অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন সেক্টরে পণ্য পরিবহনের প্রধান মাধ্যম লাইটারেজ জাহাজের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) অনুরোধে ‘না’ করে দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। অননুমোদিত ভলগেট চলাচল এবং ডব্লিউটিসির সিরিয়ালের বাইরের জাহাজে পণ্য বোঝাই বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করা হলে বন্দর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তাদের এক্তিয়ারাধীন নয় বলে জানিয়েছে। এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন সেক্টরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। লাইটারেজ জাহাজ মালিকরা বলছেন, বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘না’ অননুমোদিত ভলগেট চলাচল উৎসাহিত করবে। আর বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বিষয়টিতে নাক গলানো অনধিকার চর্চা হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আমদানিকৃত ৫ কোটি টনের বেশি পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে মাদার ভ্যাসেল থেকে খালাস করা হয়। এসব পণ্য লাইটারেজ জাহাজের মাধ্যমে খালাস করে দেশের নানা স্থানে পরিবহন করা হয়।
ডব্লিউটিসি তাদের সিরিয়ালে চলা জাহাজগুলোতে আমদানিকারক বা কারখানা মালিকদের চাহিদার ভিত্তিতে বরাদ্দ দেয়। আমদানিকারকদের পক্ষে ডব্লিউটিসির তালিকাভুক্ত পণ্যের এজেন্ট চাহিদা প্রদান করলে লাইটারেজ বরাদ্দ দেওয়া হয়। ডব্লিউটিসির নানা অনিয়ম এবং করোনাকালে ব্যবসা কমে যাওয়ায় এই সেক্টরে স্থবিরতা দেখা দেয়। পরে লাইটারেজ জাহাজ মালিকদের পক্ষ থেকে নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের শরণাপন্ন হয়। এই খাতে গতি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সার্কুলার জারি হয়।
নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের জারি করা জরুরি নৌ বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম বন্দর, বন্দরের উভয় পাড়ে অবস্থিত সকল প্রকার জেটি এবং সমুদ্রে নোঙরে অবস্থানরত মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত লাইটার জাহাজের ক্ষেত্রে ‘নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের অধিভুক্ত লাইটার জাহাজযোগে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরসমূহে পণ্য পরিবহন নীতিমালা-২০১৩’ অনুসরণ করে ডব্লিউটিসির সিরিয়ালভুক্ত হয়ে পণ্য বোঝাই ও খালাস করতে হবে। এ আদেশ অমান্যকারী নৌযান মালিক, মাস্টার এবং নাবিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকারি সার্কুলারে অননুমোদিত ভলগেট চলাচলও নিষিদ্ধ করা হয়।
অননুমোদিত ভলগেট চলাচল বন্ধ এবং ডব্লিউটিসির সিরিয়ালের বাইরের কোনো লাইটারেজ বহির্নোঙরে মাদার ভ্যাসেল থেকে যাতে পণ্য বোঝাই করতে না পারে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয় ডব্লিউটিসি। চিঠির প্রেক্ষিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ বা পরিচালনা বন্দর কর্তৃপক্ষের এক্তিয়ারাধীন নয়। এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না। বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি কনজারভেটর স্বাক্ষরিত পত্রটি ডব্লিউটিসিতে পৌঁছলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হয়। কর্তৃপক্ষের অনীহা নিয়ে জাহাজ মালিকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
অবশ্য বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, বিষয়টিতে নিজেদের সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা গতকাল বলেন, বহির্নোঙরে কে কোথায় কিভাবে পণ্য খালাস করবে তা পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব বন্দর কর্তৃপক্ষের নয়।












