চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘ সময় পড়ে থাকা কংক্রিট মিক্সার লরি ও কেমিক্যালসহ বিভিন্ন ধরনের ৪১ লট পণ্য নিলামে তুলেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। বিডাররা (নিলামে অংশগ্রহণকারী) এসব পণ্য কিনতে চাইলে কাস্টমসের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে দরপত্র দাখিল করতে করতে পারবেন। অনলাইনে দরপত্র দাখিল করা যাবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টা পর্যন্ত। গত ২৮ আগস্ট থেকে দরপত্র দাখিল শুরু হয়। এছাড়া পণ্য প্রদর্শনের সময় ধরা হয়েছিল ২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, নিলামে তোলা হয়েছে চীনের তৈরি ২০২২ মডেলের সাদা–লাল রঙের ১০ চাকা বিশিষ্ট একটি কংক্রিট মিক্সার লরি গাড়ি। গাড়িটি চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি হয় গত ২০২৩ সালে। চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ গাড়িটির সংরক্ষিত দাম ধরেছে ৭৫ লাখ ৯১ হাজার ৪৯১ টাকা। এছাড়া নিলামে তোলা হয়েছে– ডিজিটাল এক্স–রে মেশিন, চিনগুড়া সুগন্ধি চাল, মেরিন ডিজেল ইঞ্জিন, বিভিন্ন ধরণের ফেব্রিক্স, লিকুইড প্যারাফিন, ডুপ্লেক্স বোর্ড, ডোলামাইটস লাম্পস, চেস্ট ফ্রিজার, ক্লোরিনস সিলিন্ডার, লুব অয়েল, পোল্ট্রি প্লান্টের ক্যাপিটাল মেশিনারি, স্ক্র্যাপ অ্যালমুনিয়াম ও এসএস পাইপ ফিটিং।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের বিডাররা বলছেন, কাস্টমসে অনেক পণ্যের নিলামে তোলা হয়, দেখা যায়–নিলামে অনুষ্ঠিত হওয়ার পরে অনুমোদনের খবর থাকে না। এতে বিডারদের পে অর্ডার আটকে থাকে। এছাড়া যথাসময়ে পণ্যের অনুমোদন না হওয়ায় বিডারদেরও ভোগান্তি হয়। তাই বিষয়টি কাস্টমস নিলাম শাখা সংশ্লিষ্টদের নজর দেয়া উচিত। জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখার সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেনার ইয়ার্ড খালি করার লক্ষ্যে আমরা নিয়মিত নিলামের আয়োজন করছি। এছাড়া বিশেষ করে যেসব পণ্য পচনশীল সেগুলো আমরা প্রকাশ্য নিলামে বিক্রির মাধ্যমে ইয়ার্ড খালি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সেই ধারাবাহিকতায় এখন আরো ৪১ লট পণ্য নিলামে তোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে আমদানিকারককে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেয়ায় বন্দরগুলোতে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষও চার্জ পায় না।