জয়পুরহাট জেলায় ট্রেনের ধাক্কায় বাসের ১২ যাত্রী নিহত হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় আহত তিনজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হতাহতরা সবাই বাসের যাত্রী। দুর্ঘটনার সময় রেলক্রসিংয়ের গেট খোলা ছিল এবং সংশ্লিষ্ট গেটম্যান ঘুমিয়ে ছিলেন বলে জানা গেছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক মো. শরিফুল ইসলাম। তিনি জানান, পুরানাপৈল রেলগেটের গেটম্যান তার দায়িত্ব পালন না করায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। খবর বাংলানিউজ ও বিডিনিউজের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জয়পুরহাট ছেড়ে আসা বাঁধন নামের একটি যাত্রীবাহী বাস হিলি স্থল বন্দরের দিকে যাচ্ছিল। সকাল ৭টার দিকে পুরানাপৈল রেলগেট অতিক্রম করার সময় দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে আসা রাজশাহীগামী উত্তরা এঙপ্রেস ট্রেন সজোরে এটিকে ধাক্কা দেয়। ট্রেনটি বাসটিকে রেললাইন ধরে ছেঁচড়িয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে নিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
দুর্ঘটনার পর ওই পথে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আট ঘণ্টা পর বিকাল ৩টায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানান রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ১০ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন ৫ জন। আহতদের প্রথমে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। শজিমেক হাসপাতালে আরও দুজনের মৃত্যু হয়। সেখানে এখন আরও ৩ জন চিকিৎসাধীন।
নিহতদের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন বাসচালক সদর উপজেলার হারাইল গ্রামের মামুনুর রশিদ, হিচমী গ্রামের মানিকের ছেলে রমজান, পাঁচবিবি উপজেলার আটুল গ্রামের সরোয়ার হোসেন, আরিফুর রহমান রাব্বি, আক্কেলপুর উপজেলার চক বিলা গ্রামের দুদু কাজীর ছেলে সাজু মিয়া এবং নওগাঁর রানী নগর উপজেলার বিজয়কান্দি গ্রামের বাবু।
দুর্ঘটনা তদন্তে রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এ দুর্ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনও তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।