জোয়ার-ভাটার নিয়ন্ত্রণে তিন ইউনিয়নের ১০ গ্রাম

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধে ভাঙন

চকরিয়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২৭ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সামুদ্রিক অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড়ে ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে কঙবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা, উজানটিয়া ও পেকুয়া সদর ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ। এই তিন ইউনিয়নে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধের পাঁচটি অংশ দিয়ে ঢুকছে সামুদ্রিক জোয়ারের পানি। বর্তমানে তিন ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রামের লোকালয়, ফসলি জমি, চিংড়ি ঘের ও লবণ মাঠ জোয়ার-ভাটার নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এতে চরম দুর্ভোগে নিপতিত হয়েছে এসব গ্রামের অর্ধ লাখ মানুষ। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের সময় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে চকরিয়া উপজেলার চিংড়িজোনের কয়েকশত চিংড়ি ঘের। অনেক ঘেরের বাঁধ ভেঙে সমুদ্র উপকূলের মোহনার সঙ্গে বিলীন হয়ে গেছে। এতে কম করে হলেও ঘের মালিকদের কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নের মধ্যে তিন ইউনিয়নের পাঁচ পয়েন্ট তথা পেকুয়া সদর ইউনিয়নের পশ্চিমাংশের গোঁয়াখালী ভোলাখাল সংলগ্ন পাউবোর বেড়িবাঁধ ও শেখের কিল্লাহ ঘোনার বেড়িবাঁধ, মগনামা ইউনিয়নের কাটাফাঁড়ি ব্রিজ-উজানটিয়া সড়কের লায়ন মুজিবের বাড়ি সংলগ্ন বেড়িবাঁধ ও ইউনিয়নের শরৎঘোনা এলাকার বেড়িবাঁধ এবং রাজাখালী ইউনিয়নে সমুদ্র উপকূলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে সিত্রাংয়ের প্রভাবে। এতে গত সোমবার রাত থেকে সামুদ্রিক জোয়ার-ভাটার নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে তিন ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রাম। পানিতে এখনো তলিয়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও।
পেকুয়া তিন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা দৈনিক আজাদীকে জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সামুদ্রিক অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি ঢুকছে আর বেরুচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভেঙে যাওয়া সমুদ্র উপকূলের বেড়িবাঁধ দিয়ে। বর্তমানেও জোয়ার-ভাটার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তিন ইউনিয়নের বিশাল এলাকা। ঘূর্ণিঝড় চলাকালে ৫-৬ ফুট জোয়ারের লবণাক্ত পানিতে অসংখ্য বসতবাড়ি, চিংড়িঘের, পুকুর, আমন ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এখানে। পেকুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ ও উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তোফাজ্জল করিম বলেন, অতিদ্রুত সংস্কার করা না হলে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছাবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি এলাকার সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ ভেঙে যাওয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধই হচ্ছে সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এখানে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে ত্বড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আমাদের আশা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী অরূপ চক্রবর্তী বলেন, দপ্তরাধীন পেকুয়ার মগনামা, উজানটিয়া ও পেকুয়া সদর ইউনিয়নের পাঁচ স্থানে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়েছে। এ সময় কোথায় কী কী ক্ষতি হয়েছে এবং সংস্কার করতে কী প্রয়োজন হবে তার বিস্তারিত তথ্য নেওয়া হয়েছে। আশা করছি সহসাই ভাঙা বেড়িবাঁধের সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রাণ
পরবর্তী নিবন্ধইনার হুইল ক্লাব লুসাই হিলসের সম্মাননা