তেল চুরির সময় আটক চসিকের টেক্সি চালক বরখাস্ত

তদন্ত কমিটি, মামলার সিদ্ধান্ত

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৪ আগস্ট, ২০২২ at ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

তেল চুরির সময় হাতেনাতে আটক চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) এক সিএনজি টেক্সি চালককে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার নাম মো. জালাল। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ঘটনায় এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার সাগরিকায় সিটি কর্পোরেশনের পাম্প থেকে তেল নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা আটক করেন জালালকে। এ সময় তল্লাশি চালিয়ে তার গাড়ি থেকে ১২০ লিটার ডিজেল জব্দ করেন। সেখানে দায়িত্ব পালনকারী পাম্প অপারেটরের সহায়তায় এসব ডিজেল বাইরে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এ ঘটনায় যান্ত্রিক শাখার ঊর্ধ্বতনেরও যোগসাজশ থাকার অভিযোগ আছে।
সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার জালালকে বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া পুরো বিষয়টি তদন্ত করতে এবং তেল চুরির উৎস খুঁজে বের করতে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলামকে দিয়ে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন চসিকের সচিব খালেদ মাহমুদ। তিনি বলেন, মেয়র মহোদয়ের নির্দেশে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে সাগরিকা পেট্রোল পাম্পের তদারকের দায়িত্বে আছেন যান্ত্রিক শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী মির্জা ফজলুল কাদের। গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে পেট্রোল পাম্প থেকে ৭২ লিটার ডিজেল চুরির সময় ধরা পড়েন মো. হোসেন নামে চসিকের এক চালক। মোবারক হোসেন নামে চসিকের পাম্প অপারেটর তাকে স্লিপ ছাড়া তেল ইস্যু করেন। আটকের পর থানায় খবর দেয়া হয়। তবে পুলিশ পৌঁছার আগেই তাদের কৌশলে পালিয়ে যেতে সেখানে কর্মরতরা সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় অভিযোগ ওঠে মির্জা ফজলুল কাদেরের বিরুদ্ধে। তবে পরে যিনি চোর আটক করেন তাকেই শোকজ করা হয়েছিল।

সর্বশেষ গতকাল আটক তেল চোরকে বরখাস্তের বিষয়ে জানতে একাধিকবার কল ও এসএমএস দিলেও রিসিভ করেননি মির্জা ফজলুল কাদের। যান্ত্রিক শাখার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আকবর আলীও কল রিসিভ করেননি।
এদিকে বিভিন্ন সময়ে জ্বালানি তেল চুরির কয়েকটি ঘটনা পর্যালোচনায় জানা গেছে, গত বছরের ৫ মে হালিশহর থেকে তিন হাজার লিটার ডিজেল বোঝাই ট্রাকসহ দুই চোরাই কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছিল র‌্যাব। ধৃতরা চসিকের গার্বেজ স্টেশন এলাকায় চোরাই তেলের গ্যারেজ বানিয়েছিল। সেখানে তারা চসিকের ময়লাবাহী গাড়ি থেকে তেল কিনে মজুদ করত। অবশ্য অন্য গাড়ি থেকেও তেল কিনত। ওই সময় ধৃতদের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, চোরাই তেলের শতকরা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ আসত চসিকের গাড়ি থেকে।
২০২০ সালের ৭ আগস্ট চসিক পরিচালিত একটি অ্যাম্বুলেন্স থেকে তেল চুরির বেশ কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে কাজলচন্দ্র সেন নামে ওই চালককে বরখাস্ত করা হয়। এর আগে ২০১৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রাতে চুরি করে তেল বিক্রির সময় আবর্জনাবাহী এক গাড়ির চালক ও চোরাই তেল ক্রেতাকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছিলেন চসিকের দুই কাউন্সিলর। ধৃতরা হচ্ছেন গাড়ি চালক বজলুল রহমান ও ক্রেতা শাহ জামান। তাদের বিরুদ্ধে চসিক পুল সহকারী জামশেদ বাদী হয়ে পাহাড়তলী থানায় একটি মামলাও দায়ের করেছেন। চসিক ওই গাড়ি চালক বজলুল রহমানকে চাকুরিচ্যুত করে। এছাড়া ২০০৭ সালে তেল চুরির ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ২০১৭ সালে চসিকের দুই চালকসহ তিনজনকে কারাদণ্ড দিয়েছিল আদালত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহোল্ডিং ট্যাক্স আইন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামছে সুরক্ষা পরিষদ
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে অপহরণের পর শিক্ষিকাকে গণধর্ষণ