এডিআরে আবেদন জমা পড়ে ১০২টি, বিপরীতে নিষ্পত্তি হয় ৯১টি। এর মাধ্যমে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এছাড়া ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে এডিআরের কোনো কার্যক্রম ছিল না। সর্বশেষ গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এডিআরে আবেদন জমা পড়ে ২৪টি, এরমধ্যে নিষ্পত্তি হয় ২১টি। এসব মামলা থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৪ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত কাস্টমসে আবেদন জমা পড়েছে ১২৬টি। নিষ্পত্তি হয়েছে ১১২টি মামলা এবং নিষ্পত্তিকৃত মামলা থেকে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ২৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এছাড়া বাকি ১৪টি নিষ্পত্তি হয়নি।

এডিআর শাখার কর্মকর্তারা জানান, উচ্চ আদালত ও কাস্টমসের আপিল ট্রাইব্যুনালে দীর্ঘদিন থেকে নিষ্পন্ন না হওয়া অবস্থায় রাজস্ব সংক্রান্ত মামলা এডিআরের মাধ্যমে নিষ্পত্তির জন্য উদ্যোগ নেয় এনবিআর। সেই লক্ষ্যে গত ২০১২ সালের ১ মার্চ থেকে কাযক্রমটি শুরু হয়। তবে বিশ্ব ব্যাংকের বেসরকারি খাতে সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) সহযোগিতায় ২০১২ সালের ১ জুলাই থেকে এডিআর পদ্ধতিটি গতি পায়। এ পদ্ধতিতে আদালতের বাহিরে আমদানিকারক এবং কাস্টমসের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে একজন নিরপেক্ষ সহায়তাকারীর মাধ্যমে দ্রুত সময়ে মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করে থাকে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এডিআর শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-কমিশনার সুমন চাকমা দৈনিক আজাদীকে বলেন, এডিআরের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি করতে আমরা বিভিন্ন সময় আমদানিকারকদের উদ্বুব্ধ করেছি। কারণ বছরের পর বছর মামলা ঝুলে থাকার কারণে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এখন কোনো আমদানিকারক যদি আসতে না চায়, আমরা তো তাদের জোর করতে পারি না। এডিআরে মামলা নিষ্পত্তি হলে কাস্টমস ও আমদানিকারক উভয়পক্ষেরই সুবিধা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচিরকুট লিখে প্রধান শিক্ষকের আত্মহত্যা
পরবর্তী নিবন্ধঠেলে ঠেলে গাড়ি পার