দিনের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। গতকাল মঙ্গলবার রাতে পরিবর্তিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক–২) এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী এই নির্দেশনা প্রদান করেন। এদিকে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে স্কুল–কলেজের মতো প্রাথমিক বিদ্যালয়ও বন্ধ থাকবে। কোনো জেলার তাপমাত্রা যদি ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামে, সেইক্ষেত্রে সেই জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। খবর বাসসের।
মাউশির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলমান এই শৈত্যপ্রবাহে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এই কারণে শৈত্যপ্রবাহে দেশের যেসব জেলায় দিনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে (সংশ্লিষ্ট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়ার পূর্বাভাসের প্রমাণ অনুযায়ী) নামবে, সে সকল জেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হবে।
এদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বিদ্যালয়–২) মোহাম্মদ কবির উদ্দীন এক অফিস আদেশে বলেন, যেসব জেলায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে (আবহাওয়ার পূর্বাভাসের প্রমাণক অনুযায়ী) নেমে যাবে, সে সব জেলার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় উপ–পরিচালকরা সংশ্লিষ্ট জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শীতের তীব্রতা ও স্থানীয় বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশনা প্রদান করতে পারবেন (সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তদুর্ধ না হওয়া পর্যন্ত)।
বিডিনিউজের খবরে বলা হয়, তীব্র শীতের মধ্যে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে স্কুল বন্ধের নির্দেশনা দিতে গিয়ে তাপমাত্রার হিসাবে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর–মাউশি। গতকাল বিকালে মাউশির এক অফিস আদেশে বলা হয়, যেসব জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর নিচে নেমে যাবে (সংশ্লিষ্ট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়ার পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী) আঞ্চলিক উপপরিচালকরা ওইসব জেলার শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেবেন।
নির্দেশনাটি ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, রংপুর, বরিশাল, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের মাউশির আঞ্চলিক উপপরিচালকদের পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আড়াই ঘণ্টা পর মাউশির সেই সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আসে। ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নতুন আদেশে বলা হয়, যেসব জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে (আবহাওয়ার পূর্বাভাসের প্রমাণক অনুযায়ী) নেমে যাবে, আঞ্চলিক উপপরিচালকরা ওইসব জেলার শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেবেন।
এদিকে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সর্বশেষ কবে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমেছিল জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানালেন, বাংলাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে কখনও রেকর্ড করা হয়েছে বলে তার জানা নেই। তিনি বলেন, দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কত, সেই হিসাব ধরে তারা আবহাওয়া পর্যালোচনা করেন। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলিসয়াসের উপরে উঠলে তাকে তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে তাকে বলা হয় শৈত্যপ্রবাহ। এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তখন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাইনাসেও চলে যেতে পারে। সেরকম পরিস্থিতি আমাদের এখানে হয়নি।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয় , পরে বিষয়টি নিয়ে রাত সাড়ে আটটার দিকে দ্বিতীয় দফা সংশোধনী দেয় মাউশি। এতে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কথাটি বাদ দেওয়া হয়। বলা হয়, দিনের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে নামলে আলোচনার মাধ্যমে স্কুল বন্ধ রাখা যাবে।