টানা তৃতীয় সিরিজ জয়

জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়ার পর এবার নিউজিল্যান্ডকে হারালো টাইগাররা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ

সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে এসে হোঁচট খেলেও চতুর্থ ম্যাচে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেওয়ার পাশাপাশি সিরিজও নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে টানা তৃতীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় টাইগারদের। যার শুরুটা হয়েছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাদের মাটিতে, এরপর নিজেদের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার পর এবার নিউজিল্যান্ডকেও বধ করল মাহমুদুল্লাহ বাহিনী। গতকাল বুধবার পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের চতুর্থটিতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে আরেকবার শত রানের নিচে অল আউট হয় টিম ল্যাথামের দল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টানা তিন ম্যাচে জিতে সিরিজ নিশ্চিত করলেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঝখানে একটু ছেদ পড়েছে। আগের ম্যাচে খানিকটা ছন্নছাড়া বাংলাদেশ গতকাল ছিল ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং তিন বিভাগেই দুর্দান্ত। যার ফল সিরিজ জয়। ম্যাচের আগেরদিন বেশ হুংকার দিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ড কোচ। বলেছিলেন বাংলাদেশের আগুনের জবাব আগুন দিয়েই দিবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের আগুনে পুড়ল কিউইরা।
শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচের প্রথম ভাগে নাসুম এবং মোস্তাফিজের আগুন ঝরানো বোলিং এরপর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং তাণ্ডবে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেওয়ার পাশাপাশি সিরিজও নিশ্চিত করেছে টাইগাররা। অথচ এই সিরিজের আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কোন টি-টোয়েন্টি ম্যাচই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের আগে এই সিরিজ জয় নিশ্চয়ই প্রেরণা যোগাবে টাইগারদের এবং বিশ্বকাপের দল ঘোষণার ঠিক আগে ক্রিকেটারদের এমন প্রতিযোগিতা দলের জন্য সুফলও বয়ে আনতে পারে বলে মনে করছেন ক্রীড়াবিদরা।
গতকাল টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক। কিন্তু প্রথম ওভারেই নাসুম আহমেদের আঘাত। ফেরালেন রাচিন রবীন্দ্রকে। তৃতীয় ওভারে দারুণ খেলতে থাকা ফিন অ্যালেনকেও ফেরান নাসুম। তিনি ফিরেছেন ৮ বলে ১২ রান করে। এরপর শুরুর ধাক্কা সামলে উঠার চেষ্টা করেছেন অধিনায়ক টম ল্যাথাম ও উইল ইয়ং। তাদের জুটিটাকে ৩৫ রানের বড় হতে দেননি মেহেদী হাসান। ২১ রান করা ল্যাথামকে ফিরিয়ে ভেঙ্গে দেন এ জুটি। এরপর উইল ইয়ং একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও অপর প্রান্তে নাসুমের ঘূর্ণি আর মোস্তাফিজের আগুনের গোলার সামনে দাঁড়াতেই পারেনি অন্যরা। ফলে ১৯.৩ ওভারে ৯৩ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। এই ৯৩ রানের ৪৬ রানই এসেছে ইয়ংয়ের ব্যাট থেকে। তার ৪৮ বলের ইনিংসটিতে ৫টি চার এবং একটি ছক্কার মার ছিল। বাংলাদেশের পক্ষে নাসুম আহমেদ ৪ ওভার বল করে ১৭টি ডট বল আদায় করে নেন। মাত্র ১০ রান খরচায় নিয়েছেন ৪ উইকেট। অপরদিকে মোস্তাফিজুর রহমান ৩.৩ ওভারে ১২ রান খরচায় নিয়েছেন চার উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন সাইফউদ্দিন ও মেহেদী হাসান।
৯৪ রানের সহজ লক্ষ্য। সে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আবারো ব্যর্থ লিটন দাশ। দলীয় ৮ রানের মাথায় ৬ রান করে ফিরলেন লিটন। এক ম্যাচ পর নিজের তিন নম্বর পজিশনে ফিরলেও রানে ফিরতে পারেননি সাকিব। এজাজ প্যাটেলকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে মারতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হন সাকিব। ৮ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। তবে বাংলাদেশ বড় ধাক্কাটা খায় তিন বল পরেই। সেই এজাজ প্যাটেলকে সুইপ করতে গিয়ে রানের খাতা খোলার আগেই বোল্ড হন মুশফিক। এরপর ওপেনার নাঈমের সাথে যোগ দেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। ধীর গতির হলেও ৫০ বলে ৩৪ রানের জুটি গড়েন দুজন। একরানকে দুই বানাতে গিয়ে রান আউটে কাটা পড়েন নাঈম। ২৫ বলে ২৯ রান করে ফিরেন এই ওপেনার। নাঈম ফেরার পর বাংলাদেশ খানিকটা চাপে পড়লেও আফিফ হোসেনকে নিয়ে সেই চাপ দারুণভাবে সামলে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। চার বল এবং ৬ উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ এবং সিরিজ দুটোই জিতে ফিরেন এই জুটি। ৪৮ বলে একটি চার এবং ২টি ছক্কার সাহায্যে ৪৩ রানে অপরাজিত ছিলেন টাইগার দলপতি। আর তাকে শেষ পর্যন্ত সঙ্গ দেওয়া আফিফ অপরাজিত ছিলেন ৬ রানে। তবে দারুণ একটি ম্যাচ জয়ের দিনে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে হয়েছে দারুণ প্রতিযোগিতা। তবে সবাইকে পেছনে ফেলে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার জিতেছেন স্পিনার নাসুম আহমেদ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচমেকে সশরীরে ক্লাস ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে
পরবর্তী নিবন্ধবিআরটিএ সার্ভারে হাজারও প্রতারক