“মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে / মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই”।— কবিগুরুর মতো এ ইচ্ছা আজ আমাদের সকলের। মানুষ মৃত্যুকে যখন খুব কাছে থেকে অবলোকন করে, তখনই বুঝতে পারে এই সুন্দর পৃথিবীর অকৃত্রিম রূপের কদর। বেঁচে থাকার সকল প্রচেষ্টা তখন অব্যাহত থাকে।
কোভিড-১৯। নামটা শুনলেই আতঙ্কিত হয়ে উঠে মানুষ। গত বছর জুড়ে পুরো বিশ্বকে নিঃস্ব ও নিস্তব্ধ করে দিয়েছে এই প্রাণঘাতী ব্যাধি। ধনী – গরিব, ছোট – বড় নির্বিশেষে অকাতরে প্রাণ দিয়েছে। পুঁজিবাদ, গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র, আমলাতন্ত্র কিছুই ধোবে টেকেনি। সকল শ্রেণি, সকল দেশ ছিলো অসহায়। বিধাতার সৃষ্টি এই সুন্দর পৃথিবী যেন ধ্বংস হয়ে যাবার উপক্রম। শুধু নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে আপন স্বজনদেরও মানুষ অবজ্ঞা করেছে, সরিয়ে রেখেছে দূরে। ‘ করোনা’- নামক এই রোগ মানুষে – মানুষে দূরত্ব সৃষ্টি করে দিয়েছে।
মনে হয় মানুষকে অসামাজিক করার পরিকল্পনা করেই রোগটি আবির্ভূত হয়েছিল। স্রষ্টা যেমনি কেড়ে নেন,তেমনি আবার উজাড় করেও দেন। কেননা পূর্ববর্তী মহামারীগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, মহামারী নির্মূল করার জন্য যে ওষুধ বা টিকা বের হয়ে ছিল তা দীর্ঘ বছরের প্রচেষ্টার ফল। কিন্তু এবারের মহামারী লক্ষ প্রাণ নিলেও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে বিজ্ঞানীরা প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে, মেধার বিকাশ ঘটিয়ে মানুষকে বাঁচানোর জন্য খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আবিষ্কার করে ফেললেন ব্যাধিনাশক ভ্যাকসিন। বিশ্বজুড়ে এই ভ্যাকসিন নিয়ে অনেক কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি হলেও সফল হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। একটু বাঁচার আশায় মানুষ নিতে শুরু করেছে এই ভ্যাকসিন। দেশ- বিদেশের গণ্ডি পেরিয়ে আজ আমাদের দেশের প্রধান প্রধান হাসপাতালে পৌঁছে গেছে বেঁচে থাকার এই মহৌষধ। যদিও এই সুব্যবস্থার জন্য আমরা দেশবাসীরা কৃতজ্ঞ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাছে। আজ সকল শ্রেণির মানুষ ভ্যাকসিন নিতে উদগ্রীব। সাহসের সাথে ভ্যাকসিন নিচ্ছে একটু সুস্থ থাকার আশায়। সুন্দর ও নির্মল পৃথিবীতে প্রাণভরে শ্বাস নেয়ার প্রত্যয়ে। আমরা চাই সবাই ভালো ও সুস্থ থাকুক। ইতিহাসের এই নির্মম অধ্যায়ের যেন আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে।