মীরসরাইয়ে মাটি কাটা বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে প্রতিটি স্পটে। তবুও চলছে পাহাড়ের মাটি ও টপ সয়েল চুরি। প্রশাসন দিনে গিয়ে বন্ধ করে এলে রাতের অন্ধকারে শুরু হয় মাটি চুরি। রাতে অভিযান চালালে আবার দিনের আলোতেও শুরু হয় মাটি লুট। অনেক স্থানে পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করা হয়। সেই রাস্তা দিয়ে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে বিক্রি করতে। কোথাও রাস্তা ভরাট করতে কেউবা নিয়ে যাচ্ছে ইট ভাটায়। পরিবেশ ও প্রশাসন কেউ যেন পারছে না থামাতে এসব সিন্ডিকেটকে।
বিভিন্ন এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১নং করেরহাট থেকে ১৬নং সাহেরখালির প্রায় ২০টি পয়েন্টে চলছে এই মাটিখেকো সিন্ডিকেটের দাপট। করেরহাটের ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন নাহার এগ্রোর পেছনের পাহাড়ি টিলা, নয়টিলার পার্শ্ববর্তী সংলগ্ন কৃষি জমি থেকে টপ সয়েল নিয়ে পাশের ব্রিক ফিল্ডেই দেয়ার সময় গত ১০ মার্চ মীরসরাইয়ের সহকারী কমিশনার ভূমি সুবল চাকমা অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় তিনি ২টি স্কেভেটরসহ দুই মালিককে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন। আবার মীরসরাই সদরের রেল স্টেশনের পূর্ব পাশে তালবাড়িয়া গ্রামের পাহাড় কেটে ইতিমধ্যে কয়েকটি পুকুরের মতো করে ফেলেছে সিন্ডিকেট। এছাড়া দক্ষিণ আমবাড়িয়ায়, ওচমানপুরে দিনের পর দিন জমির টপ সয়েল, মস্তাননগরে পাহাড় কেটে ব্রিক ফিল্ডে মাটি দেওয়া হচ্ছে।
করেরহাটে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক বলেন, গত বছর আমার পাশের জমির মাটি কিনে নিয়েছিল একটি সিন্ডকেট। সেই জমিতে মাটি কাটার পর নিচু হয়ে যায় আমার জমি। অন্যদের সমান না করলে শুকনো মৌসুম ও বর্ষায় ফসল ফলাতে বেকায়দায় পড়বো। তাই আমি তাদের কাছে মাটি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। মাটিখেকোরা এবার আমার জমি আরো নিচু করে ফেলে, পাশের জমি আমার সমান করতে তাদের আরো নিচু করতে হচ্ছে। আর এভাবে কৃষকদের জিম্মি করে মাটি নিচ্ছে এই সিন্ডিকেট।
এ বিষয়ে মীরসরাইয়ের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিনহাজুর রহমান বলেন, ইতিমধ্যে যেখানেই মাটিকাটার অভিযোগ পাচ্ছি সেখানেই আমরা অভিযান চালাচ্ছি। তাৎক্ষণিক জরিমানা ও স্কেভেটর, ট্রাক সব জব্দ করা হচ্ছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে অন্যদের অপরাধের তথ্য দিচ্ছে ওরা পরস্পর এলাকার প্রতিপক্ষ। তবে প্রশাসন থেমে নেই, যাদের তথ্যই হোক অপরাধ যেখানেই হচ্ছে সেখানেই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এবিষয়ে এসিল্যান্ড সুবল চাকমা বলেন, যে কেউ অবৈধ মাটি কাটার খবর দিলেই আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। গত কয়েক সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিনই অভিযান, আটক ও জরিমানা করা হয়েছে। আগামীতে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।