ভুলে যাচ্ছি কি না জানি না কেবল মনে হচ্ছে মুখটা যেন ধীরে ধীরে অতি সন্তর্পণে অস্পষ্ট হয়ে আসছে। এই কথাটা কি আজীবন সত্যি যে চোখের আড়াল মানেই অন্তরের আড়াল? কিন্তু তুমিতো আমার মনের আড়াল হওনি এখনো? আমি তোমার মুখটা আজকাল কেমন যেন দেখতে পাই না। কিন্তু তোমার গন্ধটা বড্ড তীব্র হয়ে এসে ছুঁয়ে দেয় ঘ্রাণেন্দ্রীয়। আচ্ছা সবকিছু হারিয়ে যায় কিন্তু সুবাস কি বল আমৃত্যু বাতাসেই ভেসে বেড়ায়? আর আকাঙ্ক্ষাটা? ঐ যে তোমায় ছোঁবার? একটুখানি স্পর্শ করবার? ঐটুকুও কেমন যেন জীবন্ত। তবে কি তুমি বেঁচে থাকবে ওখানেই। আমার চাওয়ার মাঝে? আমার তীব্র প্রতীক্ষার মাঝে? আমার আকাঙ্ক্ষার মাঝে ?
আচ্ছা, তবে প্রতীক্ষাটা কিসের? তোমার স্মৃতিতে প্রতিনিয়ত যত্নের আবরণ দেয়া? বাঁচিয়ে রাখা এভাবেই? তুমিতো আসবে না ফিরে? আসবে কি? বড্ড এলোমেলো হচ্ছে লেখাটা। বৃষ্টি বড় কষ্ট দেয় আমায়। বেশ ক ‘দিন হলো বৃষ্টির কোনো থামাথামি নেই। অবিরাম ঝরছেতো ঝরছেই। আমার সবকিছু এলোমেলো লাগছে। আমি চেষ্টা করছি এবার শ্রাবণে আর ভাববো না, ভাববো না তোমার কথা। কিন্তু তোমার কি একটাই কাজ ছিলো অদ্ভুত সব স্মৃতিগুলো তৈরী করে আমার ভেতর একটা তুমিকে আশ্রয় দেয়া ?
মা ,
তোমার মনে পড়ে বৃষ্টির জল নিয়ে আমাদের ভুলতে না পারার মতন স্মৃতি কোনটা?
তোমার ঐ সুন্দর সাদা দেশে কি বাদামী রঙের চা পাওয়া যায়? ওখানেও কি বৃষ্টি হয়? অঝোরে বৃষ্টি হলে তুমি কি এক কাপ চা নিয়ে কোথাও বস? তোমার কি মনে পড়ে শ্রাবণে আমাদের একমাত্র খেলা? বৃষ্টির জল জমিয়ে স্নান আর বৃষ্টি হলেই বানানো এক কাপ অদ্ভুত চা?
তোমার মনে পড়ে মা ?
নিশ্চয়ই মনে পড়ে না।
পড়লে তুমি ঠিক আসতে। অন্তত এই অঝোর শ্রাবণে?
দুষ্টুমী ভরা এক কাপ বৃষ্টি জলের চা খেতে তুমি নিশ্চয়ই আসতে মা ?
লেখক : কবি, সংবাদ পাঠক, আবৃত্তিশিল্পী