‘ডাকাত’ বলে সামশু মাঝির ট্রলারে হামলা করে ওরা

বাঁশখালীর দুজনের জবানবন্দি

কক্সবাজার প্রতিনিধি | সোমবার , ১ মে, ২০২৩ at ৯:২৩ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারে বঙ্গোপসাগরে ডুবে যাওয়া একটি ট্রলার থেকে ১০ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বাঁশখালীর ফজল কাদের মাঝি ও আবু তৈয়ুব মাঝি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তিন দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কক্সবাজার সদরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গ্যার আদালতে হাজির করা হলে তারা ২ জন জবানবন্দি প্রদান করেন।

২৫ এপ্রিল র‌্যাবের একটি দল বাঁশখালীর কুদুকখালী থেকে ওই এলাকার মৃত সিরাজুল হকের ছেলে ফজল কাদের মাঝি (৩০) ও শামসুল আলমের ছেলে আবু তৈয়ব মাঝিকে (৩২) বঙ্গোপসাগরে মরদেহ উদ্ধারের মামলায় আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছিল। এরপর আদালতের নির্দেশে ২৭ এপ্রিল তাদের ৩ দিনের রিমান্ডে আনা হয়। রিমান্ড শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক দুর্জয় বিশ্বাস ২ জনকে আদালতে হাজির করেন। পরিদর্শক দুর্জয় বিশ্বাস জানান, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ২ জন আসামি ঘটনার ব্যাপারে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়। এর প্রেক্ষিতে তাদেরকে কক্সবাজার সদরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গ্যার আদালতে উপস্থাপন করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, রিমান্ডে এই ২ আসামি স্বীকার করেছেন যে, ৯ এপ্রিল সাগরে ৭/৮টি ট্রলারের লোক মিলে সামশু মাঝির ট্রলারটিকে ঘিরে ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে মারতে দেখেছেন। যারা মারধর করছিলেন তারা সকলেই মহেশখালী মানুষ। এরা বাঁশখালীর বাসিন্দা। ফলে এই দুজন ঘটনাস্থল থেকে বাঁশখালী চলে গিয়েছিলেন।

এদিকে এ মামলায় গত ২৫ এপ্রিল চকরিয়া উপজেলার বদরখালী এলাকা থেকে গিয়াস উদ্দিন মুনির (৩২) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। মুনির বদরখালী এলাকায় মো. নুর নবীর ছেলে। গতকাল দুপরে কক্সবাজার সদরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গ্যা এ আসামির ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। মুনিরকে যে কোনো সময় রিমান্ডের জন্য পুলিশ নিয়ে যাবে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুর্জয়। তিনি জানান, আদালতের আদেশে মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি মাতারবাড়ির এলাকার ট্রলার মালিক বাইট্টা কামাল ও ৪ নম্বর আসামি ট্রলার মাঝি করিম সিকদারের ৫ দিনের রিমান্ড রোববার শেষ হচ্ছে। সোমবার (আজ) যে কোনো সময় ওই ২ জনকেও আদালতে প্রেরণ করা হবে।

উল্লেখ্য, বঙ্গোপসাগরে ডুবে যাওয়া একটি ট্রলার থেকে গত ২৩ এপ্রিল ১০ জনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার হয়। নিহতদের মধ্যে ছয়জনের লাশ শনাক্ত করেছেন তাদের স্বজনেরা। বাকি চার লাশের পরিচয় শনাক্তের জন্য ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় ২৫ এপ্রিল ৪ জনের নাম উল্লেখসহ ৬৪ জনকে আসামি করে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করেন নিহত ট্রলার মালিক সামশুল আলমের স্ত্রী রোকেয়া বেগম। এই মামলায় এ পর্যন্ত ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপরীক্ষা চলাকালীন শিক্ষার্থী অসুস্থ, হাসপাতাল থেকে আসার পর সময় শেষ
পরবর্তী নিবন্ধদীঘিনালায় বিপন্ন প্রজাতির লজ্জাবতী বানর উদ্ধার