তপন সিংহ : বাংলা চলচ্চিত্রের ত্রাণকর্তা

| রবিবার , ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৫:২৩ পূর্বাহ্ণ

তপন সিংহ। একজন বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক। পাঁচ-এর দশকে যে সমস্ত বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালকের হাতে বাংলা ছবি প্রাণ ফিরে পায়, তাদের মধ্যে অন্যতম তপন সিংহ।

১৯২৪ সালের ২ অক্টোবর বীরভূম জেলার মুরারই থানার জাজিগ্রামের প্রসিদ্ধ সিংহ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতোকত্তর করার পর তিনি ১৯৪৬ সালে নিউ থিয়েটার্স স্টুডিওতে সহকারী শব্দগ্রহণকারী হিসাবে যোগ দেন। অভিনেত্রী অরুন্ধতী দেবী তার পত্নী ছিলেন।
গতানুগতিক প্রেম-ভালোবাসা-ধর্মীয় বিষয়ের একঘেয়েমি থেকে মুক্ত হয়ে তার আবির্ভাবে বাংলা সিনেমা হয়ে ওঠে গীতিকবিতার মতন চিত্রধর্মী এবং মানবাবেগে ভরপুর এক শিল্পকলা। তার প্রতিটি কালজয়ী ছবির দর্শক হয়ে উঠলেন সব রকম মানুষ সাধারণ আর বিশিষ্ট সকলেই।

আর্ট-এর ক্ষেত্রে এবং বঙ অফিসের মেলবন্ধনে তিনি প্রমাণ করলেন আপন অনন্য প্রতিভা। তৃতীয় ছবি ‘কাবুলিওয়ালা’ থেকেই তার সাফল্যের সূচনা। রাষ্ট্রপতি পুরস্কার থেকে বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার তপন সিংহ বিখ্যাত হয়ে ওঠেন উপমহাদেশজুড়ে। রবীন্দ্রনাথ এবং সমসাময়িক অন্যান্য সাহিত্যিকের গল্প উপন্যাস অবলম্বনে তিনি ছবি তৈরি করেছেন। বাঙালি দর্শক সম্পর্কে তিনি উচ্ছ্বসিত।

তাঁর মতে- ‘সারা পৃথিবীতে দর্শক হিসেবে বাঙালি দর্শকই শ্রেষ্ঠ। সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা, ছবির প্রতি ভালোবাসা, নাটকের প্রতি ভালোবাসা, আর কোনো দেশের দর্শকের মধ্যে খুঁজে পাবেন কি না সন্দেহ’। তপন সিংহ পরিচালিত বিখ্যাত বাংলা ছবিগুলির মধ্যে রয়েছে ‘কাবুলিওয়ালা’ (১৯৫৭), ‘লৌহকপাট’ (১৯৫৮), ‘ক্ষুধিত পাষাণ’ (১৯৬০), ‘ঝিন্দের বন্দি’ (১৯৬১), ‘হাঁসুলি বাঁকের উপকথা’ (১৯৬২), ‘নির্জন সৈকতে’ (১৯৬৩), ‘অতিথি’ (১৯৬৫), ‘সাগিনা মাহাতো’ (১৯৭০), সবুজ দ্বীপের রাজা’ (১৯৭৯), ‘অন্তর্ধান’ (১৯৯২) ইত্যাদি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন অনেক। ২০০৬ সালে তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মান দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পান। তিনি ২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারী মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধনিঝুমদ্বীপে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর সেবা নিশ্চিত করা হোক