ঢাকায় ধর্ষণের বিচার দাবিতে গণপদযাত্রায় পুলিশের লাঠিচার্জ

| বুধবার , ১২ মার্চ, ২০২৫ at ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ

ধর্ষণকাণ্ডের বিচার ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে গণপদযাত্রায় লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এতে আন্দোলনকারীদের পাল্টাপাল্টি মারধরে রমনা থানার এসিসহ দুপক্ষের অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩ টা ১০ নাগাদ রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে রয়েছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠক সাজেদুল ইসলাম, শাকিল আহমেদ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী অং মারমা, ওহী। পুলিশের রমনা থানার এসিসহ অন্তত ৩ জন আহত হয়েছেন। এর আগে দেশে অব্যাহত খুন, ধর্ষণ ও নিপীড়নের ব্যর্থতার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ এবং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দেশের সকল ধর্ষণকাণ্ডের বিচারের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে গণপদযাত্রা এবং স্মারকলিপি প্রধান কর্মসূচি শুরু করে বামপন্থি ছাত্রসংগঠনের একাধিক নেতাকর্মী। খবর বাংলানিউজের।

পদযাত্রাটি বিকেল আড়াইটা নাগাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়। পরে শাহবাগ হয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে আসলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। মিছিলে তারা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলমের পদত্যাগ চেয়ে একাধিক স্লোগান দেন। লাঠিচার্জের পর এই নেতাকর্মীরা আধঘণ্টা ধরে পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি করেন এবং হামলার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে তারা মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে ফিরে আসেন।

লাঠিচার্জের পর ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে দাঁড়িয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অদৃতা রয় বলেন, মিছিলের সামনের সারিতে নারীরা ছিল। এখানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীরের পুলিশ বাহিনী হামলা চালিয়েছে। রমজান মাসে আমাদের নারীদের পোশাক ছেড়া হয়েছে। লাঠিচার্জ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ব্যর্থ পুলিশের সাথে কোনো আপস করব না। এখন আর ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ নেই। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে গণআন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ নেই। আমরা অনেক সময় দিয়েছি, আর সময় দেওয়ার সুযোগ নেই। আন্দোলনকারী সীমা আক্তার বলেন, পুলিশ কোনো কথা না বলেই আমাদের সাথে ধাক্কাধাক্কি করে। পরে তারা টার্গেট করে অংকে মারধর করে। মারধরের পর তারা আলোচনার জন্য ডাকে। আমরা এর প্রতিবাদে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় মশাল মিছিল করব।

ঘটনাস্থলে থাকা রমনা জোনের ডিসি মাসুদ আলম বলেন, তারা পদযাত্রা করার কথা বলেছেন, আমরা প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে তারা বাসভবনের দিকে ঢুকে যাওয়ায় আমরা বাধা দিই এবং বলি আপনাদের কোনো বক্তব্য থাকলে পাঁচজন প্রতিনিধি পাঠান। এতে তাদের একটা পক্ষ রাজি হলেও আরেকটা পক্ষ ব্যারিকেড ভাঙতে শুরু করে, আমাদের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তি হচ্ছিল। আমরা কোনোভাবেই লাঠিচার্জ করিনি।

তিনি বলেন, আমাদের রমনা থানার এসিকে তারা ব্যাপক আকারে পিটিয়েছে। তার জামা ছিঁড়ে গেছে। আমাদের কিন্তু হাতে লাঠি ছিল না। আমরা টিয়ারশেল, সাউন্ডগ্রেনেড কিছুই ছুড়িনি। এ অবস্থায়ও তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করি। কিন্তু তারপরও আমাদের সাত আটজন আহত হয়েছে। কয়েকজন বেশ গুরুতর আহত হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাঙামাটিতে প্রসবের সময় মা হাতির মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধপাকিস্তানে ট্রেন হাইজ্যাক, ১৮২ যাত্রী পণবন্দি