আমরা নানান কারণে মন খারাপ করি। প্রিয় অপ্রিয় কথা, আচরণ মনে করে কষ্ট পাই।এই কষ্ট গুলো জমে ভেতরে বিষ্ফোরণ হয়।তৈরী হয় নেতিবাচক চিন্তা, যা মানুষকে ডিপ্রেশনের দিকে চালিত করে।এটা হয়নি কেন? ওটা পাইনি কেন? ওই বন্ধু এমন করে বললো কেন? এতো কষ্ট করি বাচ্চা স্বামী খুশি নয় কেন? এইসব চিন্তা করতে করতে রাতের ঘুম হারাম হয়। আমরা ডাক্তারের শরণাপন্ন হই। ডাক্তার ওষুধ দেয়। যে ওষুধ আমাদের হরমোনে এমন প্রতিক্রিয়া করে যে হরমোন গ্রন্থিগুলো আনন্দ তৈরি করে। শরীরে যে আনন্দ প্রশান্তি দেয়।এই ম্যাজিক হরমোন টির নাম ডোপামিন যা ওষুধ খেলে তৈরি হয়। পাশাপাশি আমাদের কিছু কাজ, অনুভব, কৃতজ্ঞতা বোধ নিজে নিজেই আমাদের ভেতরে একটা আনন্দ অনুভূতির জন্মদেয়। যা আমাদের কে সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। এই প্রশান্তি পেতে আমরা বারবার ডাক্তারের কাছে ছুটি।কিন্তু নিজে এই প্রক্রিয়া থেকে বের হবার চেষ্টা করিনা। মনোবিজ্ঞানীরা কিন্তু ওষুধের পাশাপাশি কিছু মানসিক চর্চার কথা বলেন যা আমরা করিনা। দ্রুত ওষুধের মাধ্যমে রেহাই পেতে চাই। ডিপ্রেশন, রাতে ঘুম না হওয়া, নানান দুঃচিন্তা যা আমাদের কর্মবিমুখ করে, আনন্দ বিমুখ করে।আর যার প্রভাব আমার শিশু আর অন্য সদস্যদের আক্রান্ত করে। ডিপ্রেশন থেকে বের হতে একটা ছোটখাটো যুদ্ধ জরুরি। আর রাস্তা একটাই। নিজেকে প্রশ্ন করুন আর বের হওয়ার চেষ্টা করুন, এই উদ্বেগের কারণগুলো চিহ্নিত করুন।
নিজের মধ্যেই তৈরি করতে হবে প্রতিরক্ষার দেয়াল। খুঁজে বের করতে হবে আনন্দের উৎসগুলো। এরজন্য আমাদের কিছু কাজ করতে হবে। *সামান্য বিষয়েও নিজের প্রশংসা বা সন্তুষ্টি *রান্নাটা খুবই ভালো হয়েছে *আয়না আজ সন্তুষ্ট কারণ আমার শাড়িটা, জামাটা সুন্দর, আমাকে বেশ মানিয়েছে। * ইশ্ আজ নিরাপদে রাস্তা পার হতে পেরেছি। এগুলো আপাতদৃষ্টিতে খুবই সাধারণ কিন্তু আসলে অসাধারণ পদক্ষেপ। চর্চা করে দেখুন। ও হ্যাঁ সময়সুযোগ পেলেই অন্যের প্রশংসা করুন।
পারতপক্ষে কারো ভুলের দিকে নজর দিবেন না।এটাও একটা প্র্যাকটিস সাপেক্ষ বিষয়। চেষ্টা করি ডিপ্রেশন থেকে বের হওয়ার, আরামসে একটা ঘুমের জন্য। পরিচ্ছন্ন থাকি, প্রিয় সুগন্ধিতে আপ্লুত থাকি, চমৎকার একটা শাওয়ার নিশ্চিত করি।
সৌন্দর্য বর্ধক হালকা ইওগা করি, রূপচর্চা (পরচর্চার চেয়ে উত্তম)করি। নিজের চারপাশে একটা ইতিবাচক বা পজেটিভ বলয় তৈরি করি। নির্মল সৌন্দর্যে অন্যকে প্রশান্তি দেই, আকৃষ্ট করি। মেডিটেশন শান্তি দেয়। চেষ্টা করি মেডিটেশন করতে ঘুমের সময়ে। সুগন্ধি ক্যান্ডাল কে বন্ধু বানিয়ে ফেলুন। রাতের খাবার আর ঘুমানোর মধ্যে দুই তিন ঘন্টার ব্যবধান রাখুন। এটা ম্যানডিটরি। অন্তত চেষ্টা করি ডিপ্রেশনকে ঝেটিয়ে বিদায় করতে।নিজে ভালো না থাকলে অন্যকে দেওয়ার মতো কোন নির্যাস থাকেনা। যা আমার নেই তা অন্য কে কোথা থেকে দিবো। আসুন নিজের ভালো থাকি। প্রিয়জনকে ভালো রাখি।