ঝুলে গেল ১৮৮ কন্টেনার নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংস কার্যক্রম

জায়গা পাচ্ছে না কাস্টমস

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৪ নভেম্বর, ২০২১ at ১০:২১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘ সময় পড়ে থাকা ১৮৮ কন্টেনার বিভিন্ন ধরণের নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংসের উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ধ্বংসের জায়গা নির্বাচন সংক্রান্ত জটিলতায় ঝুলে গেছে পুরো কার্যক্রম। চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখা প্রাথমিকভাবে ১৮৮ কন্টেনার নিলাম অযোগ্য পণ্যের ইনভেন্ট্রি সম্পন্ন করে। এক্ষেত্রে শেষ মুহূর্তে ধ্বংসের জায়গা নিয়ে সমস্যা শুরু হয়। তবে কাস্টমস কর্তৃক গঠিত পণ্য ধ্বংস কমিটি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কয়েকটি আবর্জনাগার পরিদর্শন করে। সেখানে বড় বড় কন্টেনার ট্রেইলার প্রবেশে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায়, সেই পরিকল্পনা থেকে তারা সরে আসে। পণ্য ধ্বংসের জন্য কাস্টমসের নিজস্ব কোনো জায়গা নেই। এর আগে অবশ্য এ বছর নগরীর উত্তর হালিশহরের বে টার্মিনাল সংলগ্ন বেড়িবাঁধ এলাকায় ২৯৮ কন্টেনার পণ্য ধ্বংস করা হয়। এখন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কারো ব্যক্তিগত জায়গা ইজারা নিয়ে হলেও ধ্বংস কার্যক্রম সম্পন্ন করতে চায় বলে জানান নিলাম শাখার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।
নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, ধ্বংসযোগ্য ১৮৮ কন্টেনার পণ্যের তালিকায় রয়েছে – অ্যানিমেল ফিড, পেঁয়াজ, ফিস ফিড, কানাডিয়ান ক্যানুলা, মিট অ্যান্ড বোন মিল, আপেল, মাল্টা, ম্যান্ডারিন, মাছ, বিভিন্ন ধরণের শস্য বীজ এবং লিকুইড ড্রিংকস। নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। অন্যদিকে আমদানিকারক যথাসময়ে পণ্যভর্তি কন্টেনার খালাস না করলে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রমের ব্যাঘাত ঘটে। এক্ষেত্রে পচনশীল পণ্যভর্তি কন্টেনার একটি বড় সমস্যা। খালাস না হওয়া এসব কন্টেনার শিপিং কোম্পানির জন্যও বিপদের। কারণ এসব কন্টেনারে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিতে হয়। আমদানিকারক খালাস না নিলেও বৈদ্যুতিক সংযোগ চাইলেও বিচ্ছিন্ন করা যায় না। বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, নিলাম অযোগ্য পণ্য বন্দরের জন্য একটি বিশাল সমস্যা। অনেক সময় আইনি জটিলতায় নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংস করতে পারে না কাস্টমস। ফলে বন্দর ইয়ার্ডে এসব কন্টেনারের জন্য জট লেগে যায়।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখা উপ-কমিশনার মো. আলী রেজা হায়দার বলেন, পণ্য ধ্বংসের জন্য জায়গা এখন সবচেয়ে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংস কমিটি একটি মিটিং করেছে। কমিটির সদস্যরা প্রস্তাবিত কয়েকটি জায়গা পরিদর্শনও করেছেন। কিন্তু সেই সব স্থান পণ্য ধ্বংস কার্যক্রমে পুরোপুরি উপযুক্ত নয় বলে আপাতত ধ্বংস কার্যক্রমও ঝুলে গেছে। জায়গা চূড়ান্ত হলে পরবর্তীতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সাথে সমন্বয় করে কাজ শুরু করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমহেশখালীতে ২ আসামিসহ আটক ৩, ৯টি অস্ত্র উদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধশিশুকে যৌন নিপীড়ন, মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেপ্তার