টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পর ছন্দহীন বোলিং

বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ম্যাচে টাইগারদের ৭ উইকেটের হার

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ২১ মার্চ, ২০২২ at ৮:১৫ পূর্বাহ্ণ

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ঐতিহাসিক জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে এসে খেই হারিয়ে ফেলল বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে প্রোটিয়াসদের শাসন করা টাইগাররা দ্বিতীয় ম্যাচে এসে নিজেরাই হলো শাসনের শিকার। প্রোটিয়াস পেসারদের তোপের মুখে পড়ে পথ হারানো বাংলাদেশকে আর পথ দেখাতে
পারেনি বোলাররা। ফলে দ্বিতীয় ম্যাচে হেরে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের। জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্সে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল দক্ষিণ আফ্রিকা।
আগের ম্যাচে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং যেমন ছিল দুর্দান্ত তেমনি বোলিং ছিল নিয়ন্ত্রিত। তবে গতকাল কোন কিছুতেই ছিল না টাইগারদের নিয়ন্ত্রণ। আর তাতে ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। এই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা যেন তাদের আসল চেহারাটা দেখাল।
টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশকে শুরু থেকেই পড়তে হয় দুই প্রোটিয়াস পেসার রাবাদা এবং এনগিডির আগুন ঝরানো বোলিং এর সামনে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই তামিমকে দিয়ে শুরু বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয়ের। এনগিডির বলে মহারাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন এক রান করা তামিম। দলের খাতায় তখন মাত্র ২ রান। সে ধাক্কা না সামলাতেই এবার রাবাদর আঘাত। তার শিকার আগের ম্যাচের সর্বোচ্চ স্কোরার সাকিব। এবার রানের খাতাও খুলতে পারলেন না। পরে রাবাদার বাড়তি বাউন্সেই নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন লিটন দাস। শূন্য রানে জীবন পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি আগের ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরিয়ান ইয়াসির আলি। তিনিও রাবাদার বাড়তি বাউন্সের বলি। ক্যাচ তুলে দেন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে। মুশফিকুর রহিমও হলেন ব্যর্থ। ওয়েইন পার্নেলের বল ভুল লাইনে খেলে এলবিডব্লিউ হন মুশফিক।
৩৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন লজ্জার চাদর গায়ে জড়ানোর অপেক্ষায় ছিল তখন হাল ধরার চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ ও আফিফ। ষষ্ঠ উইকেটে ৬০ রান যোগ করেন দুজন। তখনো শতরান পার করতে পারেনি দল। তাবারাজ শামসির বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন মাহমুদউল্লাহ। ফিরে আসার আগে করেন ৪৪ বলে ৩ টি চারের সাহায্যে ২৫ রান। সঙ্গী হারালেও আফিফ চালিয়ে যান লড়াই। মিরাজের সঙ্গে আরেকটি কার্যকর জুটি গড়ে দলকে লজ্জার হাত থেকে বাঁচান আফিফ। এরই মধ্যে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন আফিফ ৭৯ বলে। দুজন মিলে ৮৬ রানের জুটি গড়ে দলকে ১৮০ রানে পৌঁছে দিয়ে ফিরেন আফিফ। রাবাদার বলে ফিরে আসার আগে ১০৭ বলে ৯টি চারের সাহায্যে ৭২ রান করেন তিনি। একই ওভারে ফিরেন মিরাজও। তিনি ফিরেন ৪৯ বলে একটি চার এবং ২টি ছক্কার সাহায্যে ৩৮ রান করে। নিজের এবং দলের স্কোর বড় করার সুযোগ হাতছাড়া করে আফিফ এবং মিরাজ ফিরে আসার পর আর বেশিদূর এগুতে পারেনি বাংলাদেশ। ১৯৪ রানে থামে টাইগারদের ইনিংস। ৩৯ রানে ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ধ্বসিয়ে দেন রাবাদা।
১৯৫ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশের বোলারদের উপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার। মালান এবং ডি কক মিলে ৮৬ রান তুলে নেন মাত্র ১২.৩ ওভারে। ৪০ বলে ২৬ রান করা মালানকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন মিরাজ। তবে ডি কক ছিলেন অত্যন্ত মারমুখি। সাকিব আল হাসান থামান ডি কক ঝড়। ফিরে আসার আগে ৪১ বলে ৯টি চার এবং ২টি ছক্কার সাহায্যে ৬২ রান করে আসেন ডি কক। অধিনায়ক বাভুমা এবং ভিরেন্নি মিলে তৃতীয় উইকেটে ৮২ রান যোগ করে দলকে সহজ জয়ের দ্বার প্রান্তে নিয়ে গিয়েছিলেন। তখন এই জুটি ভাঙ্গেন আফিফ। শরীফুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে বাভুমা ফিরেন ৫২ বলে ৩৭ রান করে। এরপর দুশেনকে নিয়ে দলকে জিতিয়ে ফিরেন ভিরেন্নি। ৩৭.২ ওভারে ম্যাচ শেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৭৭ বলে ৫৮ রানে অপরাজিত ছিলেন ভিরেন্নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগর জুড়ে তীব্র যানজট
পরবর্তী নিবন্ধসাতকানিয়ায় স্থগিত হওয়া ৪ কেন্দ্রে ভোট আজ