ওমিক্রন নিয়ে বিশ্ব জুড়ে উদ্বেগের মধ্যে ব্রিটেনে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে দৈনিক কোভিড সংক্রমণ। শুক্রবার রেকর্ড ভেঙে দৈনিক সংক্রমণ ৯৩ হাজার ছাড়িয়েছে। ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ছুঁয়েছে ২৫ হাজার। এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, ওমিক্রন ডেল্টা রূপের চেয়ে কম ক্ষতিকারক, এই দাবির সপক্ষে এখনো কোনো প্রমাণ মেলেনি। দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার পর ইতিমধ্যে তা বিশ্বের শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এই প্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞরা একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন, কার জোর বেশি, ডেল্টা না ওমিক্রনের?
বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ দাবি করেছে, ওমিক্রন তার পূর্বসূরি ডেল্টার মতো অতটা ক্ষতিকর নয়। তবে তার মানে ওমিক্রন নিরীহ নয়। করোনার এই নতুন রূপের এমন কিছু বিরল শক্তি আছে যা ডেল্টার ছিল না।
লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের বিশেষজ্ঞরা সমপ্রতি এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন। ১ লাখ ২০ হাজার ডেল্টা আক্রান্ত এবং ১৫ হাজার সন্দেহভাজন ওমিক্রন আক্রান্তের তথ্য পাশাপাশি রেখে ওই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নজরে রাখা হয়েছে হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক হাজারেরও বেশি ডেল্টা রোগী ও ২৪ জন ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীর শারীরিক অবস্থা। দুই রূপের তুলনামূলক বিচার করে ইম্পিরিয়াল কলেজের বিশেষজ্ঞদের দাবি, ডেল্টা রোগীদের মতো ওমিক্রন আক্রান্তদের শরীরেও দেখা যায় উপসর্গ। তাদেরও হাসপাতালে ভর্তি করানো জরুরি।
ওই রিপোর্টের অন্যতম লেখক অধ্যাপক আজরা গনি বলেন, এই হারে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলে ভবিষ্যতে প্রচুর রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। তার দাবি, গত শীতে ব্রিটেনে কোভিডে যত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, এই শীতের পরিসংখ্যান তাকে ছাপিয়ে যেতে পারে। দিনে হাজারেরও বেশি কোভিড রোগীর মৃত্যু হতে পারে ব্রিটেনে।
ইম্পেরিয়াল কলেজের রিপোর্ট বলছে, যারা অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুটি টিকা নিয়েছেন, তারা ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে গুরুতর উপসর্গের সম্ভাবনা ২০ শতাংশ কমতে পারে। যারা ফাইজারের দুটি টিকা পেয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে গুরুতরভাবে রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ কমতে পারে। বুস্টার টিকা নিলে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা ৮৫ শতাংশ কমতে পারে। বুস্টার টিকা নেয়ার ৬০ দিনের মাথায় কেউ ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে ৯০ শতাংশ কমতে পারে মৃতুুর সম্ভাবনা।