জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা থাকায় গতকাল অবৈধভাবে পাহাড়ে বসবাসরতদের নামিয়ে আনতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় জোরপূর্বক ২২টি পরিবারকে পাহাড় থেকে নামিয়ে স্থানীয় এসএম পাইলট স্কুলে সাময়িকভাবে নির্মিত আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, টানা বৃষ্টিতে যে কোনো সময় পাহাড় ধসে প্রাণহানীর সম্ভাবনা রয়েছে। গত দুইদিন ধরে কয়েকদফা মাইকিং করে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। এতে কেউ কর্নপাত করছে না। একদিকে মৃত্যুর ভয়, অন্যদিকে বসতভিটা ছাড়ার ভয়। এনিয়ে সীতাকুণ্ড পাহাড়ে বসবাসরত বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই গতকাল সীতাকুণ্ড এসিল্যান্ড মো. আশরাফুল আলম ও ওসি মো. তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। বন বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের পরিসংখ্যানে জানা যায়, বারৈয়াঢালা, সীতাকুণ্ড পৌর সদর, কুমিরা, সলিমপুর, সোনাইছড়ি এলাকায় ১৬ হাজার ২৪৪ একর বনভূমির মধ্যে সাড়ে পাঁচ হাজার একর জায়গা বেদখলে। অবৈধ দখল হওয়া জায়গায় প্রায় পাঁচ হাজার পরিবারের ২০ হাজার লোকজন ঘরবাড়ি তৈরি করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস করছেন। এছাড়া বারৈয়ারঢালা ইউনিয়ন, পৌরসভা, বাঁশবাড়িয়া, কুমিরা, সোনাইছড়ি, ভাটিয়ারী ও ছলিমপুর ইউনিয়নের পাহাড়ে ৯৭৩ জন ত্রিপুরা, ১২৬ জন চাকমা, ১৫০ জন মারমা, অন্য নৃগোষ্ঠীর ১৭০ জন বাস করছে।
দক্ষিণ সোনাইছড়ি পাহাড়ের বাসিন্দা কাঞ্চন ত্রিপুরা বলেন, পাহাড় ধসে প্রাণ গেলেও কী করার আছে? সরকার যত দিন ভূমির ব্যবস্থা করবে না, তত দিন ঝুঁকি নিয়ে থাকতে হবে।
জঙ্গল ছলিমপুর এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, বৃষ্টি শুরু হলে সরকারের লোকজন মাইকিং করে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলেন। ধসে পড়ার আশঙ্কায় আমাদের পাহাড় ছেড়ে দিতে বলে। কিন্তু কোথায় যাব? আমাদের কে জায়গা দেবে?
গতকাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহাদাত হোসেন জানান, টানা বৃষ্টিতে যে কোনো সময় পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সোমবার ও মঙ্গলবার মাইকিং করা হয়েছে। পাহাড়ধসের আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় জঙ্গল সলিমপুরের ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে ২২ পরিবারকে জোরপূর্বক পাহাড় থেকে এসএম পাইলট স্কুলের সাময়িক নির্মিত আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে।