নাশকতা ও সহিংসতা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হার্ডলাইনে থাকবে বলে ঘোষণা দিলেও থেমে নেই নাশকতা। একের পর এক বাস–ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করেই চলেছে দুর্বৃত্তরা। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার ভোরে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকায় ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি ট্রাকে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফলে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এত কড়া নিরাপত্তা বলয়ের মাঝেও কীভাবে বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে?
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, চোরাগোপ্তা হামলা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি এসব ঘটনায় জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। একইসঙ্গে পুলিশের টহল আরও জোরদারের কথা বলছেন তারা।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার আ.স.ম. মাহতাবউদ্দিন বলেন, অবরোধকে কেন্দ্র করে কেউ যেন নাশকতা করতে না পারে আমরা সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোসহ বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামবাসীর নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে নাশকতা ও সহিংসতা ঠেকাতে পুলিশের পাশাপাশি মাঠে আছে র্যাব, বিজিবি ও বিপুল পরিমাণ আনসার।
সিএমপির সূত্র বলছে, নগরীর প্রবেশমুখসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) জানিয়েছে, গোয়েন্দা নজরদারি কার্যক্রম চলমান থাকবে। কেউ যদি কোনো ধরনের নাশকতা কিংবা সহিংসতার পরিকল্পনা করে, সঙ্গে সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাবের স্পেশাল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স রিজার্ভ রাখা হয়েছে। নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে র্যাবের ফোর্স সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে। এ বিষয়ে সারা দেশে র্যাবের সব ব্যাটালিয়নকে গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি টহল জোরদারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক শহীদুল হক বলেন, নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের পক্ষে সম্ভব নয়। তাদেরও সীমাবদ্ধতা আছে। তারপরও সহিংসতা ঠেকাতে পুলিশ যথেষ্ট সক্রিয় রয়েছে। তাদের শিফটিং ডিউটিও বাড়িয়েছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, চোরাগোপ্তা হামলাসহ যানবাহনে অগ্নিসংযোগ হচ্ছে। দেখা গেছে, যে স্থানটি নিরাপদ মনে হচ্ছে, সেখানে এসব বেশি হচ্ছে।
তিনি বলেন, নাশকতার ঘটনা মোকাবিলা করতে হলে পুলিশের পাশাপাশি জনসাধারণকেও সতর্ক থাকতে হবে। যেসব এলাকায় ঘটনা ঘটছে, সেসব এলাকার লোকজন অ্যালার্ট থাকলে মোকাবিলা করা সম্ভব।