দীর্ঘ ৯ বছর পর চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে তৃণমূল পর্যায়ে প্রতিটি ইউনিয়নে যুবলীগের সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি দেয়া হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে ইউনিয়ন যুবলীগের সম্মেলনকে ঘিরে পুরো কর্ণফুলী উপজেলার পাশাপাশি শাহ আমানত ব্রিজ থেকে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের মইজ্জ্যারটেক পর্যন্ত উভয়পাশ বড় বড় বিল বোর্ড ও ব্যানার–ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে।
উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের মধ্যে চরপাথরঘাটা ও জুলধা ইউনিয়নের সম্মেলন শেষে কমিটি দেওয়া হয়েছে। বাকি রয়েছে তিন ইউনিয়ন শিকলবাহা, বড়উঠান ও চরলক্ষ্যা। এর মধ্যে দুই ইউনিয়নের সম্মেলন শেষ। কিন্তু কমিটি হয়নি। গতকাল (২৭ মে) চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে উপজেলার একটি কমিউনিটি সেন্টারে। এতে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি দিদারুল ইসলাম চৌধুরী। প্রধান অতিথি ছিলেন কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরী ও সম্মানিত অতিথি ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান তালুকদার। প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল ইসলাম জহুর। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সহ–সভাপতি জি এম আনু মিয়া। সঞ্চালনা করেন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেবরাজ রতন, ওয়াজ উদ্দিন আজাদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলমগীর বাদশা। বিভিন্ন পদ প্রত্যাশীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কর্ণফুলী উপজেলার বাকি তিন ইউনিয়নে সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক পদে নেতা হতে লড়ছেন মোট ৫৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে সভাপতি হতে চান ২৬ জন, সাধারণ সম্পাদক হতে ৩১ জন এবং উভয় পদে ৬ প্রার্থী জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। কেউ কাউকে ছাড় না দেওয়ায় পদপ্রত্যাশীরা পদ দুটোর নেতৃত্বে আসতে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে জমা দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এতে চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন যুবলীগে সম্ভাব্য সভাপতি পদে প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন– মনজুরুল হক, মো. ওমর ফারুক বিজয়, মো. সাইদুল ইসলাম, এ এম বাহা উদ্দিন, মো. লোকমান হাকিম, মোহাম্মদ মনির উদ্দিন মুন্না, মো. হাসান মুরাদ ও মো. সেকান্দর মির্জা। সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন মো. জাহাঙ্গীর আলম জাবেদ, মো. জাকারিয়া, মো. সালাউদ্দিন টিপু, মো. জয়নাল আবেদীন, মো. তসলিম, মো. আলমগীর আলম, মো. মহসিন। এছাড়াও মো. সেকান্দর মির্জা, মো. ওমর ফারুক বিজয়, মো. হাসান মুরাদ ও মনজুরুল হক সম্পাদক পদেও প্রার্থী হয়েছেন।
শিকলবাহা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি পদে আগ্রহী হয়েছেন মোহাম্মদ আলমগীর কবির, মোহাম্মদ আবদুল আলিম, মো. ওয়াহিদ আদনান মুন্না, সেলিম উদ্দিন সানী, মোহাম্মদ ইদ্রিচ হোসেন, মো. আব্দুর রহিম লোকমান, মো. জাহাঙ্গীর আলম, আবদুল্লাহ আল মামুন, মোহাম্মদ রফিক ও এম এ রহিম। সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহী নুরুল হুদা সোহেল, আবদুল করিম মঞ্জু, মো. জসিম, মো. আমিন, আবদুল খালেক জুয়েল, আজগর টিপু, মো. শফি তালুকদার, মো. লোকমান হাকিম, মো. মোক্তার হোসেন, মুমিন তালুকদার। এছাড়াও সেলিম উদ্দিন সানী ও এম এ রহিম সম্পাদক পদেও প্রার্থী হয়েছেন।
বড়উঠান ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন বাহাদুর খান, মুহাম্মদ মহিউদ্দিন, শেখ মো. আব্দুল হান্নান, মুহাম্মদ আলমগীর, মুহাম্মদ ইলিয়াছ মেম্বার, মো. আব্দুর রহিম চৌধুরী, মো. মহিউদ্দিন রানা ও মো. আনিছ উদ্দিন। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন ইনামুল হোসেন, মো. পারভেজ ইসলাম টিটু, আবদুল করিম, মুহাম্মদ ফোরকান, মুহাম্মদ আজগর আলী, মুহাম্মদ খোরশেদ উল্লাহ চৌধুরী, মুহাম্মদ সাজ্জাদ খান সুমন ও মো. শাহাদাত হোসাইন রিটন।
তিন ইউনিয়ন কমিটি কেমন হবে জানতে চাইলে কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সেলিম হক বলেন, আসলে এ ব্যাপারে মন্ত্রী মহোদয় ও জেলা কমিটির সাথে পরামর্শ করে যারা ছাত্রলীগ করে রাজপথে ছিল তাদেরকেই মূল্যায়ন করা হবে। বিতর্কিত কেউ কমিটিতে স্থান পাবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বিতর্কিত কাউকে কমিটিতে স্থান না দেয়ার চেষ্টা করব। এখানে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে ঘায়েল করা জন্য নানান ধরনের বিতর্ক ছড়ান–বদনাম ছড়ান। আবার রাজনীতি যারা করে তাদের দোষও বেশি, কারণ কমিটি করতে গেলে আমাদের বিভিন্ন নেতাদের তদবির রাখতে হয়। তারপরও চেষ্টা করব যাতে বিতর্কিত কেউ কমিটিতে স্থান না পায়।
