তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, এখন জুন–জুলাই মাস গাছ লাগানোর উপযোগী সময়, প্রত্যেকে তিনটি করে গাছ লাগাবেন। যেখানে জায়গা আছে সেখানেই গাছ লাগাতে হবে। আর কেউ যাতে অকারণে গাছ না কাটে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন, সকলে একটি করে ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ লাগানোর জন্য। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাঙ্গুনিয়ায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের আয়োজনে বন অধিদপ্তরের টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের উপকারভোগী এবং বন্যহাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত ও নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা অডিটোরিয়ামে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বনবিভাগ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর সহব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বন রক্ষার উদ্যোগ নেন। সহব্যবস্থাপনায় বনসম্পদ বৃদ্ধির পর সেই টাকার লভ্যাংশ স্থানীয় যারা সহব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত ছিল তাদের মাঝে ভাগ করে দেয়ার এই পদ্ধতি চালু করেছে সরকার। এসব আগে ছিল না, জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর এসব চালু করেছে। আ.লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে উপকারভোগী হিসেবে বনবিভাগের নানা লভ্যাংশ পাচ্ছে মানুষ।
তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আমাকে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী। পরবর্তীতে পাঁচ বছর বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় সম্পর্কীত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলাম। মূলত এই কার্যক্রমগুলো তখনই শুরু করা হয়। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে ৩৭৭ জন বনবিভাগের উপকারভোগীদের কাছে ২৫ হাজার ২০০ টাকা করে ৯৫ লাখ টাকারও বেশি টাকার চেক হস্তান্তর করা হচ্ছে। সরকারের বন বিভাগের পক্ষ থেকে বনব্যবস্থাপনার আওতায় এই টাকাটা হস্তান্তর করা হচ্ছে। গাছ লাগালেও যে সেটি টাকায় রূপান্তরিত হয় তার প্রমাণ হলো এটি। এসব আগে ছিলো না। এসব আওয়ামী লীগ সরকার চালু করেছে, শেখ হাসিনা চালু করেছে।
তিনি বলেন, আমরা পাহাড়ের মানুষ, আমরা বন রক্ষা করি বলেই সরকারের এসব সুবিধা পাচ্ছি। রাঙ্গুনিয়ার আরও সাড়ে ৪ শত মানুষ এই সুবিধা পাবে। সুতরাং সবাইকে অনুরোধ জানাবো এই জুন–জুলাই মাসে সবাই যতটুকু সম্ভব গাছ লাগাবেন। আর কেউ যেনো বনের সম্পদ নষ্ট না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে ও বনরেঞ্জ কর্মকর্তা নাহিদ হাসান ও আশরাফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বজন কুমার তালুকদার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউল গণি ওসমানী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বন্য হাতির দ্বারা নিহত একটি পরিবারকে নগদ ৩ লাখ টাকা, বন্য হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্থ ২৭ জনকে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং সুফল প্রকল্পের এফসিভির সদস্য ৩৭৭ জনকে মোট ৯৫ লাখ ৪০০ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় যোগ দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি। সেখানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি সাংগঠনিক নানা নির্দেশনা দেন।